ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

শীর্ষস্থানে জকোভিচ

  স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ১১:৫২

শীর্ষস্থানে জকোভিচ

টেনিসে ‘ট্যুর ফাইনাল’ নামে পরিচিত এটিপি আসরে পুরুষ বিভাগে বছরের শেষ ট্রফিটি জয় করে নিয়েছেন আগামী প্রজন্মের ‘পোস্টার বয়’ খ্যাত আলেক্সান্ডার জেভেরেভ। ফলে আগামীর তারকা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্টিত করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। তবে বছর শেষে র‌্যাংকিংয়ের শীর্ষ তিনটি আসনে রয়েছে সিনিয়র তারকারাই।

বয়সের বাঁধাকে অতিক্রম করে র‌্যাংকিংয়ে পুরুষ এককের শীর্ষে রয়েছেন নোভাক জকোভিচ, রাফায়েল নাদাল ও রজার ফেদেরার। এদের মধ্যে নিজের টেনিস সামর্থ্যের প্রদর্শনী দিয়ে এক নম্বর র‌্যাংকটি দখল করেছেন জকোভিচ। সার্বিয়ার এই টেনিস তারকা গত জুন মাসেও ছিলেন র‌্যাংকিংয়ের ২২তম অবস্থানে। এ সময় ফ্রেঞ্চ ওপেনে ইতালীর মার্কো চেচিনাতোর কাছে হারের লজ্জায় পেতে হয়েছে তাকে। অবশ্য হাতের কনুইয়ের ইনজুরিটি ছিল এর প্রধান কারণ। যে কারণে শেষ পর্যন্ত তাকে অস্ত্রোপাচার করাতে হয়েছে।

পরের কয়েকটি মাস নিজের সেরা ফর্ম ফিরে পান জকোভিচ। জিতে নেন উইম্বলডন ও ইউএস ওপেনের শিরোপা। এরপর সিনসিনাটির ঐতিহাসিক মাস্টার্স শিরোপা জয় করেন জকোভিচ। র‌্যাংকিংয়ের এক নম্বর আসনে ফেরার পর জকোভিচ বলেন, ‘আত্মবিশ্বাসও আমার এই সাফল্যেও একটি বড় উপাত্ত। আমি কখনো মনে করিনি যে এটি অসম্ভব কিছু। পাঁচটি বছর আমি নিজেকে সেরা অবস্থানে রেখেছি। এ সময় দুটি গ্র্যান্ড স্লাম জয়লাভ করি।’

এ দিকে বছরের পর বছর ধরে ফেদেরার নিজের সাফল্য অব্যাহত রেখেছেন। তিনি ৩৬ বছর বয়সে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ের মাধ্যমে এটিপির ইতিহাসে সবচেয়ে বয়স্ক তারকা হিসেবে শীর্ষ র‌্যাংকে আরোহন করেন। এর মাধ্যমে তিনি ভেঙ্গেছেন আন্দ্রে আগাসির রেকর্ড।

এদিকে ক্লে কোর্টে প্রাধান্য ধরে রেখেছেন রাফায়েল নাদাল। রোলা গাঁরোতে ক্যারিয়ারের ১১তম শিরোপাটি জয় করেছেন। তবে পরবর্তিতে ইনজুরির কবলে পড়েন এই স্প্যানিশ তারকা। যে কারণে পরবর্তী দুটি গ্যান্ড স্লামে অংশ নিতে পারেননি। বছরে তিনি মাত্র ৯টি টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছেন। ২০০২ সালের পর এটিই সবচেয়ে কম সংখ্যক আসরে তার অংশগ্রহন। তারপরও ৫টি শিরোপা জয় করেছেন। এ সময় ৪৫ জয়ের বিপক্ষে হেরেছেন মাত্র ৪টি ম্যাচ।

এ দিকে ১৪ মাসের মাতৃত্বকালনি ছুটি কাটিয়ে কোর্টে ফিরেন সেরেনা উইলিয়ামস। সন্তান জন্ম দেয়ার সময় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে পড়ে অস্ত্রোপাচারের মুখে পড়তে হয়েছিল তাকে। তারপরও রেকর্ড সংখ্যক ২৪তম গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের খুব কাছাকাছি থেকে ফিরতে হয়েছে এই মার্কিন নারী টেনিস তারকাকে।

সন্তান জন্ম দেয়ার সময় তিনি এতটাই সংকটাপন্ন অবস্থায় পড়েছিলেন যে, ঝুকিমুক্তির জন্য বেশ কয়েক দফা অস্ত্রোপচারের মুখোমুখি হতে হয়েছে তাকে। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন সেরেনা। তারপরও ইউএস ও উইম্বলডনে রানার্স আপ হয়েছেন তিনি। তন্মধ্যে নিউইয়র্কে অনুষ্টিত ফাইনালে তিনি যেভাবে জাপানের নাওমি ওসাকার কাছে পরাজিত হয়েছিলেন সেটা দীর্ঘ সময় স্মরনে রাখার মত।

এ সময় সেরেনা টেনিসের আইন ভঙ্গ করে কোচের কাছ থেকে তার বক্সে থেকেই টিপস গ্রহন নিয়েই সৃস্টি হয় এক বাজে পরিস্থিতি। এক পর্যায়ে নিজের র‌্যাকেট ছুঁড়ে মারার মারার কারণে এক পয়েন্ট জরিমানা করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ার আম্পায়ার কার্লোস রামোস। প্রতিক্রিয়ায় ক্ষুব্ধ এই টেনিস তারকা আম্পায়রকে ‘ মিথ্যাবাদী ও চোর’ সম্বোধন করে চিৎকার করতে থাকেন।

এমন ঘটনায় বিস্মিত ওসাকা শেষ পর্যন্ত নিজের স্নায়ুকে সংযত রেখে জয় নিশ্চিত করেন। এর মাধ্যমে প্রথম কোন জাপানী প্রমিলা টেনিস তারকা হিসেবে গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের নজীর সৃস্টি করেন তিনি। পরে ট্রফি উচিয়ে ধরার সময় উইলিয়ামস ভক্তরা যখন ‘দুয়ো ধ্বনি’ দেন তখন অপমানে কেঁদে ফেলেন ২০ বছর বয়সি ওসাকা। পরক্ষনে অবশ্য নিজের ক্ষোভ সংবরণ করে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেন সেরেনা এবং তরুন এই চ্যাম্পিয়নকে সম্মান প্রদর্শনের আহ্বান জানান।

এই বছর ফ্রেঞ্চ ওপেনের শিরোপা জয়ের মাধ্যমে তিনটি বড় টুর্নামেন্টের ফাইনাল থেকে খালি হাতে ফিরে আসার দু:খ ভুলেছেন সিমোনা হালেপ। ৪০ বছর বয়সি কোচ ভিরজিনিয়া রুজিচির পদাঙ্ক অনুসরণ করে এমনটি ঘটেছে হালেপের। এ সময় ক্যারিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম জয় করেছেন ক্যারোলিন ওজনিয়াকি। অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ের মাধ্যমে প্রমিলা র‌্যাংকিংয়ের শীর্ষে ফিরেন এই ডেনিস তারকা। পরে ইউএস ওপেনের আগে অবশ্য বাত এবং অটোইমিউন রোগে আক্রান্ত হয়ে তার শরিরের জয়েন্ট ফুলে যায় এবং অবসাদ গ্রস্ত হয়ে পড়েন।

এদিকে সেরেনা উইলিয়ামসকে হারিয়ে গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের মাধ্যমে ক্যারিয়ারের তৃতীয় পর্ব শেষ করেছেন এ্যাঞ্জেলিক কারবেরি। এর ফলে ১৯৯৬ সালে স্টেফি গ্রাফের পর প্রথম কোন জার্মান নারী হিসেবে গ্র্যান্ড স্লাম জয় করেন তিনি।

এই বছরটি স্মরনীয় হয়ে থাকবে ঐতিহ্যবাহী ডেভিস কাপের ১১৮ বছরের ফরমেট ভেঙ্গে ফেলার কারণে। নতুন ভার্সন অনুযায়ী ১৮ জাতি একটি পজিশনের জন্য একসঙ্গে লড়বে এক সপ্তাহের জন্য।

এই বছর অনুষ্টিত উইম্বলডনের সেমি-ফাইনালে পঞ্চম সেটে গিয়ে জন ইসনারের কাছে ২৬-২৪ পয়েন্টে কেভিন এন্ডারসনের পরাজয়টিও নতুন ভাবনার জন্ম দিয়েছে। নিয়ম পরিবর্তন বিষয়ে ইসনার বলেন,‘ এটি দীর্ঘ সময়ের একটি ঐতিহ্য। তবে আমার মনে হয় অনেক মানুষ বিশ্বাস করে এটি খুব একটা খারাপ নয়। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনাল সেটের ১০ পয়েন্টের টাইব্রেকের এই পন্থা অবলম্বন করা হবে। যেখানে ক্যারিয়ারের শততম শিরোপা জয়ের অপেক্ষায় আছেন রজার ফেদেরার।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত