ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২২ মিনিট আগে
শিরোনাম

ফিফটিতেই থেমে গেলেন মোসাদ্দেক

  স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ : ২৮ মে ২০২১, ১৯:৫২  
আপডেট :
 ২৮ মে ২০২১, ১৯:৫৭

ফিফটিতেই থেমে গেলেন মোসাদ্দেক

মিথুনের বদলে দলে এসে আস্থার প্রতিদান দিয়েছে মোসাদ্দেক। দলের ব্যাটিং বিপর্যয়ে এসে ৬৯ বলে ৩টি চার ও ১টি ছয়ে হাফসেঞ্চুরির দেখা পান তিনি। এরপর ১ রান যোগ করেই সাজঘরে ফিরেন ব্যাটিং অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ২৫.১ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ৯২ রান।

প্রথম দুই ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ফিল্ডিং সন্তোষজনক অবস্থানে থাকলেও তৃতীয় ওয়ানডেতেই যেন আগের রুপে ফিরে এসেছে বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। ক্যাচ মিসের মহড়ায় শ্রীলঙ্কাকে সুযোগ দিয়েছে বড় স্কোর গড়ার। সফরকারীরাও সেই সুযোগ লুফে নিয়েছে। এতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ২৮৬। ফলে তৃতীয় ম্যাচ জিতে লঙ্কানদের হোয়াইটওয়াশ করার জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ২৮৭ রান।

লিটন দাসের পরিবর্তে খেলতে নেমে ১ রানে সাজঘরে ফিরলেন মোহাম্মদ নাইম শেখ। এরপর দলকে বিপদে ফেলে সাজঘরে ফিরলেন সাকিবও। চামিরার বলে মেন্ডিসকে ক্যাচ দিয়ে আউট হলেন তিনি। পুরো সিরিজে ৩ নাম্বারে ব্যাট করেছেন সাকিব, কিন্তু এই সিরিজে ব্যাট হাতে পুরোপুরি ব্যর্থ সাকিব। তিন ম্যাচে সাকিবের রান যথাক্রমে ১৫,০,৪ রান। মোট ১৯ রান।

এরপর তামিমের সঙ্গে দলের হাল ধরেন মুশফিকুর রহিম। ধীর গতিতে রানের চাকা সচল রাখার চেষ্টা করতে থাকেন দুজন। এরই মাঝে দশম ওভারে বিতর্কিতভাবে আউট হন তামিম। চামিরার করা স্লোয়ার ডেলিভারি তামিমের ব্যাটে লেগে আউটসাইড এজ হয়ে উইকেটকিপারের গ্লাভসে জমা হয়। আউটের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দিলে রিভিউ নেন তামিম। এ সময় রিপ্লেতে দেখা যায় তার ব্যাট একই সময়ে মাটিতে লাগার পাশাপাশি বলেও স্পর্শ করেছে।

তবে বল আসলেই তামিমের ব্যাটে লেগেছে কি না সেটা স্নিকো থেকেও নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছিল না। এমতাবস্থায় অন ফিল্ড আম্পায়ারের কল অনুযায়ী বাংলাদেশের অধিনায়ককে আউট দেয়া হয়। এমন সিদ্ধান্ত যেন মানতেই পারছিলেন না তামিম।

২৮ রানে টপ অর্ডারের ৩ ব্যাটসম্যান হারিয়ে বাংলাদেশ ছিল খাদের কিনারায়। সেখান থেকে ক্রিজে থাকা মুশফিকুর রহিম নতুন ব্যাটসম্যান মোসাদ্দেক হোসেনকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু দুজনের ৫৬ রানের জুটিতেই মুশফিকের বিদায়ে ভাঙলো এই জুটি। মেন্ডিসের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডি সিলভার তালুবন্দী হয়ে আউট হন মুশফিক। ৫৬ বল মোকাবেলায় মুশফিকের রান ২৮।

টানা দুই ম্যাচ জিতে আগেই সিরিজ নিশ্চিত করে রেখেছে লাল সবুজের দল। এই ম্যাচে টস হেরেছে বাংলাদেশ। লঙ্কান দলপতি টস জিতে ফিল্ডিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছে বাংলাদেশকে।

শুরু থেকেই রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে লঙ্কান দুই ওপেনার গুনাথালিকা-পেরেরা। কিছুতেই যেন তাদের থামান যাচ্ছিল না। দুই প্রান্ত থেকে বল করেছেন শরিফুল-মোসাদ্দেক। তারপর যোগ দিয়েছেন মিরাজ-তাসকিনও। কিন্তু লঙ্কান দুই ওপেনারের মারমুখি ব্যাটিংয়ে সবকিছু ফ্যাকাশে হয়ে গেছে।

এমন সময়ে হঠাৎ জ্বলে উঠলেন তাসকিন, নিজের করা দ্বিতীয় ওভারে ৩ রান খরচ করেই ফিরিয়েছেন লঙ্কান দুই ব্যাটসম্যানকে। গুনাথিলাকাকে বোল্ড করে ৮২ রানের জুটি ভেঙেছেন এই ডানহাতি পেসার। ৩৩ বলে ৫ চার ও ১ ছয়ে ৩৯ রান করেন লঙ্কান ওপেনার। ওই ওভারেই পাথুম নিশানকাকে পেছনে মুশফিকুর রহিমের ক্যাচ বানান তাসকিন। চার বল খেলেও রানের খাতা খুলতে ব্যর্থ শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যান।

এই দুই ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়েই ওয়ানডে ক্রিকেটে ৫০ উইকেট শিকারের মাইলফলক অর্জন করলেন তাসকিন আহমেদ।

শুরু থেকেই আক্রমনাত্নক লঙ্কান অধিনায়ক কুশল পেরেরা। তার দুই সতীর্থ সাজঘরে ফিরলেও তিনি আছেন অবিচল। মাত্র ৪৪ বলে তুলে নিলেন ক্যারিয়ারের ১৫তম হাফসেঞ্চুরি। ৮টি চারে লঙ্কান অধিনায়কের ইনিংসটি সাজানো ছিল।

দুই উইকেট হারিয়ে দুই কুশালে প্রতিরোধ গড়েছিল শ্রীলঙ্কা। তবে এবারো লঙ্কা শিবিরে আঘাত হানলেন তাসকিন। দলীয় ১৫১ রানে কুশাল মেন্ডিসকে তামিমের ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে পাঠিয়েছেন টাইগার এই পেসার।

বাংলাদেশ একাদশে দুটি পরিবর্তন ঘটেছে। জায়গা হারিয়েছেন লিটন দাস। তার পরিবর্তে দলে এসেছে নাঈম শেখ। আর মাথায় আঘাত পাওয়া সাইফউদ্দিনের পরিবর্তে খেলছেন তাসকিন আহমেদ।

সাকিবের বলে দুইবার, মোস্তাফিজের বলে একবার মোট তিনবার জীবন পেয়ে সেঞ্চুরি তুললেন কুশল পেরেরা। প্রথম ৬৬ রানে মোস্তাফিজ মিস করেন, ৭৯ রানের সময় আফিফ ও ৯৯ রানে সহজ ক্যাচ ফেললেন মাহমুদউল্লাহ। জীবন পেয়ে ৯৯ বলে ১০টি চার ও ১টি ছয়ে সেঞ্চুরি হাঁকান লঙ্কান অধিনায়ক।

তিনবার জীবন পেয়ে শতক হাঁকালেন। অবশেষে চতুর্থবারে শরিফুল ইসলামের বলে ধরা পড়লেন মাহমুদউল্লাহর হাতে। তার ব্যাট থেকে আসে ১২২ বলে ১২০ রান। ইনিংসটি সাজানো ছিল ১১টি চার ও ১টি ছয়ের মারে।

চতুর্থ উইকেটে ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে সঙ্গে নিয়ে দলীয় স্কোরটা বাড়িয়ে নিচ্ছেন অধিনায়ক। সেই সঙ্গে নিজের সেঞ্চুরিও তুলে নিয়েছেন। অবশেষে শরিফুল ইসলামের বলে ১২০ রান তুলে প্যাভিলিয়নের পথে ফেরেন পেরেরা। তার ইনিংসটি ১১টি চার এবং ১টি ছয়ে সাজানো।

পরের উইকেটে ব্যাট করতে নেমে সুবিধা করতে পারেনি নিরোশান দিকভেলা। রানআউট হওয়ার পূর্বে করেন মাত্র ৭ রান।

বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট নেন পেসার তাসকিন আহমেদ। এছাড়া একটি উইকেট পেয়েছেন শরিফুল ইসলাম।

বাংলাদেশ একাদশ:

তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), নাঈম শেখ, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মোসাদ্দেক হোসেন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন ধ্রুব, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম ও মোস্তাফিজুর রহমান।

শ্রীলঙ্কা একাদশ:

কুশল পেরেরা (অধিনায়ক), দানুশকা গুনাথিলাকা, পাথুম নিসানকা, কুশল মেন্ডিস, নিরোশান ডিকবেলা (উইকেটকিপার), ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, ভানিন্দু হাসারাঙ্গা, রমেশ মেন্ডিস, চামিকা করুণারত্নে, বিনুরা ফার্নান্ডো, দুষ্মন্থ চামিরা।

বাংলাদেশ জার্নাল/টিআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত