ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

১–৭ গোলের বিপর্যয় বারবার হয় না: তিতে

  স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ : ২৫ মে ২০১৮, ১৯:২১

১–৭ গোলের বিপর্যয় বারবার হয় না: তিতে

এলেন, দেখলেন এবং জয় করলেন। তাকে যখন কোচ হিসেবে নিয়োগ করেছিল ব্রাজিল, তখন বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে নেইমার, কৌতিনহোরা রীতিমতো ধুঁকছিলেন। তার কোচিংয়ে ১৯টা ম্যাচ খেলার পর ব্রাজিলের গোলপার্থক্য হলো +‌৩৭। শেষ দু’‌বছরে মাত্র একটা ম্যাচ হেরেছেন নেইমাররা। সেই পুরনো ব্রাজিলকে দেখানোর স্বপ্ন নিয়েই বিশ্বকাপে যাচ্ছেন কোচ তিতে। তিনিই জানালেন এবারের বিশ্বকাপে ব্রাজিল দল নিয়ে তার পরিকল্পনার খুঁটিনাটি।

আপনারাই প্রথম দল হিসেবে রাশিয়া বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন করেছেন ১৯৫৮ এর পর ফের ইউরোপের মাটিতে বিশ্বকাপ জেতার ব্যাপারে ফেবারিট আপনারা আপনি কি এখন আরও বেশি চাপে?‌

তিতে:‌ সেলেকাওদের কোচিং করানো মানেই চাপকে বরণ করে নেওয়া। আমরা পাঁচবার বিশ্বকাপ জিতেছি। তাই জানি সমর্থকরা কাপ ছাড়া আর কিছুই মেনে নেবেন না। এটা শুনেই আমরা বেড়ে উঠেছি। তাই প্রত্যাশার চাপ সবসময় থাকবে। চাপের কথা মাথায় না রেখেই পারফর্ম করতে হবে। বিশ্বকাপে ব্রাজিলের সঙ্গে যদি আপনি যুক্ত থাকেন, তাহলে এটা কতটা ভাল পারেন, সেটাই আপনার পরীক্ষা।

ব্রাজিল এবং ২০১৪ এর ১৭ গোলের হার এখন অবিচ্ছেদ্য হয়ে গেছে তাতেও আপনারা ঘুরে দাঁড়িয়েছেন যে ১৯টা ম্যাচে আপনি দায়িত্বে ছিলেন সেখানে ১৫টা জিতেছেন এবং ৪২টা গোল করেছেন খেয়েছেন মাত্র পাঁচটা

তিতে:‌ আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর ছেলেরা আমার কথা শুনেছে। ওদের দেখানোর দরকার ছিল যে ওরা কতটা শক্তিশালী এবং সেটা ওরা পেরেছে। ড্রেসিংরুমের পরিবেশটাও সুখী। মাঠে এবং মাঠের বাইরে ফুটবলাররা ইচ্ছেমতো নিজেদের প্রকাশ করতে পারে।

এই পরিবর্তনের পেছনে আপনার ভূমিকা কতটা ছিল?‌

তিতে:‌ ফলাফলের থেকে আমি অনেক বেশি বিশ্বাসী পারফরম্যান্সে। ফলাফল আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। কিন্তু পারফরম্যান্স পারেন। আমি সেটাই ওদের বারবার বুঝিয়েছি। দল কীভাবে খেলবে সেই সঠিক পথটা আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে। সেটা হবে প্লেয়ারদের ক্ষমতার কথা মাথায় রেখে। আমাদের এমন একটা স্টাইল রপ্ত করতে হত যার সঙ্গে ফুটবলাররা সহজেই মানিয়ে নেবে।

গ্রুপে আপনার প্রতিপক্ষরা চাইবে ডিফেন্সিভ খেলতে আপনি নিশ্চয়ই কোনও উপায় বের করে রেখেছেন সেটা ভাঙার জন্য?‌

তিতে:‌ দেখুন, সুইজারল্যান্ড একটু পেছন থেকে খেলতে ভালবাসে। ওরা কাউন্টার অ্যাটাক এবং সেটপিস থেকে আক্রমণ করতে ভালবাসে। কিন্তু সার্বিয়া একদম পুরনো দিনের যুগোস্লাভিয়ার মতো। সাধারণত ওরা বিপক্ষকে খেলতে দেয় এবং নিজেরাও ছোট ছোট পাসে খেলা তৈরি করে। গত বিশ্বকাপে কোস্টারিকা শেষ আটে গিয়েছিল। তা‌ও আবার একটা ম্যাচ না হেরে। শেষমেশ নেদারল্যান্ডসের কাছে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নেয়। যেকোন দলের পক্ষে কোস্টারিকা এবং সার্বিয়ার ডিফেন্স ভাঙা কঠিন কাজ। আর সার্বিয়ার ক্ষেত্রে ওদের আক্রমণের সময় সতর্ক থাকতে হবে। আমার মনে হয়, গ্রুপ পর্যায় থেকেই উত্তেজক ম্যাচ খেলতে হবে আমাদের।

দানি আলভেস আপনার পরিকল্পনার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত ছিলেন এখন যেহেতু তিনি চোট পেয়ে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেছেন, ‌তাই প্ল্যান বি হিসেবে আপনি কী পরিবর্তন করতে চলেছেন?‌

তিতে:‌ চোট খেলারই অংশ। হ্যা, দানি আমাদের পরিকল্পনাতে ছিল। নিশ্চিতভাবে ও প্রথম দলে থাকত। কিন্তু এখন যা অবস্থা, তাতে আমাদের পরিবর্তন খুঁজতেই হবে। তবে দানির মতো প্লেয়ারের পরিবর্তন খোঁজা খুবই কঠিন কাজ। কিন্তু সেটাই তো একটা কোচের কাজ। সঠিক প্লেয়ারকে খুঁজে বের করা।

দানি না–‌থাকায় আপনি কি ছকে খেলাবেন?‌

তিতে:‌ আমাদের কাছে অনেকরকম অপশন রয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি চাইলে তবেই আমরা ছকে পরিবর্তন করব। যদিও এটা ঠিক নতুন কোনও ছকে খেলাব না দলকে। বিশ্বকাপে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা বিপজ্জনক হতে পারে।

কেন বিশ্বকাপে পরীক্ষানিরীক্ষা করা বিপজ্জনক?

তিতে:‌ দলে এটা খুব খারাপ প্রভাব ফেলে। এতে নিরাপত্তার অভাব দেখা দেয় প্লেয়ারদের মধ্যে। সন্দেহও তৈরি হয়। সাবেক ফুটবলাররা এই কথাটা আমাকে বারবার করে বলেছেন এবং আমি বুঝতে পেরেছি ওরা ঠিক কী বলতে চাইছেন। যা করে এসেছি, সেটা করে এলে ফল সহজেই মেলে। হঠাৎ করে সেটা পুরোপুরি পরিবর্তন করা যায় না। কিন্তু ছোটখাটো দু–একটা পরিবর্তন তো হবেই।

আপনারা জার্মানির সঙ্গে কিছুদিন আগেই একটা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেললেন কিন্তু গোটা বিশ্ব আপনাদের সেই হারের স্মৃতি ফিরিয়ে নিয়ে এল ম্যাচের আগে আপনার অনুভূতি কীরকম ছিল?‌

তিতে:‌ আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম, কারণ ওর আগের ম্যাচটাই আমরা ভাল খেলেছিলাম। ১–৭ ছিল একটা বিপর্যয়। আর বিপর্যয় বারবার হয় না। আমরা এটা নিয়ে কথা বলেছি। এবং জানতে পেরেছি সেদিন কী কী ভুল হয়েছিল। তাই সেই ভুল ফের না করাই আমাদের লক্ষ্য ছিল। আর তা ছাড়া আমরা জার্মানির বিরুদ্ধে ফ্রেন্ডলি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিলাম। আমরা জানি ওই হারের স্মৃতি চিরকাল মানুষের মনে থাকবে। কিন্তু সেটা পেরিয়ে আমাদের দরকার এগিয়ে যাওয়া।

তাহলে এই ব্রাজিল কি বিশ্বকাপ জিততে পারবে?‌

তিতে:‌ এখনই সেটা বলা যাচ্ছে না। বিশ্বকাপ সাত ম্যাচের একটা টুর্নামেন্ট এবং আপনাকে অন্তত ছ'‌টা ম্যাচে জিততেই হবে, যেটা বিশাল। গ্রুপে একটা হার পরে সামলে নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু পরের চারটে ম্যাচ তো জিততেই হবে। তাই একটা একটা ম্যাচ ধরে ভাববো আমরা। গ্রুপ থেকে আমাদের ৭ পয়েন্ট নিশ্চিত করতে হবে। নকআউট ম্যাচে কী হবে আগে থেকে বলা যায় না। চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে প্রত্যেক ম্যাচে একইরকম ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। সেটা টুর্নামেন্টের সব থেকে কঠিন দলের বিরুদ্ধে হলেও।‌‌‌‌‌‌‌ সূত্র: আজকাল।

বাংলাদেশ জার্নাল/টিআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত