ঢাকা, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১২ মিনিট আগে
শিরোনাম

কলারোয়ায় শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার বিচারকাজ শুরু

  শাকিলা জুঁই, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৪ নভেম্বর ২০২০, ১৬:০৩  
আপডেট :
 ০৪ নভেম্বর ২০২০, ১৬:৩০

প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহরে হামলা মামলার বিচারকাজ শুরু

১৮ বছর পর সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল আদালতে শুরু হচ্ছে সাবেক বিরোধীদলীয় নেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা ও হত্যাচেষ্টা মামলার বিচার কার্যক্রম।

বুধবার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ূন কবিরের আদালতে সাক্ষ্য দেবেন মামলার বাদী মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেমউদ্দীন ও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী প্রবীণ সাংবাদিক অধ্যাপক আবু আহমেদ। আদালতের পাবলিক প্রসিকিটর অ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

৩০ জন সাক্ষীর মধ্যে ২০১৭ সালে ৯ জন সাক্ষ্য প্রদান করার পর আসামিপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত মামলাটির বিচার কার্যক্রম স্থগিতের আদেশ দেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২২ অক্টোবর হাইকোর্টের বিচারক মোস্তফা জামান ও কামরুল হোসেন মোল্লার আদালত পুনরায় সাতক্ষীরার নিন্ম আদালতে আলোচিত এ মামলাটি তিন মাসের মধ্যে বিচার কার্যক্রম শেষ করতে নির্দেশ দেন।

হাইকোর্টের আদেশের পর আজই শুরু হচ্ছে ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরার কলারোয়ায় শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা ও হত্যাচেষ্টা মামলার বিচারকাজ।

প্রসঙ্গত, তৎকালীন সময় বিএনপি-যুবদল ক্যাডাররা সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হিজলদি গ্রামে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী মাহফুজা বেগমের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নির্যাতিত মাহফুজাকে দেখতে ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সকালে শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা যান।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখে সড়কপথে ঢাকায় ফিরছিলেন শেখ হাসিনা। পথে বেলা ১১টায় কলারোয়া বিএনপির অফিসের সামনের সড়কে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা চালায় তৎকালীন ক্ষমতাসিন বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের ক্যাডাররা। হামলাকারীরা শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলি ও বোমা বিস্ফরণ করে। সেদিন অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান শেখ হাসিনা।

এ ঘটনায় গাড়িবহরে থাকা ১৫ থেকে ২০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ সময় আহত হন শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী আওয়ামী লীগের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাসহ সাতক্ষীরা ও কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্ধশত নেতাকর্মী। সাংবাদিকরা ছবি তুলতে গেলে তাদেরও বেধড়ক মারপিট করা হয়। সাংবাদিকরা আত্মরক্ষার্থে সড়কের পাশেই কলারোয়া থানায় আশ্রয় নেয়। সেখানেই সাংবাদিকদের ওপর হামলা করে বিএনপি ক্যাডাররা।

এসব ঘটনায় তৎকালীন কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেমউদ্দীন বাদী হয়ে কলারোয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। কিন্ত তৎকালীন ক্ষমতাসিন বিএনপির প্রভাবে থানায় মামলাটি রেকর্ড করেনি পুলিশ।

পরবর্তীতে ১২ বছর পর ২০১৪ সালে ১৫ অক্টোবার সাতক্ষীরা আদলতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। আদালত কলারোয়া থানায় মামলাটি রেকর্ড করার আদেশ দেন। মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১৭ মে বিএনপির তৎকালীন সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ২৭ জনের নামে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা, বিস্ফোরক দ্রব্য ও অস্ত্র আইনে তিনটি পার্টে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ পরিদর্শক শফিকুর রহমান।

সাতক্ষীরা চিফ জুডিশিয়াল আদলতে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলাটি বিচারাধীন থাকা অবস্থায় ৯ জন সাক্ষী ইতিমধ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন। কিন্ত ২০১৭ সালের ৯ আগষ্ট আসামিরা হাইকোর্টে মামলাটি স্থগিত চেয়ে আবেদন করে। হাইকোর্ট মামলাটির স্থগীতাদেশ দেয়ায় সাতক্ষীরার নিন্ম আদালতে গত তিন বছর বন্ধ হয়ে ছিল মামলাটির বিচারকাজ।

মামলাটি দীর্ঘদিনেও শেষ না হওয়ায় বাদী কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোসলেমউদ্দীন সাতক্ষীরা জজ কোর্টের সাবেক পিপিকে দোষারোপ করেন।

তবে নতুন করে মামলার কার্যক্রম শুরু হওয়ায় তিনি বলেন, মৃত্যুর আগে হয়ত আসামিদের শাস্তি দেখে যেতে পারবো।

সাতক্ষীরা জজকোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ জানান, দীর্ঘদিন পর শেখ হাসিনার ওপর হামলা ও হত্যাচেষ্টা মামলাটি পুনরায় নিন্ম আদালতে তিন মাসের মধ্যে শেষ করতে আদেশ দেন। এরপর আজ বুধবার এ মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। মামলার বাদী মোসলেম উদ্দিন ও সাক্ষী অধ্যাপক আবু আহমেদ আজ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমাইন কবিরের আদলতে সাক্ষ্য দেবেন। সাক্ষীদের আদালতে হাজির হতে ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত