ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

নেশার টাকার জন্য নিজের সন্তানদের জিম্মি করতেন

  ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১১ অক্টোবর ২০২০, ০২:৫২  
আপডেট :
 ১১ অক্টোবর ২০২০, ০২:৫৭

নেশার টাকার জন্য নিজের সন্তানদের জিম্মি করতেন

নেশার টাকার জন্য ছুরি ধরে নিজের সন্তানদেরও জিম্মি করতেন গ্রেপ্তার যুব মহিলা লীগের সাবেক নেত্রী তানিয়া খন্দকার (৩৩)। এরপর বাধ্য হয়ে তার মা রিনা বেগম তাকে টাকা দিতেন। তানিয়ার বড় বোন তাসলিমা আক্তার এসব কথা জানান।

তার মায়ের করা এক মামলায় শুক্রবার (৯ অক্টোবর) তানিয়া খন্দকারকে গ্রেপ্তার করে সদর মডেল থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।

তানিয়া খন্দকার সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের বিল কেন্দুয়াইয়ের প্রবাসী জহিরুল হকের মেয়ে। রিনা বেগম তার মামলায় নিজের মেয়ে তানিয়াকে চোর, মাদকাসক্ত, বেহাইয়া ও উচ্চ বিলাসী হয়ে বেপরোয়া চলাফেরার কথা উল্লেখ করেন।

এ বিষয়ে তানিয়ার বড় বোন তাসলিমা আক্তার বলেন, আমরা চার বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে তানিয়া তৃতীয়। বাবা ও একমাত্র ভাই প্রবাসে থাকেন দীর্ঘদিন যাবত। ২০০৪ সালে পারিবারিকভাবে তানিয়াকে জেলার বিজয়নগরে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের পর তানিয়া তিন মেয়ে ও এক ছেলে সন্তানের জন্ম দেয়। এরই মাঝে তানিয়া বেপরোয়া হয়ে উঠে। শ্বশুর বাড়ি সীমান্তবর্তী উপজেলা হওয়ায় মাদকের সাথে নিজেকে জড়িয়ে ফেলে। ফলে স্বামী, শ্বশুর ও শ্বাশুড়ীর সাথে খারাপ আচরণ শুরু হলে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে স্বামীর সাথে বিচ্ছেদ হলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেয় তানিয়া। বাবার বাড়িতে আশ্র‍য় নিয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে সে।

তিনি জানান, বাবার বাড়িতে আসার পর মায়ের কাছে ৪ সন্তান রেখে খারাপ প্রকৃতির লোকজনের সাথে মিশে বেহায়াপনা ও উচ্চ বিলাসী চলাফেরা শুরু করেন তানিয়া। যুক্ত হন ব্রাহ্মণবাড়িয়া যুব মহিলা লীগের রাজনীতির সাথে। তবে তার বেহায়াপনার কারণে জেলা নেতৃবৃন্দ তাকে বেশির ভাগ সময় দূরেই রেখেছে। কিন্তু দিনদিন বেড়েই চলে তার বেহায়াপনা। মা রিনা বেগম তাকে বাধা দিলেও কোন কাজ হয়নি।

তিনি তার ছোট বোন সম্পর্কে বলেন, নেশায় আসক্ত হয়ে পরিবারকে না জানিয়ে অনেক সময় রাতেও ফেরেনি তানিয়া। বাবার বাড়ির দ্বিতীয় তলা তার সাঙ্গোপাঙ্গদের নিয়ে দখল করে। সেখানে বসাত মাদকের আসর। বাইরে থেকে অনেক পুরুষ মানুষ আসলে, রাত ১২টায় তারা যেতেন। আইন অনুযায়ী, তার বিয়ে হয়েছে ২টি, তবে বিয়ে ছাড়া তার স্বামী কয়টি আছে তা গুনে শেষ করতে পারব না।

তাসলিমা বলেন, টাকা না থাকলে নেশার টাকার জন্য সে তার সন্তানদেরও জিম্মি করতো। তাদের গলায় ছুরি অথবা কখনো তাদের গলা চেপে ধরে আমার মায়ের কাছে টাকা দাবি করতো। এই অবস্থা দেখে মা টাকা দিয়ে দিতো। সর্বশেষ ঘটনার দিনও সে তার বড় মেয়ের উপর অত্যাচার করে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সোহেল রানা বলেন, তানিয়ার মা বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা দায়ের করলে আদালত সদর মডেল থানাকে মামলাটি নথিভুক্ত করতে বলেন। সদর মডেল থানায় মামলাটি ৮ অক্টোবর নথিভুক্ত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার (৯ অক্টোবর) তানিয়াকে বিল কেন্দুয়াইয়ায় থেকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে পাঠালে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।

আরও পড়ুন- মায়ের মামলায় সাবেক যুব মহিলা লীগ নেত্রী গ্রেপ্তার

বাংলাদেশ জার্নাল/আর

  • সর্বশেষ
  • পঠিত