ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

বাফুফে নির্বাচন

অস্বস্তিতে সালাউদ্দিন-মুর্শেদী প্যানেল

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৩ অক্টোবর ২০২০, ১৩:০২  
আপডেট :
 ০৩ অক্টোবর ২০২০, ১৩:০৫

অস্বস্তিতে সালাউদ্দিন-মুর্শেদী প্যানেল

আজ আলোচিত বাফুফে নির্বাচন। প্যানপ্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে দিনের শুরু হয়েছে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম)। এর পর দুপুরে শুরু হবে ব্যালট বক্সে ভোটের লড়াই। রাত গড়াতেই জানা যাবে আগামী চার বছরের জন্য কারা আসছেন বাফুফে পরিচালনায়।

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) বয়স ৪৮ বছর। তবে এই ফেডারেশনের প্রথম ৩৬ বছরের তুলনায় বেশি আলোচনায় সর্বশেষ ১২ বছর। এই এই এক যুগের আলোচিত সময়ে যাকে ঘিরে সকল আলোচনা হয়েছে তার নাম কাজী মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন। তবে মাঠে যতোটা সুনাম কামিয়েছেন, ক্ষমতার আসনে বসে কি ঠিক ততোটা কামাতে পেরেছেন? কিংবা ধরে রাখতে পেরেছেন নিজের সুনাম? টানা চতুর্থবার বাফুফে সভাপতি হতে আজও তিনি নেমেছেন ভোটের লড়াইয়ে।

বলার অপেক্ষা রাখে না, কাজী সালাহউদ্দিন ক্ষমতায় আসার পর থেকে বাংলাদেশের ফুটবলে শুধু অধঃপতনই হয়েছে। ফিফা র‍্যাংকিংয়ে ১৯৭ তম স্থানে নেমেছে তার অধীনেই। এই ১২ বছরেই প্রথমবারের মতো ভূটানের কাছে পরাজয়ের স্বাদ পেয়েছে লাল সবুজের বাংলাদেশ। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপেও বাংলাদেশ হারিয়েছে তার আগের সৌন্দর্য। ৬ বারের মধ্যে একটিবার পৌছাতে পেরেছে সেমিতে। বাকি ৫ বার বিদায় নিতে হয়েছে গ্রুপপর্ব থেকেই।

এছাড়াও বোর্ডের বিরুদ্ধে কতশত অভিযোগ, দুর্নীতির কালিমা, সাবেক ফুটবলারদের অসন্তোষ ইত্যাদি মিলিয়ে সালাহউদ্দিন এখন ফুটবল অঙ্গনের ‘খলনায়ক’!

এখন পর্যন্ত টানা তিনবার সভাপতির আসনে সালাহউদ্দিন। শুরুতে ২০০৮ সালে তার ভোটের লড়াইটা ছিল এক অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তার বিপক্ষে। ২০১২ সালে নির্বাচনে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না সাবেক এই ফুটবল তারকার বিপক্ষে। ফলে হেসেখেলে পুনরায় সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। সর্বশেষ ২০১৬ সালে সালাহউদ্দিনকে হারাতে হয় নরসিংদী-২ আসনের সংসদ সদস্য কামরুল আশরাফ খানকে। এই নির্বাচনে প্রথমবারের মতো শতভাগ ভোট কাস্টিং হয়। ৩৩ ভোটের ব্যবধানে (সালাউদ্দিন ৮৩ ভোট, পোটন ৫০ ভোট, বাতিল ১ টি) টানা তৃতীয়বারের মতো সভাপতি নির্বাচিত হন।

এবার সভাপতি পদে লড়াইয়ের ঘোষণা দেয়া হেভিওয়েট প্রার্থী তরফদার রুহুল আমিন সরে গেছেন নির্বাচনের আগেই। মনোনয়ন নিয়েও সরে দাঁড়িয়েছেন সভাপতি পদে আরেক হেভিওয়েট প্রার্থী বাদল রায়। তারপরও বিশেষ একটি ইস্যুতে অস্বস্তিতে আছে কাজী সালাউদ্দিন-সালাম মুর্শেদী প্যানেল। কারণ ভোটারদের নীরব বিপ্লব। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘ ১২ বছরের ব্যর্থতা বিপ্লব ঘটতে পারে আজ।

নির্বাচনে ২১ পদের বিপরীতে মোট ৪৭ জন প্রার্থী লড়াই করছেন; ভোটার ১৩৯ জন। দুটো প্যানেল প্রকাশ্যে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে। একটি কাজী সালাউদ্দিন-মুর্শেদী সম্মিলিত ফুটবল পরিষদ, অন্যটি শেখ আসলাম-মহি সমন্বিত প্যানেল পরিষদ।

১৩৯ ভোটের মধ্যে ৭২ ভোটই জেলা ও বিভাগ ফুটবল সংস্থাগুলোর কাছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোট ছয়টি। শিক্ষা বোর্ডের ভোট পাঁচটি। একটি করে ভোট ফুটবল কোচেস অ্যাসোসিয়েশন, রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশন এবং মহিলা ক্রীড়া সংস্থার। এ ছাড়া রয়েছে ঢাকার ক্লাবগুলোর ভোট। তাই বাফুফের চেয়ারে কে বসছেন তা নির্ধারণের সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবে জেলা ও বিভাগের ফুটবল সংস্থাগুলো।

জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও তারকা ফুটবলার কায়সার হামিদ মনে করেন, এক যুগের ব্যর্থতা মাথায় রেখে ভোটারদের সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘যদি বাংলাদেশের ২০ জন অধিনায়ককে বলেন, ১৯ জনই সালাউদ্দিনের বিপক্ষে অবস্থান নিবেন। যদি ভোটাররা বোঝেন তাহলে ভোটে এই বিপ্লব ঘটতে পারে। তবে এগুলো সবকিছুই পাতানো থাকে। আগেই সব ম্যানেজ করা থাকে। তারপরেও ১২ বছরের কথা মাথায় রেখে ভোটারদের সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত দেশের ফুটবলের স্বার্থে।’

১২ বছরে বাফুফের একনায়কতন্ত্র দেখে সভাপতি পদে নির্বাচিত হওয়ার আশা দেখছেন শফিকুল ইসলাম মানিক। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আগামীতে যদি সঠিক নির্বাচন হয়, কাউন্সিলররা যদি ঠিকমতো ব্যালটে ভোট দিতে পারেন। ১০০ জনের ২০ জনও ওদের পক্ষে নেই আমি নিশ্চিত।’

তবে কারচুপির আশংকা করছেন সভাপতি পদপ্রার্থী মানিক। তিনি বলেন, 'নির্বাচনে প্রভাব খাটানোর ঘটনা ঘটতে পারে, কারচুপি হতে পারে, অনেক কিছুই হতে পারে। আমি জানি, আমি আশঙ্কা করছি। তবে আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। সরকারও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। আমি সেদিকেই তাকিয়ে আছি।’

বাংলাদেশ জার্নাল/টিআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত