ঢাকা, রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪২ মিনিট আগে
শিরোনাম

এমপিও নিয়ে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৪ জুলাই ২০১৮, ১৮:৪৫  
আপডেট :
 ০৪ জুলাই ২০১৮, ২২:৪২

এমপিও নিয়ে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী

এমপিওভুক্তির দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলন চলার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন, দ্রুত এ বিষয়ে কার্যক্রম নেওয়া হবে। সংসদে বুধবারের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্বগ্রহণের পরই শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের লক্ষ্যে সারাদেশে এক হাজার ৬২৪টি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছে।

অবশিষ্ট নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে এমপিওভুক্ত করতে ইতোমধ্যে ‘বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো এবং এমপিও নীতিমালা ২০১৮’ জারির কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।

আরো পড়ুন: ২১৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিও বন্ধের নির্দেশ

শেখ হাসিনা বলেন, এই নীতিমালা অনুসরণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির বিষয়ে দ্রুত কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। এ লক্ষ্যে অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন গ্রহণ ও ব্যবস্থাপনা এবং বিধিমতে প্রতিষ্ঠান বাছাইয়ের জন্য পৃথক দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরই শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের লক্ষ্যে সারা দেশে ১ হাজার ৬২৪টি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। অবশিষ্ট নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে এমপিওভুক্ত করার জন্য ইতিমধ্যে ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো এবং এমপিও নীতিমালা ২০১৮’ জারি করা হয়েছে। এই নীতিমালার অনুসরণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির বিষয়ে দ্রুত কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। এ লক্ষ্যে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ ও ব্যবস্থাপনা এবং বিধিমতে প্রতিষ্ঠান বাছাইয়ের জন্য পৃথক দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জুলাই ২০১৮ থেকে ২০২৩ মেয়াদে ৩৮ হাজার ৩৯৭ কোটি টাকা ব্যয়ে চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিডিইপি-৪) গ্রহণ করা হয়েছে। এ কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলে প্রাথমিক শিক্ষার মান আরও উন্নত হবে। তিনি জানান, এই কর্মসূচির আওতায় ২৬ হাজার প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষকসহ ৬১ হাজার ১৬৬ জন শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড প্রতিষ্ঠা করা হবে। বিশ্ব গণিত অলিম্পিয়াড আয়োজন করা হবে।

এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষকদের মূল বেতন সরকার দিয়ে থাকে। নিজ নিজ এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করতে সংসদ সদস্যদেরও সুপারিশ থাকে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে কয়েকটি শর্ত দিয়ে নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করতে আলাদা বরাদ্দ রাখা হবে বলে বাজেটের আগে জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

কিন্তু বাজেটে এমপিও নিয়ে কোনো ঘোষণা না থাকায় ফের আন্দোলনে নেমেছেন নন-এমপিও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা। গত কয়েকদিন ধরে তারা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়ে অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার সংসদে প্রশ্নোত্তরে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও কার্যক্রমের সমালোচনা করে বক্তব্য দেন।

এমপিওভুক্তিকে ‘খারাপ কার্যক্রম’ হিসেবে উল্লেখ করে মুহিত বলেন, এতে শুধু কিছু শিক্ষক ও কর্মচারীর বেতন দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার উন্নয়নের জন্য এটা কোনো ভালো কার্যক্রম নয়। উপবৃত্তিতে অর্থ দেওয়া যায়, সেটা অনেক ভালো কাজ করে। শিক্ষার উন্নয়নের জন্য যদি আমরা স্কুল ফিডিংয়ের ব্যবস্থা করতে পারি অনেক ভালো হবে। কেন আপনারা (সংসদ সদস্য) সেগুলোর দিকে নজর দেন না? বারবার এমপিওভুক্তি করতে চেষ্টা করেন।

বুধবারের অধিবেশনে জাতীয় পার্টির সাংসদ ফখরুল ইমামের এক প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষকতার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

আরো পড়ুন: অনশনে অসুস্থ দুই শতাধিক শিক্ষক

ফখরুল ইমামের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশকে উন্নত করতে চাই। উন্নত করতে ব্যাপক কাজ আমরা করছি। প্রতিটি সেক্টরে ব্যাপক কাজ হচ্ছে। স্বল্প খরচে শিক্ষার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষার্থীরা কত টাকা খরচ করে? তাদের সিটভাড়া হচ্ছে ২৫ টাকা। আর খাবার হচ্ছে ৩০ টাকা। এই টাকায় তারা পড়ছে। এখন তো ভালো এক কাপ চা খেতে গেলে ২০ টাকা লাগে।

বর্তমান সরকারের দুই মেয়াদের নয় বছরে বাংলাদেশে উন্নয়নে বিশ্ব বিস্মিত বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড প্রতিষ্ঠা, বিশ্ব গণিত অলিম্পিয়াড আয়োজন, শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ, শিক্ষকদের দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণসহ নানা পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এই উদ্যোগগুলো নেওয়ার ফলে দেশে সবার জন্য যুগোপযোগী শিক্ষা নিশ্চিত হবে। শিক্ষাক্ষেত্রে গুণগত পরিবর্তন অব্যাহত থাকবে।

প্রশ্নোত্তরে প্রধানমন্ত্রী একঘণ্টার বেশি সময় ধরে ফখরুল ইমামের প্রশ্নের মৌখিক জবাব দেন। এতে তিনি দেশের শিক্ষার উন্নয়নে সরকারের ৯ বছরের গৃহীত নানা কর্মকাণ্ডসহ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। বাংলাদেশের শিক্ষার মানোন্নয়নে বিস্তারিত বিবরণ দেওয়ার জন্য এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দেন স্পিকার।

পরে ফখরুল ইমাম ফ্লোর পান সম্পূরক প্রশ্নের জন্য। ওই সময় তিনি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রশ্ন না করে ভিন্ন একটি বিষয়ের অবতারণা করেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সরকারি দলের অনেকে মনযোগ সহকারে শোনেননি বলে অভিযোগ করেন ফখরুল। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যে বিস্তারিত জবাব দিয়েছেন, তা আমাদের বিরোধী দলীয় নেতা, পার্টির মহাসচিবসহ সবাই মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন। কিন্তু ওইদিকের (ট্রেজারি বেঞ্চ) অনেকের চোখে ঘুম ছিল মনে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে দুই চোখের মধ্যে সম্পর্ক কী?

জবাবে স্পিকার বলেন, ‘মাননীয় সদস্য আপনি প্রশ্ন তো করেননি কিছু। এটা তো সংশ্লিষ্ট বিষয় নয়।’ অবশ্য স্পিকার এও বলেন, ‘আসলে শিক্ষার মানোন্নয়নে ব্যাপক কার্যক্রম ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী বিবৃত করেছেন। কাজেই সেই বিষয়ে তার প্রশ্ন থাকার যুক্তি নেই।’

পরে প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীও স্পিকারের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি তো প্রশ্ন খুঁজে পাইনি। কী জবাব দেবো?’

আরো পড়ুন: শিক্ষা ব্যবস্থার সমালোচনায় প্রবীণ শিক্ষক

  • সর্বশেষ
  • পঠিত