ঢাকা, সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

দক্ষিণাঞ্চলের স্বপ্নের ‘বেকুটিয়া সেতু’ চালু আগামী বছর

  পারভেজ মৃধা, পিরোজপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:৩২  
আপডেট :
 ০১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৬:৩৪

দক্ষিণাঞ্চলের স্বপ্নের ‘বেকুটিয়া সেতু’ চালু আগামী বছর
ছবি: প্রতিনিধি

দক্ষিণাঞ্চলের স্বপ্নের সেতু চালু হতে পারে আগামী বছর। সম্ভাব্য ২০২২ সালের জুন মাসের মধ্যে সাধারণ মানুষের ব্যবহারের জন্য হস্তান্তর করা হবে চীন সরকারের অনুদান সহায়তায় দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের আরও একটি স্বপ্নের, বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের পিরোজপুরের বেকুটিয়া পয়েন্টে কচা নদীর ওপর নির্মিত ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু। স্থানীয়ভাবে নির্মাণাধীন সেতুটি বেকুটিয়া সেতু নামে পরিচিত।

সেতুটি যশোর থেকে শুরু করে ভোলা পর্যন্ত কোটি কোটি মানুষের মুখে হাসি ফুটাবে৷ দীর্ঘদিনের সীমাহীন দুর্ভোগ লাঘব হবে এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীসহ সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের।

এই সেতুর কাজ সমাপ্ত হলে বেকুটিয়া নৈকাঠী ও চরখালী-টগড়া ফেরি সার্ভিসের প্রয়োজন লাঘব হবে। সেতুটি নির্মিত হলে পিরোজপুর জেলার চারটি উপজেলার সাথে জেলা সদরের সরাসরি সড়ক সংযোগ হবে।

এদিকে দেশের একমাত্র গভীর সমুদ্র বন্দর পায়রা এবং সমুদ্র সৈকত সাগরকন্যা কুয়াকাটার সাথে সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল এবং সমুদ্র বন্দর মংলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করবে এ বেকুটিয়া সেতুটি।

কচা নদীর প্রশস্ততা এক কিলোমিটার হওয়ায় ফেরি পারাপারে প্রায় ৪৫ মিনিট লেগে যায়। বর্ষাকালে পানির প্রবাহ বৃদ্ধি ও স্রোত বেড়ে গেলে আরও বেশি সময় লেগে যায়।

এ ছাড়া ফেরিগুলো পুরোনো ও জরাজীর্ণ হওয়ায় প্রায়ই বিকল হয়ে পড়ে। বৈরী আবহাওয়ায় ফেরি চলাচল বন্ধ থাকে। তাই এখানে একটি সেতু নির্মাণ ছিলো এ অঞ্চলের দীর্ঘদিনের দাবি।

সুষ্ঠু ও নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগব্যবস্থা তৈরির জন্য চীন সরকারের অনুদানে সেতুটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে সেতু নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন।

সেসময় প্রকাশিত ‘৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু’ শিরোনামের স্মারক বই থেকে জানা যায়, একটি টোল প্লাজা, সেতুর দুই প্রান্তে সংযোগ সড়ক, পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি ১২ মিটার সেতু ও বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হবে।

সেতুটি নদীর তলদেশ থেকে ২৮ দশমিক ৯৮ মিটার উঁচু হবে। ৮২১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে চায়না রেলওয়ে-১৭ ব্যুরো গ্রুপ লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান সেতুটি নির্মাণ করছে।

মোট বরাদ্দের ৬৫৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকা চীন সরকার ও ১৬৭ কোটি ৪ লাখ টাকা দেবে বাংলাদেশ সরকার।

সামগ্রিকভাবে সেতুটির দৈর্ঘ্য ২.৯৬ কিলোমিটার, যাতে ১.৪৯৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১৩.৪ মিটার প্রস্থ একটি বড় সেতু অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। সেতুর দুই পাড়ের সংযোগ সড়কের দৈর্ঘ্য আনুমানিক ১.৪৬৭ কিলোমিটার।

বর্তমানে সুশৃঙ্খল পদ্ধতিতে সেতুটির সুপার স্ট্রাকচার এর কাজ চলমান রয়েছে এবং সব মিলিয়ে কাজের অগ্রগতি প্রায় ৮২ শতাংশ । আশা করা হচ্ছে যে, সেতুটির নির্মাণ কাজ আগামী বছরের জুন মাসে সম্পন্ন এবং মানুষের ব্যবহারের জন্য হস্তান্তর করা হবে।

সেতুর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অন্যতম ফরচিউন গ্লোবাল ৫০০ কোম্পানির আওতায় চায়না রেলওয়ে কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড চায়না রেলওয়ে ১৭ ব্যুরো গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড।

মহামারী চলাকালীন সময়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কার্যকরভাবে প্রয়োজনীয় সম্পদ একত্রীকরণ, যুক্তিসংগত পরিকল্পনা এবং পদক্ষেপ প্রণয়ন করেছিল এবং দুই ধাপে মহামারী প্রতিরোধ এবং প্রকৌশল নির্মাণ অর্জন করেছিল। প্রকল্পের কাজ ক্রমাগত এগিয়ে চলেছে এবং মহামারীর কারণে বন্ধ হয়নি।

সেতুটি দক্ষিনাঞ্চলের সামগ্রিক উন্নতিসহ চীন ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক গভীর থেকে গভীরতর করবে বলে আশাবাদ সচেতন মহলের।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত