ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

মীরসরাই হানাদার মুক্ত দিবস আজ

  চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:৩৭  
আপডেট :
 ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৩

মীরসরাই হানাদার মুক্ত দিবস আজ
মীরসরাই হানাদার মুক্ত দিবস আজ। ছবি: সংগৃহীত

আজ ৮ ডিসেম্বর, চট্টগ্রামের মিরসরাই মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মিরসরাইয়ের মুক্তিকামী জনতা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের হটিয়ে মিরসরাইকে শত্রুমুক্ত করেছিলেন।

৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ শোনার পর থেকেই উপজেলার সর্বস্তরের জনতা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠন শুরু করে। মিরসরাইয়ে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় ২৫ মার্চ রাত থেকেই। চট্টগ্রামের দিকে পাক হানাদারদের আগমন প্রতিরোধ করতে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ওই রাতে উড়িয়ে দেয়া হয় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শুভপুর ব্রিজ।

মিরসরাই উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কবির আহম্মদ স্মৃতিচারণা করে বলেন, ডিসেম্বরের প্রথম দিকেই মিরসরাইয়ের প্রায় এলাকা শত্রুমুক্ত হয়। কিন্তু পাকবাহিনীর কিছু সদস্য ও তাদের দোসর রাজাকার, আল-বদর তখনো থানা সদরে অবস্থান করছিল। তাদের আস্তানা ছিল মিরসরাই উচ্চবিদ্যালয় (বর্তমান মিরসরাই পাইলট উচ্চবিদ্যালয়) ও মিরসরাই থানায়। সে কারণে মিরসরাই এলাকাকে শত্রুমুক্ত ঘোষণা করা যাচ্ছিল না।

৮ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা খবর পেলেন, পাকিস্তানি সেনারা মিরসরাইয়ের অয়্যারলেস ভবনটি (বর্তমান টিঅ্যান্ডটি ভবন) ধ্বংস করে থানা সদরে অবস্থান নিয়েছে। মিরসরাইয়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থান নেয়া মুক্তিযোদ্ধারা সংগঠিত হয়ে হানাদারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। মুক্ত হয় মিরসরাই।

মীরসরাই শত্রুমুক্ত হয়েছে এ কথা দ্রুত ছড়িয়ে যায় সর্বত্র। মুহূর্তেই চতুর্দিক থেকে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে মীরসরাই সদরে মিছিল আসতে থাকে। মুহূর্তের মধ্যেই অসংখ্য জনতার ঢল নামে মীরসরাই হাই স্কুল মাঠে। মৌলভী শেখ আহম্মদ কবির কোরআন তেলাওয়াত করেন। পরে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধারা জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। ঘোষণা করা হয় ৮ ডিসেম্বর ১৯৭১ সাল মীরসরাই ভূখণ্ড পাক বাহিনীমুক্ত একটি স্বাধীন এলাকা। সে থেকে ৮ ডিসেম্বর মীরসরাইয়ে উদযাপিত হয়ে আসছে শত্রুমুক্ত দিবসটি।

হানাদারমুক্ত দিবস উপলক্ষে স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনসহ নানা আয়োজন করেছে উপজেলা প্রশাসন, মীরসরাই মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড ও আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মীরসরাই উপজেলা শাখা।

প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের সব উপজেলার মধ্যে একমাত্র মীরসরাই উপজেলা থেকে বেশি মুক্তিযোদ্ধা অংশগ্রহণ করেছিল। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মীরসরাইয়ের রেল স্টেশন সড়কের মাঝামাঝি লোহার পুল নামক স্থানে ঘাতক পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরেরা অসংখ্য নারী–পুরুষ ও শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করে তাদের লাশ পানিতে ভাসিয়ে দেয়। ওই সময় এই লোহার পুল এলাকা ছিল ওই এলাকার লোমহর্ষক একটি জায়গার নাম। যার কথা মনে পড়লে এখনো মানুষ আঁতকে উঠে। বর্তমানে তালবাড়িয়া এলাকায় বধ্যভূমিতে জেলা পরিষদের অনুদানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত