ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

কেন এতো গরম, কখন কমবে?

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৪ মে ২০২১, ২১:৪১  
আপডেট :
 ২৪ মে ২০২১, ২২:২৮

কেন এতো গরম, কখন কমবে?
ছবি সংগৃহীত

দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারী ধরণে তাপপ্রবাহ বয়ে গেলেও অসহনীয় ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে। এতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিশেষ করে শহরের বসবাসরত মানুষ হাঁসফাঁস করছে। কেন এমন গরম?

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, সাগরের ঘুর্ণিঝড় ‘ইয়াশের’ প্রভাবে বাতাসে আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়া, বাতাসের গতিবেগ কম হওয়া, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার মধ্যে পার্থক্য কম হওয়া, দীর্ঘ সময় ধরে সূর্যের তাপ ভূ-পৃষ্ঠে পড়ার কারণে যতটা গরম তার চেয়ে বেশি অনুভূত হচ্ছে।

সোমবার রাতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ‘সাগরে ঘুর্ণিঝড় তৈরি হওয়ার কারণে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় অসহনীয় ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে। এছাড়া সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার মধ্যে একেবারেই ফাঁক না থাকায় গরম বেশি হচ্ছে। অনেক সময় ধরে সূর্যের তাপ ভূ-পৃষ্ঠে পড়ায় দেখা যাচ্ছে দিনের তাপমাত্রা রাতে কমতে না কমতে আবারো সকালে সেখান থেকে তাপ বেড়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে বাতাসে গতিবেগ একেবারে নেই। আবার আকাশে মেঘের সৃষ্টি হচ্ছে না, বৃষ্টিও হচ্ছে না। এসব নানা কারণে অসহনীয় গরম অনুভূত হচ্ছে।

গত কয়েকদিন ধরে সারা দেশে অসহনীয় গরম অনুভূত হলেও আগামীকাল মঙ্গলবার তা কমে যাবে বলে সুখবর জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, ‘আজ রাতে দেশের কিছু কিছু জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। এতে আজকের তাপমাত্রা থেকে আগামীকাল ৩ ডিগ্রি কমে যাবে। আর পরশু বুধবার একেবারে কমে কমে যাবে। তখন ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে সারাদেশে বৃষ্টি হবে।’

সোমবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে দেশের সর্বোচ্চ ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকালে বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৭৬% এবং সন্ধ্য ছিল ৬১ %।

সোমবার আবহাওয়াবিদ খন্দকার হাফিজুর রহমানের স্বাক্ষরিত আবহাওয়ার পুর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অনেক জায়গা থেকে প্রশমিত হতে পারে।

পূর্বাভাসে আরো বলা হয়েছে, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে বিচ্ছিন্নভাবে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরণের ভারী থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

ঘুর্ণিঝড়ের পরিস্থিতি

সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে আবহাওয়া পুর্বাভাসে বলা হয়েছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় নিম্নচাপটি ঘণীভূত হয়ে প্রথমে গভীর নিম্নচাপ এবং পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াশ’ এ পরিণত হয়ে সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় একই এলাকায় অবস্থান করছে। অনুকূল আবহাওয়া পরিস্থিতির কারণে ঘূর্ণিঝড়টি আরো ঘণীভূত হয়ে উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এটি ২৬ মে ভোর নাগাদ উত্তর-উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ-খুলনা উপকূলের নিকট উত্তর-পশ্চিবম বঙ্গোপসাগরে পৌঁছাতে পারে।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদের স্বাক্ষরিত আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দ থেকে ৫৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৫৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে।

ঘুর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটার এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘুর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে প্রবেশের সময় বাতাসের গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার, যা ১৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।’

এদিকে আবহাওয়া অফিস দেশের চার সমুদ্র বন্দরকে (চট্টগ্রাম, পায়রা, কক্সবাজার ও মোংলা ) ২ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

আরো পড়ুন

গরম-যানজটে অতিষ্ঠ মানুষ

তাপমাত্রা কম থাকলেও, থাকবে ভ্যাপসা গরম

গরম পানি ব্যবহারে ভয়াবহ বিপদ

বাংলাদেশ জার্নাল/এমআর/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত