ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১২ মিনিট আগে
শিরোনাম

আম্পান: ভোরে আসছে মহাবিপদ সংকেত

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৯ মে ২০২০, ২২:৫৮  
আপডেট :
 ২০ মে ২০২০, ০৩:২৮

আম্পান: ভোরে আসছে মহাবিপদ সংকেত
ফাইল ছবি

বাংলাদেশের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসা সুপার সাইক্লোন আম্পানের কারণে বুধবার ভোর ৬টা থেকে মহাবিপদ সংকেত দেখানো হবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।

প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, ২০ মে (বুধবার) ভোর ৬টায় বাংলাদেশ উপকূল দিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি প্রবেশ করবে। ওই সময়ে আর কাউকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া সম্ভব হবে না।

তিনি বলেন, আমরা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। কোন জেলায় কতজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে তার জন্য কন্ট্রোল রুম থেকে জানছি। রাত ৮টার মধ্যে সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা সম্ভব হবে বলে আশা করেন প্রতিমন্ত্রী।

মঙ্গলবার দুপরের পর থেকেই আম্পানের প্রভাবে উপকূলে দমকা ও ঝড়ো হাওয়া বইছে, গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিও হচ্ছে কিছু জায়গায়। সমূদ্র উত্তাল হয়ে উঠতে শুরু করেছে। দূর্যোগ মোকাবিলায় উপকূলীয় এলাকার মানুষদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। করোনা সতর্কতায় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার প্রতি আশ্রয় কেন্দ্রে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগর বিক্ষুব্ধ থাকায় আগের মতই চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর এবং মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহওয়ার বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি ঘণ্টায় ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার বেগের বাতাসের শক্তি নিয়েযখন উপকূল অতিক্রম করবে, তখন উপকূলীয় দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ১০ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে। সুপার সাইক্লোনে রূপ নেয়া ঝড়টি আঘাত হানতে পারে শেষ রাতে কিংবা বুধবার সকালে।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, অতিসম্প্রতি দেশে আঘাত হানা ঘূণিঝড়গুলোর তুলনায় বেশি শক্তিশালী মনে হচ্ছে আমফান। শক্তি ও গতি-প্রকৃতি পর্যালোচনা করে এ সাইক্লোনকে সিডরের মতো শক্তিশালী বলে মনে করছেন তারা। তবে সুন্দরবন উপকূলে আঘাত হানলে ক্ষয়ক্ষতি হবে বলেও ধারণা তাদের।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রহমান জানান, সুপার সাইক্লোন আম্পান আরও উত্তর-উত্তর পূর্ব দিকে এগিয়ে এসে সামান্য দুর্বল হয়ে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের আকারে পশ্চিম মধ্যবঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।

মঙ্গলবার বেলা ৩টায় আম্পান ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে; কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে; মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৮৫ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছিল।

বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস বলছে, এ ঝড় আরও উত্তর-উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে মঙ্গলবার শেষরাত থেকে বুধবার বিকাল/সন্ধ্যার মধ্যে খুলনা ও চট্টগ্রাম উপকূলের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

ভারতের আবহওয়া অফিসের পূর্বাভাস বলছে, উপকূলে পৌঁছানোর আগে সামান্য কমে আসতে পারে আম্পানের শক্তি। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের আকারে বুধবার বিকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের দীঘা এবং বাংলাদেশের হাতিয়ার মাঝামাঝি এলাকা দিয়ে এ ঝড় উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত