ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

হাই প্রোফাইল কূটনীতিতে বাংলাদেশ

  জোবায়ের আহমেদ নবীন

প্রকাশ : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:১৩

হাই প্রোফাইল কূটনীতিতে বাংলাদেশ
বা দিক থেকে- বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও সের্গেই ল্যাভরভ

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, কারো প্রতি বিদ্বেষ নয়, সকলের প্রতি বন্ধুত্ব— এ নীতির ভিত্তিতে বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের বিশেষ করে প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমূহের সাথে শান্তিপূর্ণ সহ-অবস্থানে বিশ্বাসী বাংলাদেশ। এটিই বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি। তবে সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখতে গেলে আবার বিপদও কম নয়! যেমন বন্ধুর বন্ধু যেমন বন্ধু, তেমনি বন্ধুর শত্রুর সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখাটাও ঝুঁকির। এতে বন্ধুর মন ভাঙার শামিল। তবুও সবদিক ঠিক রেখে রীতিমতো অবিশ্বাস্যগতিতে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশের কূটনীতি। যে বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির তকমা দেয়া হয়েছিল। আজ সেই বাংলাদেশই হাই প্রোফাইল কূটনীতির অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিশ্বের পরাশক্তি ও বড় বড় দেশ এখন বাংলাদেশ নিয়ে ভাবে, তাদের ভাবতে হয়। বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে একের পর এক বড় বড় কূটনীতিক সমপ্রতি বাংলাদেশ সফরে আসেন। বিশ্ব মিডিয়ায় বার বার আলোচিত হয় বাংলাদেশের নাম। এদিকে একের পর এক উন্নয়নে তাক লাগিয়ে দেয়া বাংলাদেশকে নিয়ে উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর আগ্রহ বাড়ছে। এরই ধারাবাহিকতায় সবশেষ ব্রিকস সম্মেলনে আমন্ত্রণ পায় বাংলাদেশ। এবার জি-২০ সম্মেলনেও যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সম্মেলনে আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁসহ আরও কয়েকজন সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিশেষ আমন্ত্রণে ওই সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন।

ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লিতে শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বৈঠকে তিস্তার পানি বণ্টন, দুই দেশের কানেকটিভিটি, এনার্জি সিকিউরিটি ও ফুড সিকিউরিটিসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা হতে পারে।

এদিকে ১০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সফরে আসবেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিয়ে নয়াদিল্লি থেকে ঢাকা আসবেন তিনি। বিশ্বের অন্যতম বড় অর্থনীতির দেশ ফ্রান্স জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য। ম্যাক্রোঁর এই সফর হবে গত ৩৩ বছরের মধ্যে ফ্রান্সের কোনো প্রেসিডেন্টের প্রথম ঢাকা সফর। এর আগে ১৯৯০ সালে ফ্রান্সের তখনকার প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া মিতেরাঁ বাংলাদেশ সফর করেছিলেন।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বলেন, ফ্রান্সের সাহায্যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট পাঠাতে চাই আমরা। তাদের সঙ্গে আরও দুটো (চুক্তি) করার পরিকল্পনা আছে। তারা কিছু এয়ারবাস বিক্রি করতে চায়। আমরা কিনবো। এর মধ্যে দুটো কারগো বিমান। বাকিগুলো বোয়িং ও এয়ারবাস থেকে। এছাড়া ফ্রান্স বাংলাদেশে স্যাটেলাইট কারখানা করতে চায় বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। একইসঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যু, নারীর ক্ষমতায়ন, বিনিয়োগ, ব্যবসা-বাণিজ্য, জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যু নিয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সফরে আলোচনা হতে পারে বলে জানান তিনি।

এদিকে দুই দিনের সফরে বৃহস্পতিবার ঢাকা আসছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর রাশিয়ার কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই প্রথম ঢাকা আসছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে সের্গেই ল্যাভরভ ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে দেশটির প্রেসিডেন্টের আস্থাভাজন হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। রাশিয়ায় এই সময়ে অত্যন্ত প্রভাবশালী মন্ত্রী ল্যাভরভ ঢাকা সফর করেই ভারতে জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে যাবেন।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ফ্রান্সের প্রেডিন্টের বাংলাদেশ সফর এবং মোদীর সঙ্গে শেখ হাসিনার বৈঠককে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেছেন বিশ্লেষকরা। এরই মধ্য দিয়ে হাই প্রোফাইল কূটনীতিতে বাংলাদেশ প্রবেশ করেছে বলে মন্তব্য তাদের।

বাংলাদেশ জার্নাল/জিকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত