দুর্বল তিতলি’র প্রভাবে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় তিতলি ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য অন্ধ্র প্রদেশ ও উড়িষ্যার মাঝামাঝি এলাকায় আঘাত হেনেছে। এটি স্থলভাগ দিয়ে উপরের দিকে সরতে সরতে দুর্বল হয়ে পড়েছে। ফলে বাংলাদেশে তেমন কোনও প্রভাব না পড়লেও, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সারা দেশেই গুড়িগুড়ি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এর আগে, ভারতীয় সময় ভোর সাড়ে ৪টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত দেশটির অন্ধ্র-উড়িষ্যা উপকূলে তাণ্ডব শুরু করে তিতলি ।

পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় তিতলি, হারিক্যানের ক্ষমতা সম্পন্ন প্রবল ঘূর্ণিঝড় রূপে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৫টায় গোপালপুরের নিকট দিয়ে ভারতের উড়িষ্যা-অন্ধ্র উপকূলে আঘাত হানে। বেলা ১১টা পর্যন্ত এটি উড়িষ্যা উপকূল অতিক্রম করে।

প্রথম ধাপে উপজেলা নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৩০-৪০ শতাংশ: সিইসি

তিতলির প্রভাবে উড়িষ্যা উপকূলে বাতাসের একটানা গতিবেগ ছিলো প্রতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৬৫ কিলোমিটার। উপকূলীয় এলাকার পাঁচটি জেলা থেকে প্রায় তিন লাখ লোককে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেয় ভারত। ঝড়ের প্রভাবে সেখানে বিভিন্ন এলাকায় গাছ এবং বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে গেছে। বিভিন্ন অঞ্চল বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে রেল চলাচল করছে না। অতিবৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভূমিধস হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। উচ্চ ক্ষমতা-সম্পন্ন ঘূর্ণিঝড়টি স্থানীয় সময় দুপুর নাগাদ অন্ধ্র প্রদেশের কালিনগাপাতম এলাকা অতিক্রম করবে। এদিকে ভারতের জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী এর মধ্যেই উদ্ধার কাজে নেমে পড়েছে।

বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, তিতলি ইতোমধ্যেই উড়িষ্যা উপকূল অতিক্রম করেছে। উড়িষ্যার স্থলভাগে আঘাতের পর ঘূর্ণিঝড়টির শক্তি অনেকটাই প্রশমিত হবে। তবে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য সর্বোচ্চ সতর্ক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সঙ্কেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। আর নদীবন্দরে দেখাতে বলেছে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত।

এদিকে ঘূর্ণিঝড়টি দুর্বল হয়ে পড়ায় ২১ ঘণ্টা পর অভ্যন্তরীণ রুটে নৌ চলাচল শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) জনসংযোগ কর্মকর্তা মোবারক হোসেন মজুমদার বলেন, উপকূলীয় এলাকা ছাড়া দেশের অভ্যন্তরে নৌ চলাচল আবার শুরু করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরো জানান, আবহাওয়ার পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ বেলা ১টার দিকে লঞ্চ ছাড়ার অনুমতি দেয়।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে হবে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, তিতলির প্রভাবে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এছাড়া হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।

ডিপি/