ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

পাইপলাইন উদ্বোধন ১৮ মার্চ

ভারতের তেলে বাংলাদেশের ১৬ জেলায় কাটবে সেচ সংকট

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০২৩, ১৬:০৫

ভারতের তেলে বাংলাদেশের ১৬ জেলায় কাটবে সেচ সংকট
ছবি: সংগৃহীত

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ির লুমানীগড় থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে আগামী ১৮ মার্চ ডিজেল আসবে বাংলাদেশের দিনাজপুরে। ভারত থেকে আসা এই তেল আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে কম দামে মিলবে। নিরবচ্ছিন্ন এই তেল সরবরাহ হবে উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলায় ও সৈয়দপুর ১৫০ বিদ্যুৎকেন্দ্রে। ফলে ওই জেলাগুলোর জমিতে সেচ সংকট কেটে যাবে এবং উন্নতি হবে বিদ্যুৎ পরিস্থিতিরও।

দক্ষিণ এশিয়াতে পাইপলাইনের মাধ্যমে এক দেশ থেকে আরেক দেশে এই প্রথম তেল আসছে। শুক্রবার দিনাজপুরের পার্বতীপুরে পাইপলাইনের তেল রিসিপ পয়েন্টে এক সমাবেশে এ কথা বলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

১৮ মার্চ ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এটি উদ্বোধন করা হবে। এর আগে প্রায় এক দশক আগে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করেছে সরকার।

২০১৮ সালে পাইপলাইন নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়। ভারত অংশে পাঁচ কিলোমিটার ও বাংলাদেশ অংশে ১২৬ দশমিক পাঁচ কিলোমিটার। সব মিলিয়ে পাইপলাইনের দৈর্ঘ্য ১৩১ দশমিক পাঁচ কিলোমিটার।

এটি বাংলাদেশ অংশে বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ও ভারত অংশে দেশটির সরকারি প্রতিষ্ঠান নুমালীগড় রিফাইনারি লিমিটেড। পাইপ লাইন নির্মাণের কাজ করেছে ভারতের দীপন গ্যাস।

রাশিয়া থেকে কম দামে তেল কিনছে ভারত। সেই দামের সুযোগ নিতে পারবে না বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক দামেই তেল কিনতে হবে ভারতের কাছ থেকে। এরপরও আন্তর্জাতিক বাজার থেকে কম দামে তেল পাবে বাংলাদেশ। বিপিসি সিঙ্গাপুরের ম্যাগাজিন প্লেটসে প্রকাশিত দামে তেল কিনে। যেদিন বিপিসির জাহাজে তেল নেয়া হয় সেদিন প্লেটসে প্রকাশিত দাম, তার আগের দিনের দাম ও জাহাজ ছাড়ার পরের দিনের দাম; এই তিনদিনের দামের গড় হলো জ্বালানি তেলের দাম। এর বাইরে জাহাজ খরচ ইন্স্যুরেন্সসহ অন্য ব্যয়কে প্রিমিয়াম বলা হয়।

প্রিমিয়াম ও প্লেটসে প্রকাশিত তেলের দাম পরিশোধ করতে হয় বিপিসিকে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে তেল কেনার প্রিমিয়াম খরচ প্রতি ব্যারেলে ১১ ডলার।

ভারত থেকে পাইপলাইনে আসা তেলের প্রিমিয়াম পড়বে পাঁচ দশমিক পাঁচ ডলার। এতে প্রতি ব্যারেলে পাঁচ দশমিক পাঁচ ডলার সাশ্রয়ী হবে। পূর্ণ সক্ষমতায় পাইপলাইনে তেল সরবরাহ হলে বছরে ৮০ কোটি টাকা সাশ্রয়ী হবে।

ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনের (আইবিএফপিএল) মাধ্যমে আসা ডিজেল দিনাজপুর লালমনিরহাট, পঞ্চগড়, রংপুর ও নীলফামারীসহ উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় সরবরাহ করা হবে। আগে এই জেলাগুলোতে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ি থেকে ট্রাকে করে তেল আসত। প্রথম তিন বছরে এই পাইপলাইনের মাধ্যমে বছরে দুই লাখ টন তেল আসবে। চতুর্থ বছর থেকে পাঁচ লাখ টন ও বাকি ১০ বছরে ১০ লাখ টন করে তেল আসবে। ১৫ বছর ধরে ভারত থেকে তেল কিনবে বাংলাদেশ। এরপর চুক্তি নবায়ন না হলে পাইপলাইনের মালিকানা ও কর্তৃত্ব বাংলাদেশের কাছে এককভাবে থাকবে।

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে পাইপলাইনের রিসিপশন সেন্টার বা তেলগ্রহণ কেন্দ্র করা হয়েছে। এখানে আগেই তেল মজুতের একটি ডিপো রয়েছে। সেখানে ১৪ হাজার টন তেল সংরক্ষণ করা যেতে। নতুন করে ২৯ হাজার টন তেল মজুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এই ডিপোতে এখন ৪৩ হাজার টন তেল মজুত করা যাবে, যা দিয়ে উত্তরের ১৬ জেলায় ৬০ দিন চলবে। পাইপলাইন নির্মাণে খরচ পড়েছে ৩ হাজার ৬২৩ কোটি টাকা। এ ছাড়া এখানকার ডিজেল দিয়ে সৈয়দপুর ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র চলবে। বাংলাদেশ জার্নাল/ কেএ/এমপি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত