ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫০ মিনিট আগে
শিরোনাম

বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে লাগবে ৬ মাস

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ২২ জানুয়ারি ২০২০, ১৪:৪২  
আপডেট :
 ২২ জানুয়ারি ২০২০, ১৪:৪৭

বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে লাগবে ৬ মাস

অবশেষে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক উৎপাদক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) ভবন ভাঙার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যান্ত্রিক পদ্ধতিতে এই ভবন ভাঙতে ৬ মাস সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

বুধবার দুপুর পৌনে ১টার দিকে কারওয়ান বাজার সংলগ্ন বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করে তিনি একথা বলেন।

গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, হাতিরঝিল প্রকল্পের মধ্যে শুধু বিজিএমইএ ভবন না, যত অবৈধ স্থাপনা আছে সবগুলো অপসারণ করা হবে।

তিনি বলেন, সুন্দর ঢাকায় অপরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা হয় ভবনটি। পরিবেশের যা জন্য বিষফোঁড়া হয়ে উঠেছে। তাই আদালতের নির্দেশে ভবনটি ভাঙা হচ্ছে।

র‍্যাংগস ভবনের মত কোন ঘটনা ঘটবে না বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে মন্ত্রী আরও জানান, আগামী ৬ মাসের মধ্যে পুরনো বিজিএমইএ ভবন অপসারণ শেষ করা হবে। পর্যায়ক্রমে হাতিরঝিলের সব অবৈধ স্থাপনা ভেঙে ফেলা হবে।

তিনি বলেন, ভবন ভাঙার পর যেসব বর্জ্য জমা হবে প্রতিষ্ঠানটি সেগুলো একটি নির্দিষ্ট স্থানে সাময়িক রাখবে। পরে সেগুলো শহরের বাইরে ফেলে দেওয়া হবে।

জানা গেছে, ভবন ভাঙার কার্যক্রম পরিচালনা এবং দুর্ঘটনা মোকাবিলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে ২টি টিম গঠন করা হয়েছে। যারা বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কাজ সার্বক্ষণিক মনিটরিং করবেন। ভবনটি ভাঙার কাজে নিয়োজিত আছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজ।

বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে যে সব যন্ত্রপাতি ব্যবহার হবে তার মধ্যে রয়েছে- এক্সক্যাভেটর, বুলডোজার, কংক্রিট জ্যাকহামার, দীর্ঘ ও উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ক্রেন, ড্রাম ট্র্যাক, ফর্ক লিফট, ওয়েল্ডিং মেশিন, বিভিন্ন প্রকার কাটিং মেশিন, বিভিন্ন প্রকার হ্যান্ড টুলস এবং গ্যাস কাটার।

বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কার্যক্রম পরিচালনা এবং দুর্ঘটনা মোকাবিলায় ২টি টিমের মধ্যে একটি টিম হলো টপ সুপারভিশন কমিটি। এ টিমে রয়েছে- রাজউক, বুয়েট, ফায়ার ব্রিগেড, প্রকল্প কর্মকর্তা (সেনাবাহিনী, ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড), অথরাইজড অফিসার (রাজউক), হাতিরঝিল প্রকল্প ব্যবস্থাপক এবং হাতিরঝিল প্রকল্প পরিচালক।

এছাড়া সার্বক্ষণিক তদারকি কমিটিতে রয়েছে- হাতিরঝিল প্রকল্প পরিচালক, হাতিরঝিল প্রকল্প কর্মকর্তা (সেনাবাহিনী, ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড) এবং হাতিরঝিল প্রকল্প ব্যবস্থাপক।

এর আগে বিজিএমইএ ভবন ভাঙা নিয়ে বেশ কয়েকবার জটিলতা দেখা দেয়। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ভবনটি ভাঙার দরপত্র আহ্বানের পর সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ভবনটি ভাঙতে কাজ পায় ‘সালাম অ্যান্ড ব্রাদার্স’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। তাদের দরপত্র ছিল ১ কোটি ৭০ লাখ টাকার। সে অনুযায়ী তাদের কার্যাদেশও দেয়া হয়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ভবন ভাঙার কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ায় সালাম অ্যান্ড ব্রাদার্স। শেষ মুহূর্তে সরে যাওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে ১০ শতাংশ হারে টাকা কেটে নিয়েছে রাজউক।

তারা এ ভবন ভাঙার কার্যক্রম থেকে সরে যাওয়ার পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠান ‘ফোর স্টার’ গ্রুপকে কাজ দেয় রাজউক। তাদের দরপত্রে টাকার পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৫৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা। তবে এখন তারা ১ কোটি দুই লাখ ৭০ হাজার টাকায় ভবনটি ভাঙার কাজ শুরু করছে।

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে আদালতের এক রায়ে এটি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়। পরে আপিল বিভাগেও তা বহাল থাকে। এরপর ভবন ভাঙতে কয়েক দফা সময় নিয়ে প্রায় ৭ বছর পার করে বিজিএমইএ।

সবশেষ আদালতের দেয়া ৭ মাস সময়সীমা গত বছর ১২ এপ্রিল শেষ হয়। এরপর ১৫ এপ্রিল বিজিএমইএ ভবনের মালামাল সরিয়ে নিতে ১ দিন সময় বেঁধে দেয় রাজউক। পরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের মালামাল সরিয়ে নিলে বিজিএমএইএ ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয় রাজউক।

আরএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত