ঢাকা, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২১ মিনিট আগে
শিরোনাম

ব্রিটিশ নাগরিকত্ব হারাচ্ছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শামিমা

ব্রিটিশ নাগরিকত্ব হারাচ্ছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শামিমা

সিরিয়ায় জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট-এ যোগ দেয়ার অপরাধে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শামিমা বেগমের নাগরিকত্ব কেড়ে নিতে চলেছে ব্রিটিশ সরকার।

মঙ্গলবার যুক্তরাজ্য বসবাসরত শামীমার মাকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তবে এ সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন শামিমার পারিবারিক আইনজীবী তাসনিম আখুনজি।

বিবিসি বলছে, যেহেতু শামিমা বেগমের বয়স ১৯ হয়েছে, তাই তিনি অন্য দেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য। সে কারণেই ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্রিটিশ সরকার।

২০১৫ সালে ইস্ট লন্ডন ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন শামীমা, যদিও এখন বলছেন - তিনি আবার ব্রিটেনে ফিরতে চান।

গত সপ্তাহে তাকে সিরিয়ায় একটি শরণার্থী ক্যাম্পে তাকে পাওয়া যায়। সপ্তাহের শেষ দিকে একটি পুত্র সন্তানর জন্ম দিয়েছেন তিনি।

বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেছেন, তিনি কখনো আইএসের 'পোস্টার গার্ল' হতে চাননি এবং এখন তিনি শুধু তার সন্তানকে যুক্তরাজ্যেই বড় করতে চান।

২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে আরও দুই ব্রিটিশ কিশোরীর সঙ্গে মাত্র ১৫ বছর বয়সে যুক্তরাজ্য ছাড়েন শামিমা। সে সিরিয়ায় আইএসের রাজধানী রাক্কায় আশ্রয় নেয়। সেখানে ২৭ বছর বয়স্ক একজন ডাচ নাগরিকের বিয়ে হয় যে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছিল।

তারপর থেকে শামিমা ওই ব্যক্তির সাথেই ছিলেন এবং দু'সপ্তাহ আগে তারা পূর্ব সিরিয়ায় আইএস গোষ্ঠীর শেষ ঘাঁটি বাঘুজ থেকে পালিয়ে যান। এ সময় শামিমার স্বামী সিরিয়ান যোদ্ধাদের একটি দলের কাছে আত্মসমর্পণ করে। শামিমা এখন উত্তর সিরিয়ায় ৩৯ হাজার লোকের বাস এমন একটি শরণার্থী শিবিরে অবস্থান করছেন।সেখানে সে সিরিয়ায় আইএস উৎখাত অভিযানে আশ্রয় হারিয়ে এখন তার ঠাঁই হয়েছে শরণার্থী শিবিরে।

সেখানেই গত সপ্তাহে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন ১৯ বছরের এই তরুণী। ব্রিটিশ দৈনিক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, সন্তানের জন্যই তিনি লন্ডনে পরিবারের কাছে ফিরতে চান।

তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভেদ স্পষ্ট করেই বলেছেন, জঙ্গিদের সমর্থন দিয়ে যারা দেশ ছেড়েছে, তাদের ফিরতে দিতে তিনি আগ্রহী নন। তার সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হলো ব্রিটেন এবং ব্রিটিশ নাগরিকদের নিরাপত্তা বিধান করা।

তবে বিবিসি বলছে, কোনো ব্রিটিশ নাগরিকের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার আগে যদি তার সন্তানের জন্ম হয়, তাহলে আইন অনুযায়ী শিশুটি ব্রিটিশ নাগরিক হিসেবে গণ্য হবে।

পরে ওই শিশুটির নাগরিকত্বও বাতিল করার কথা ভাবতে পারে ব্রিটিশ সরকার। তবে এক্ষেত্রে তার অধিকার এবং রাষ্ট্রের জন্য আদৌ সে ঝুঁকি কি না, সেই সমীকারণ মেলাতে হবে কর্তৃপক্ষকে।

শামীমার মাকে পাঠানো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নোটিসে বলা হয়েছে, তার সঙ্গে যদি মেয়ের যোগাযোগ থাকে অথবা শিগগিরই যোগাযোগ করার সুযোগ হয়, তাহলে যেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়।

নাগরিকত্ব বাতিলের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ২৮ দিনের মধ্যে আপিল করতে হবে শামিমাকে।

এদিকে বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে শামিমা বলেছে, তিনি কখনো বাংলাদেশে যাননি এবং তার কোনো বাংলাদেশি পাসপোর্ট নেই।

আর আইনজীবী আখুনজি বলছেন, শামীমার পরিবার বাংলাদেশ থেকে এসেছে- এই যুক্তিতে তার নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক।

সূত্র: বিবিসি

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত