ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

বিরোধপূর্ণ খাস জলাশয়কে মৎস অভয়াশ্রম ঘোষণা

  পাবনা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২৩:৫৬  
আপডেট :
 ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০২

বিরোধপূর্ণ খাস জলাশয়কে মৎস অভয়াশ্রম ঘোষণা

পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার পরমানন্দপুর গ্রামের বিরোধপূর্ণ খাস জলাশয়কে মৎস অভয়াশ্রম ঘোষণা করলেন জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ। শনিবার ভাঙ্গুড়া উপজেলার খান মরিচ ইউনিয়নের পরমানন্দপুর গ্রামে গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে এ ঘোষণা দেন তিনি।

এ সময় জেলা প্রশাসক ওই পুকুরে মৎস অভয়াশ্রমের সাইবোর্ড টানানোর ব্যবস্থা করেন। এতে সরকারি খাস জলাশয় রাজস্বখাতে ফেরার পাশাপাশি গ্রামবাসীর মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ ও রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষের আশঙ্কা কেটে গেলো বলে জানান স্থানীয়রা।

ভাঙ্গুড়া উপজেলার খান মরিচ ইউনিয়ন ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, এই ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের পরমানন্দপুর গ্রামের প্রায় সাড়ে ১৫ বিঘা খাস জমি রয়েছে। যা প্রায় ২০ বছর আগে ১৮ জন ভূমিহীনের মধ্যে বন্দোবস্ত করে দেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক। অন্যান্য ভূমিহীন ব্যক্তিরা বন্দোবস্তকৃত ভূমি ভোগ দখল করলেও প্রায় সাড়ে তিন বিঘা জমি নিয়ে দু’গ্রুপের একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে স্থানীয় এবং রাজনৈতিক মহল মীমাংসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। ফলে গত চার বছর ধরে ওই জলাশয়ে কেউই দখলে যেতে পারেন নি।

সম্প্রতি দুই পক্ষের মধ্যে আবারও ওই জলাশয়ে মাছ ধরা নিয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে এমন খবর পেয়ে শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদ স্থানীয় ভূমি কর্মকর্তার সহায়তায় উপস্থিত থেকে জলাশয়টিকে মৎস অভয়াশ্রম ঘোষণা করেন। জেলা প্রশাসকের উপস্থিতে এসময় দু'পক্ষ জলাশয়টিতে মাছ ধরে।

এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোকলেছুর রহমান, ভাঙ্গুড়া উপজেলা চেয়ারম্যান বাকী বিল্লাহ, ইউএনও সৈয়দ আশরাফুজ্জামান, ফরিদপুর ইউএনও আহম্মদ আলী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম হাফিজ রঞ্জু, আজিদা পারভীন পাখি, খান মরিচ ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুর রহমান আসাদ, উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

ভূমিহীন জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা গরীব বলে আমরা ন্যায় বিচার পাই নি। তাই আমরা একাধিকবার মার খেলেও আমাদের পাশে কেউ দাঁড়ায় নি। আজ আবার সরকার কর্তৃক আমাদের দেয়া বন্দোবস্ত ভূমি আবার ফিরিয়ে নেয়া হচ্ছে।

অপর পক্ষের নয়ন হোসেন বলেন, ওই ভূমি ডিএস রেকর্ডে নদী ছিল এবং এসএ রেকর্ডে নালা বলে উল্লেখ আছে। স্থানীয় জনসাধারণের পানি নিষ্কাশনের জন্য বন্দোবস্ত বহির্ভূত লেখা রয়েছে। তাই আমরা বন্দোবস্ত বাতিলের দাবি করেছি। সেই দাবি আজ বাস্তবায়ন হল।

ভাঙ্গুড়ার উপজলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ আশরাফুজ্জামান বলেন, জলাশয় তিন বছরের জন্য বন্দোবস্ত দেয়ার বিধান আছে। যার মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। তাই সরকারি সম্পত্তি সরকার তার খতিয়ানে নিতে পারেন।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ বলেন, বর্তমানে জলাশয়-খালবিলে পানি সেচে মাছ মারা হচ্ছে, বিষ প্রয়োগেও মাছ মারা হচ্ছে। ফলে মা মাছ তৈরি হচ্ছে না। তাই মা মাছের জন্য মাছের অভয়াশ্রম তৈরি করা দরকার। তাই দীর্ঘদিনের বিরোধপূর্ণ সরকারি জলায়শকে মাছের অভয়াশ্রম তৈরি করা হলো। এতে করে এখানে একদিকে যেমন মা মাছ তৈরি হবে অন্যদিকে জলাশয়টি নিয়ে বিরোধ বন্ধ হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/আর

  • সর্বশেষ
  • পঠিত