ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

শিক্ষক নিয়োগ : নতুন নীতিমালা দ্রুত কার্যকর হোক

  মুন্নাফ হোসেন

প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০১৮, ১৯:২৯

শিক্ষক নিয়োগ : নতুন নীতিমালা দ্রুত কার্যকর হোক

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জনবল কাঠামোতে আসছে ব্যাপক পরিবর্তন। আরো সোয়া লাখ নতুন পদ সৃষ্টি করা হচ্ছে। ২০১০ সালের শিক্ষানীতির পর ২০১২ সালে শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হয়েছিল। সেখানে শারীরিক শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগ, চারুকারুসহ কয়েকটি পদ সৃষ্ট করা হলেও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়নি। এর ফলে বিষয়গুলো ছাত্রছাত্রীদের তেমন উপকারে আসেনি। কারণ নির্দিষ্ট বিষয়ের শিক্ষক না থাকায় অন্য বিষয়ের শিক্ষক দিয়ে ক্লাস নেয়া হয়েছে। নতুন নীতিমালা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। মন্ত্রিসভা অনুমতি দিলেই বাস্তবায়ন করা হবে এটি।

নীতিমালায় চাকরিতে প্রবেশের বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ বছর। যদিও নিবন্ধনের সার্কুলারে বিষয়টি আগে উল্লেখ করা হয়নি। বিষয়টি ৩৫ বছরের ওপর বয়স যাদের, তাদেরকে চিন্তার সাগরে ফেলে দিয়েছে। তারা একটি সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় দুই বছর যাবৎ নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে পদ শূন্য রয়েছে। দ্রুত নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে পারলে শিক্ষাক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আসবে।

চলতি অর্থবছরে দেড় হাজার প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হতে পারে। এতে অনেক পদ সৃষ্টি হবে। অনেকে শিক্ষকতা পেশায় আত্মনিয়োগ করতে পারবে। দেশে প্রায় ১০ হাজার নন-এমপিও প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সব একত্রে এমপিওভুক্তির আওতায় আনা উচিত। কারণ ওইসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। একজন শিক্ষক বাজারে গেলে মাছ-দোকানি বড় মাছটি ব্যাগে তুলে দিতে চায়, কিন্তু পকেট যে শূন্য। স্বাধীন দেশে একজন শিক্ষকের মানবেতর জীবনযাপন মেনে নেয়া কষ্টকর।

নতুন নীতিমালা অনুযায়ী ইংরেজি, গণিত, ভৌতবিজ্ঞান, শারীরিক শিক্ষা, চারুকারু, ধর্ম, তথ্য ও যোগাযোগসহ কয়েকটি বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। তাছাড়া একজন সহকারী কম্পিউটার অপারেটর, একজন অফিস সহায়কের কথাও বলা হয়েছে, যা হবে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।

উল্লেখ্য, ১-১২তম শিক্ষক নিবন্ধিতদের রিটের কারণে নিয়োগ আটকে রয়েছে। অনেক জল্পনা-কল্পনার পর গত ১৪ ডিসেম্বর রিটের রায় দেন বিজ্ঞ আদালত। রায়ে বলা ছিল, রায়ের কপি বের হওয়ার পর ৯০ দিনের মধ্যে মেধাতালিকা করে নিয়োগ দিতে হবে। কিন্তু তিন মাসের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও রায়ের কপি এখনও বের হয়নি।

অন্যদিকে সর্বশেষ বিধি অনুযায়ী গ্রহণ করা হয়েছিল ত্রয়োদশ নিবন্ধন পরীক্ষা। চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পরও নিয়োগের মুখ দেখেননি ত্রয়োদশ নিবন্ধনধারীরা। নিয়োগের আশায় ত্রয়োদশ নিবন্ধনধারীরাও রিট করেছেন। ১-১২তমদের রায়ের কপি বের না হওয়ায় ত্রয়োদশ নিবন্ধনধারীদের রিটের হালে পানি পাচ্ছে না। মোটকথা, শিক্ষা মন্ত্রণালয় নীতিমালা বাস্তবায়ন করলে বাংলাদেশ শিক্ষাক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়ে যাবে। দেশ পাবে দক্ষ শিক্ষক, আগামী প্রজন্ম পাবে ডিজিটাল পরিবেশ। সব বন্ধ দুয়ার খুলে আসবে আশার আলো।

নতুন নীতিমালা দ্রুত কার্যকর করার ব্যবস্থা গ্রহণ করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নকে এগিয়ে নেয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি।

লেখক : সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি), মোহাম্মদ নগর উচ্চবিদ্যালয়, ফুলবাড়ীয়া, ময়মনসিংহ।

/এসকে/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত