মিনুকে জেল খাটানো সাজাপ্রাপ্ত আসামি কুলসুম গ্রেপ্তার
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২১, ১২:৩৯ আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২১, ২০:২৭
চট্টগ্রামে হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি কুলসুম আক্তারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। যার কারণে প্রায় তিন বছর ধরে বিনা অপরাধে সাজা খাটতে হয় মিনু আক্তারকে। তবে জামিন পেয়ে গত ২৮ জুন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় মিনু।
হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি থেকে কুলসুম বেশি আলোচিত ছিল তার হয়ে মিনু আক্তারকে জেল খাটানো নিয়ে।
বৃহস্পতিবার ভোরে নগরের পতেঙ্গা থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি কুলসুমের লোহাগাড়া উপজেলার গৌরস্থান মাঝের পাড়া আহাম্মদ মিয়ার বাড়ির আনু মিয়ার মেয়ে। তার বর্তমান সে নগরীর কোতোয়ালী থানাধীন রহমতগঞ্জ সাঈদ ডাক্তারের ভাড়া বাসায় থাকেন।
ওসি নেজাম উদ্দিনবলেন,বৃহস্পতিবার ভোরে নগরের পতেঙ্গা থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি কুলসুম আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে বলে জানান তিনি।
আদালত সূত্রে জানা যায়, মোবাইলে কথা বলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম নগরীর রহমতগঞ্জের একটি বাসায় ২০০৬ সালের জুলাইয়ে গলা টিপে হত্যা করা হয় গার্মেন্টসকর্মী কোহিনূর আক্তারকে। এরপর রহমতগঞ্জে একটি গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয় সেই মরদেহ। কোহিনুর আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেন গার্মেন্টসকর্মী কুলসুম আক্তার।
তদন্তে বেরিয়ে আসে কোহিনুরকে শ্বাসরোধে হত্যা করে আত্মহত্যা হিসেবে প্রচারের জন্য গাছে ঝুলিয়ে রাখেন কুলসুম। ২০০৭ সালের ২৬ অক্টোবর কুলসুমকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এক বছর তিন মাস পর তিনি জামিনে মুক্তি পান।
২০১৭ সালে মামলার রায় ঘোষণা করেন তখনকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক নুরুল ইসলাম। তাতে কুলসুমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। সেসময় কুলসুম পলাতক ছিলেন।
পরে আইনজীবী নাছির উদ্দীনের মাধ্যমে ২০১৮ সালের জুনে কুলসুম আত্মসমর্পণ করতে চান। আত্মসমর্পণের দিনই মিনুকে কুলসুম হিসেবে সাজিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। তখন থেকেই কারাগারে আছেন মিনু। নামের মিল না থাকার পরও কুলসুম আক্তারের বদলে মিনু চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন দুই বছর নয় মাসের বেশি সময় ধরে।
কোনো কিছুর মিল না থাকায় একজনের স্থলে আরেকজন জেল খাটার বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. শফিকুল ইসলাম খান। বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
বাংলাদেশ জার্নাল/এমএ