ঢাকা, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩০ মিনিট আগে
শিরোনাম

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে জিএম কাদের

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০১৯, ১৫:১৮  
আপডেট :
 ১৮ জানুয়ারি ২০১৯, ১৫:২০

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে জিএম কাদের

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের অবর্তমানে দলটির কো-চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জিএম কাদের) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। শুক্রবার সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

এরশাদ বলেন, ‘আমি জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হিসেবে পার্টির সর্বস্তরের নেতাকর্মী-সমর্থকদের জানাচ্ছি যে, আমার অবর্তমানে বা চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিদেশে থাকাকালীন পার্টির বর্তমান কো-চেয়্যারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।’

তিনি বলেন, ‘পার্টির গঠনতন্ত্রের ২০/১/ক ধারা মোতাবেক পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এই নিয়োগ প্রদান করেছেন। যা ইতিমধ্যেই কার্যকর হয়েছে।’

এর আগে গত ১ জানুয়ারি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমেও একই তথ্য জানানো হয়। এরশাদের অবর্তমানে দলটির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বলে সেসময় জানানো হয়েছিল।

ইতোপূর্বে অনেকবার দেশের বাইরে গেছেন এরশাদ কিন্তু কখনও কাউকে চেয়ারম্যানের দায়িত্বে দিয়ে যান নি। শুধু নির্বাচনের পূর্বে দেশের বাইরে যাওয়ার সময় জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে সাংগঠনিক দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন।

এরশাদের শারীরিক অবস্থা মোটেই ভালো যাচ্ছে না। পায়ের উপর ভর দিযে দাঁড়াতে খুব কষ্ট হচ্ছে। আগে একপায়ে সমস্যা ছিলো, এখন দু’পায়েই সমস্যা হচ্ছে। সর্বশেষ শপথ নিতে গিয়েছিলেন হুইল চেয়ারে বসে। তাকে অধিকাংশ সময় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালেই থাকতে হয়।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েকদিনের মধ্যে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যেতে পারেন এরশাদ। তার শারীরিক অসুস্থতায় দলীয় নেতারা উদ্বিগ্ন। ৩০ জানুয়ারির আগেই দেশে ফেরার কথা রয়েছে। পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও এইচ এম এরশাদের একান্ত সচিব মেজর অব. খালেদ আখতার জানিয়েছেন, পার্টির চেয়ারম্যানের রক্তের হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ায় তিনি আবারো চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যাবেন।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ একাদশ সংসদের বিরোধী দলের নেতা। আর জিএম কাদের বিরোধী দলের উপনেতার দায়িত্ব পালন করবেন।

গত দশম জাতীয় সংসদে একইসঙ্গে সরকার এবং বিরোধী দলে থাকার দুর্নাম ঘোচাতে চায় জাতীয় পার্টি (জাপা)। তাই এবারের সংসদে সন্ত্রাস ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে চায় দলটি। সে লক্ষে এরই মধ্যে দলের কো- চেয়ারম্যান ও সংসদ উপনেতা জিএম কাদেরকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়েছে। তাদের কাজ সরকারের নানা অনিয়মের দলিল সংগ্রহ করা। পাশাপাশি এরশাদের শাসনামলের উন্নয়ন তুলে ধরে সংসদে সরকারকে ঘায়েলের চেষ্টা করা হবে। একই সঙ্গে রাজপথেও নানা ইস্যুতে সক্রিয় থাকবে দলটি।

জানতে চাইলে পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, আমরা জবাবদিহিমূলক সরকার গঠনে কাজ করব। জাতীয় পার্টি হবে প্রকৃত বিরোধী দল। প্রশ্নবিদ্ধ বিরোধী দল হবে না। সংসদে জাতীয় পার্টি গঠনমূলক সমালোচনা করে সরকারের ভুলত্রুটি ধরিয়ে দেবে, বঞ্চিত ও অবহেলিত মানুষের কথা বলবে। তিনি বলেন, দেশের মানুষ সহিংস রাজনীতি পছন্দ করে না। জাতীয় পার্টি সংসদে কতটা শক্তিশালী বিরোধী দলের ভূমিকা রাখবে, তা কাজের মাধ্যমে প্রমাণ হবে।

৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর জাতীয় পার্টির নীতিনির্ধারক পর্যায়ের কয়েকজন নেতা জানিয়েছিলেন, মহাজোটে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেবে জাতীয় পার্টি বিরোধী দলে থাকবে কিনা। পার্টির বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য মন্ত্রিসভায় থাকার পক্ষেও জোরালো মত দিয়েছিলেন। কিন্তু এইচ এম এরশাদ বিরোধী দলে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। পার্টির চেয়ারম্যানের এই সিদ্ধান্ত সবাই মেনে নেন।

হরতাল-অবরোধের মতো ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ, প্রাদেশিক সরকার, নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার ও পূর্ণাঙ্গ উপজেলা প্রবর্তনসহ ১৮টি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে একাদশ সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার তৈরি করেছিল দলটি। নির্বাচনের আগে ১৮ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেন এরশাদের বিশেষ সহকারী এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। ক্ষমতায় না গেলেও প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকায় জাপার ইশতেহারগুলো বাস্তবায়নের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাবে জাপা। জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা একথা জানিয়েছেন।

জাপা নেতারা জানান, আমাদের মন্ত্রিসভায় যাওয়ার দরকার দরকার নেই। আমরা নির্ভেজাল বিরোধী দলের ভূমিকাটাই পালন করতে চাই। সংসদে জাতীয় পার্টি কেমন ভূমিকা রাখবে জানতে চাইলে পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে, যারা আগুনসন্ত্রাস করে জনগণ তাদের পছন্দ করে না। সংসদে আমরা দরিদ্র, মেহনতি মানুষের কথা বলব। আমরা গণমানুষের আস্থা অর্জন করে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে প্রত্যাশিত ফলাফল অর্জন করবো।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত