ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

নানা সঙ্কটে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য খালাসে বিলম্ব

  মনির ফয়সাল, চট্রগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২১, ২০:৫০

নানা সঙ্কটে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য খালাসে বিলম্ব
ফাইল ছবি। চট্রগ্রাম বন্দর

বিশেষ ব্যবস্থায় চট্টগ্রাম বন্দর খোলা রাখা হলেও 'লকডাউন'র প্রভাবে কমে গেছে পণ্য খালাস কার্যক্রম। চাল, ডাল, তেল, গম, ছোলা, খেজুরসহ রমজানের পণ্য নিয়ে আসা কয়েক লাখ টন পণ্য পড়ে আছে চট্টগ্রাম বন্দরে।

চট্টগ্রাম বন্দর পণ্য সরবরাহ করতে প্রস্তুত থাকলেও পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়া, পাইকারি বাজারগুলোতে বিক্রি কমে যাওয়া, পরিবহন সঙ্কট ও শ্রমিক সঙ্কটের কারণে কাঙ্ক্ষিত হারে পণ্য খালাস করছেন না ব্যবসায়ীরা। ফলে বন্দর সীমায় এখন বিভিন্ন ধরণের পণ্য নিয়ে ভাসছে শতাধিক জাহাজ।

জানা যায়, রমজান সামনে রেখে গত ১৫ দিনে বিপুল সংখ্যক জাহাজ এসেছে চট্টগ্রাম বন্দরে। বন্দরের বহির্নোঙরে ১ এপ্রিল আসে ৪৫টি জাহাজ। এর মধ্যে দশটি জাহাজে প্রায় পাঁচ লাখ টন ভোগ্যপণ্য রয়েছে। ১ এপ্রিল বন্দরে এসে এখনও পণ্য খালাস শেষ করতে পারেনি দশটি জাহাজ। এর মধ্যে চিনি তৈরির কাঁচামাল আছে দুটি জাহাজে।

১ এপ্রিল আসা একটি জাহাজে আছে ৫৫ হাজার ৫০০ টন চিনি। একইদিন আসা আরেকটি জাহাজে আছে ৫৪ হাজার ১৪ টন চিনি। বন্দরে এখন ভোজ্যতেলের জাহাজ আছে তিনটি। ১ এপ্রিল আসা এ তিনটি জাহাজে ভোজ্যতেল আছে প্রায় দেড় লাখ টন। ১ এপ্রিল চট্টগ্রাম বন্দরে ৪৫টি জাহাজ এলেও ২ এপ্রিল এসেছে ১৪টি জাহাজ। ৩, ৪ ও ৫ এপ্রিল এসেছে যথাক্রমে তিনটি, আটটি ও দুটি। আগামী ১৫ দিনে আরও অর্ধশত জাহাজ আসবে চট্টগ্রাম বন্দরে।

এছাড়া গত ১৮ মার্চ ৫৪ হাজার ১৪ টন ও ৬০ হাজার ৮০০ টন চিনি তৈরির কাঁচামাল নিয়ে এসেছে দুটি জাহাজ। ৬৪ হাজার ৪৩০ টন চিনি তৈরির কাঁচামাল নিয়ে আরেকটি জাহাজ এসেছে ২৪ মার্চ। ৫৯ হাজার ৯২৫ টন মটরবোঝাই একটি জাহাজ আসে ২১ মার্চ। এর আগে জানুয়ারিতে ১৩ হাজার ২২৯ টন, ফেব্রুয়ারিতে ১৪ হাজার ৭৪৬ টন ও মার্চে ১৫ হাজার ৮৬০ টন খেজুর আসে।

চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য খালাস করতে ব্যবসায়ীদের কোনো বাধা নেই। কিন্তু লকডাউনের কারণে সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেছে। রমজানের আগে পণ্য বেচাকেনার হিড়িক থাকে পাইকারি বাজারগুলো। বিধিনিষেধের কারণে সেখানেও বেচাকেনা সেভাবে হচ্ছে না।

এছাড়া পরিবহন ব্যয় কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় এবং গুদামে পণ্য নিতে শ্রমিক না পাওয়ায় খালাস প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হলে পণ্য খালাসের পরিমাণও বাড়বে বলেও জানান তিনি।

২০১৯ সালে বিশ্বে করোনা ছিলো না। আর ২০১৯ সালের মার্চে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে চাল, ডাল, গম, তেল, ছোলা, খেজুর ও চিনি তৈরির কাঁচামালসহ ভোগ্যপণ্য আসে ১৬ লাখ ৮১ হাজার টন। ২০২০ সালে মার্চ মাস পর্যন্ত ভোগ্যপণ্য আসে ১৫ লাখ ৮৯ হাজার টন। এবারও অব্যাহত আছে আমদানির এ ধারা। এ বছরের মাস পর্যন্ত দেশে পৌঁছে গেছে প্রায় ১২ লাখ টন পণ্য।

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ২০১৯ সালের মার্চে ভোজ্যতেল এসেছে ২ লাখ ৩২ হাজার টন। ২০২০ সালে মার্চে এসেছে ২ লাখ ৫০ হাজার টন। চলতি বছরের মার্চ মাসে মাসের প্রথম ১৫ দিনে ভোজ্যতেল আমদানি হয়েছে অর্ধেকেরও বেশি। ২০১৯ সালের মার্চে চিনি তৈরির কাঁচামাল ৩ লাখ ৫৯ হাজার টন এলেও গত বছরের মার্চ মাসে এসেছে ৪ লাখ ৫২ হাজার টন। এ বছরের মার্চ মাসের ১৫ দিনেই চিনি তৈরির কাঁচামাল এসেছে প্রায় আড়াই লাখ টন। ২০১৯ সালের মার্চে এক লাখ ২ হাজার টন মটর এসেছে দেশে। গত বছর মার্চ মাসে মটর এসেছে ৮৯ হাজার ৮০০ টন। তবে এ বছর মার্চ মাস পর্যন্ত মটর এসেছে প্রায় ৩০ হাজার টন।

চট্টগ্রাম বন্দরের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) জাফর আলম বলেন, লকডাউনের মধ্যেও চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম পুরোদমে চলছে। রমজানের পণ্য খালাসে আমরা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছি। ব্যবসায়ীরা যাতে পণ্য খালাসে প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি না হয়, সেজন্য আমরা সচেষ্ট আছি। কিন্তু পরিবহন সঙ্কটের কারণে খালাস কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত