ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

বিশ্বকাপ আসরে লাখো যৌনকর্মীর সমাগম

  স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ : ২১ জুন ২০১৮, ১৭:২২

বিশ্বকাপ আসরে লাখো যৌনকর্মীর সমাগম

'গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ' বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়েই এখন মেতে আছে বিশ্ব। তবে সেই মাতামাতি শুধু খেলার মাঠেই সীমাবদ্ধ নয়। বিশ্বকাপকে ঘিরে এর আড়ালে আছে আরো অন্ধকার জগৎ। যেখানে চলে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য। যার প্রথমেই আছে মাদক ও নারী।

বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে সারা বিশ্বের সব প্রান্ত থেকেই দর্শকরা পাড়ি জমায় আয়োজক দেশে। তাই সেই সমর্থকদের জন্যই বাড়তি সুবিধা রাখে বিশ্বকাপ আয়োজনকারী দেশ। যেখানে আয় হয় হাজার কোটি টাকা। দর্শকদের খেলা দেখা, খাবার, হোটেল কক্ষ ছাড়া সবচেয়ে চাহিদা থাকে যৌনকর্মীদের। সেটি প্রায় অলিখিতভাবেই স্বীকৃতি বলা চলে।

রাশিয়া বিশ্বকাপের স্থানীয় যৌনকর্মীরা ছাড়াও বিশ্বকাপ ফুটবল উপলক্ষ্যে বিভিন্ন দেশ থেকেও নানাভাবে জড়ো করা হয়েছে যৌনকর্মীরা। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্যান্য দেশ, পশ্চিম আফ্রিকা ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চল থেকে লাখও যৌনকর্মী পাচার করে আনা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এরকম লাখো লাখো যৌনকর্মীরা অবাধেই ঢুকছে রাশিয়াতে। কারণ বিশ্বকাপ আসরের কারণে শিথিল করা হয়েছে ভিসা নিয়ে কড়াকড়ি। ফলে স্বাভাবিক ভিসাতেই রাশিয়ায় ঢুকতে পারছে যৌনকর্মীরা।

এই সুযোগে অধিক মুনাফা লাভের আশায় খেলার শহরগুলোতে যৌনকর্মীদের পাঠাচ্ছে বিভিন্ন দালালরা। যাদের অনেককেই আনা হচ্ছে পাচার করে। এমনটাই জানিয়েছে রাশিয়ার সংবাদ মাধ্যম। বিষয়টিকে দাসত্ব হিসেবেই দেখছে মানবাধিকার কর্মীরা।

মস্কোভিত্তিক দাসত্ব বিরোধী সংগঠন অল্টারনেটিভা’র ইউলিয়া সিলুয়ানোভার মতে, বিশ্বকাপ আসর হচ্ছে যৌনব্যবসার জন্য বড় ধরণের সুযোগ। তিনি বলেন, বিদেশ থেকে প্রতি বছর কয়েক হাজার নারী পাচার হয় রাশিয়ায়। গত গ্রীষ্মে ফিফা কনফেডারেশন কাপের সময় ভিসা শিথিল করায় তখন থেকে পাচারের আকার বৃদ্ধি পায় বলে তিনি মনে করেন।

মানবাধিকার সংগঠন সিলভার রোজের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, রাশিয়াজুড়ে প্রায় ৩০ লাখ নিয়মিত যৌনকর্মী রয়েছেন। এরপরেও বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে বিদেশ থেকে যৌনকর্মীদের এ দেশে পাচার করে আনা হয়েছে।

স্থানীয় একটি পত্রিকার এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, মস্কো ও সেন্ট পিটার্সবার্গের মাঝামাঝি লেনিনগ্রাদস্কোয়ে হাইওয়ে এলাকা এখন যৌনকর্মীদের স্বর্গরাজ্য বলা চলে। যৌনকর্মীরা বাহারী পোষাক ও সাজসজ্জা নিয়ে পথচারী ও গাড়ি আরোহীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। প্রায়ই অনাবৃত হয়ে খদ্দেরের আশায় নানাভাবে শারীরিক অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শণ করছে।

সন্ধ্যা হলেই যৌনকর্মীরা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে যাচ্ছে। খদ্দেরের আশায় রাস্তাতেই হাঁকডাক দিচ্ছে তারা। আবার পাচারকারীরা ছোট ছোট ফ্ল্যাট ভাড়া করে এদের রাখে। ফোনে বা অনলাইনে চাহিদা মত খদ্দেরদের কাছে পাঠাচ্ছে তাদের।

ইউলিয়া জানাচ্ছেন, এদের বেশিরভাগ থেকেই রাশিয়ায় প্রবেশের পরে পাসপোর্ট কেড়ে নেয়া হয়। তা ফেরত পেতে পাচারকারীদের ৫০ হাজার ডলার পর্যন্ত পরিশোধ করতে হয় তাদের। নয়ত শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয় বা দেশে তাদের পরিবারের সদস্যদের ক্ষতি করা হবে বলে হুমকি দেয়া হয়।

তবে অধিকার সংগঠনগুলো সমালোচনা করলেও এসবের দিকে গুরুত্ব নেই কর্তৃপক্ষের। কোটি কোটি মানুষের এমন উৎসবে যৌন চাহিদা মেটানোর উপায় হিসেবেও যৌনকর্মীদের সমাগমকে স্বাভাবিক হিসেবেই দেখছেন তারা। তবে এক্ষেত্রে অনাকাঙ্ক্ষিত কোন ঘটনা যাতে না ঘটে সেদিক দিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থার দিকে জোর দিচ্ছেন তারা।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত