ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

একযুগের হাঁপানি রোগীর মৃত্যু, ১০ বাড়ি লকডাউন

  শেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২০, ১৫:২৮

একযুগের হাঁপানি রোগীর মৃত্যু, ১০ বাড়ি লকডাউন

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে শ্বাসকষ্ট জনিত কারণে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু করোনাভাইরাস সংক্রমনের কারণে হয়েছে বলে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এতে স্থানীয় প্রশাসন মৃত ব্যক্তির বাড়িসহ আশপাশের ১০টি বাড়ি লকডাউন করেছে।

রোববার রাত সাড়ে নয়টার দিকে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়।

মৃত ব্যক্তি আব্দুল আওয়াল ওরফে আওয়াল পাগলা (৫৮)। তার বাড়ি উপজেলার দক্ষিণ পলাশিকুড়া গ্রামে। তিনি পেশায় পাইলিং শ্রমিক ছিলেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সোমবার সকালে মৃত ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পাঠানো হবে। সকালে এ রিপোর্ট লেখার সময় স্বাস্থ্য বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতের শরীর থেকে করোনায় আক্রান্তের আলামত সংগ্রহ করছিলেন।

মৃতের স্বজন ও প্রতিবেশিরা জানান, আব্দুল আওয়াল অন্তত এক যুগ ধরে শ্বাসকষ্ট (হাঁপানি) জনিত রোগে ভুগছিলেন। বর্তমানে বাগেরহাট জেলার রামপাল খয়লারহাট এলাকার পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ন স্থানে একটি কনস্ট্রাকশন কাজের পাইলিং মিস্ত্রি হিসেবে শ্রমিকের কাজ করছিলেন। করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশে অঘোষিত লকডাউন চলায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে তিনি এবং সঙ্গীয় অন্যান্য শ্রমিকরা গত বুধবার (২৬ মার্চ) সেখান থেকে রওয়ানা হয়ে বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) বিকেলে নিজ বাড়ি পলাশিকুড়ায় ফিরেন। এরইমধ্যে রবিবার (২৯ মার্চ) রাত সাড়ে নয়টার দিকে তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায় এবং তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

মৃতের ভাতিজা জাকির হোসেন বলেন, চাচা দীর্ঘদিন যাবত শ্বাসকষ্টের রোগী ছিলেন। তার শরীরে কোন জ্বর, গলাব্যথা বা পাতলা পায়খানা এমন কোন লক্ষণ ছিল না। রবিবার রাতে শ্বাসকষ্ট বেড়ে গিয়ে তিনি মারা যান।

আওয়ালের সহকর্মী একই গ্রামের সাইফুল ইসলাম বলেন, তার (আওয়াল) শরীরে করোনাভাইরাসের কোন লক্ষণ ছিল না। আমাদের সাথেই কাজ করতেন। আমরা সবাই এক সাথে সুস্থ অবস্থায় বৃহস্পতিবার বাড়ি ফিরেছি। তিনি মূলত আগে থেকেই শ্বাসকষ্টের রোগী ছিলেন।

প্রতিবেশী আহের উদ্দিন বলেন, বহুদিন যাবত আওয়াল হাঁপানী রোগে আক্রান্ত। বৃহস্পতিবার বিকেলেও আমার বাড়ি থেকে ঘুরে গেছে। রাতে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট বেড়ে গিয়ে সে মারা যায়।

অপর প্রতিবেশী অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য রবিউল আলম ইউসুফ বলেন, আওয়াল ভাই দীর্ঘদিন যাবত হাঁপানী রোগে আক্রান্ত। তবে গত ৩ বছর যাবত তার শ্বাসকষ্ট আরও বেড়ে গিয়েছিল। এলাকায় থাকলে বেশিরভাগ সময় আমার বাড়িতেই কাটত। গতকাল শ্বাসকষ্টেই তিনি মারা গেছেন। করোনার কোন লক্ষণ তার শরীরে ছিল না। তবে এ ঘটনায় জনমনে করোনা আতঙ্ক বিরাজ করছে।

মৃত ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন কিনা তা নিশ্চিত হতে নমুনা সংগ্রহ করে আইইসিডিসিআরে পাঠানো হবে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান।

তিনি বলেন, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে কথা বলে আমাদের ব্যবস্থাপনায় মৃতের দাফনের ব্যবস্থা করেছি। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে ছড়িয়ে পড়েছে। এ কারণে জনসাধারণকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/আর

  • সর্বশেষ
  • পঠিত