ঢাকা, রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

বৃষ্টির জন্য বিভিন্ন স্থানে ইসতিসকার নামাজ আদায়

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ২১:৩২  
আপডেট :
 ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ২১:৪৮

বৃষ্টির জন্য বিভিন্ন স্থানে ইসতিসকার নামাজ আদায়
রাণীশংকৈল নেকমরদ সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের মাঠে ইসতিসকার নামাজ ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: প্রতিনিধি

প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশ। আকাশে মেঘের দেখা নেই। নষ্ট হচ্ছে ফসল। পশুপাখিসহ মানুষের জীবন-যাপন অসহনীয় হয়ে উঠেছে। হিটস্ট্রোকে মানুষ মারা যাচ্ছে। তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে রক্ষা পেতে বৃষ্টির প্রার্থনায় বৃহস্পতিবার বিভিন্ন স্থানে ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা।

বরিশাল প্রতিনিধি জানান, তাপদাহ থেকে রক্ষায় বরিশালে অনুষ্ঠিত হয়েছে ইসতিসকার নামাজ। আজ সকাল ১০টায় নগরীর প্রাণ কেন্দ্র গীর্জামহল্লা এলাকায় একে ইনস্টিটিউট বিদ্যালয় মাঠে এ নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। নগরীর বিভিন্ন স্থানের মুসল্লিরা এ নামাজে অংশ নেন। দুই রাকাত নামাজ আদায় শেষে আল্লাহর দরবারে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। মোনাজাতে আল্লাহর কাছে তাপদাহ থেকে মুক্তি এবং বৃষ্টির জন্য কান্নায় ভেঙে পড়েন মুসল্লিরা। মোনাজাত পরিচালনা করেন নগরীর জামে কসাই মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা কামাল উদ্দিন। ইসতিসকার নামাজ আদায় করতে ভোর থেকেই মুসল্লিরা স্কুল মাঠে জমায়েত হন।

দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, দিনাজপুরে বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ ইসতিসকার আদায় করা হয়। আজ সকাল দশটায় দিনাজপুর শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম মাঠে এই নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। দিনাজপুর স্টেশন আহেলা হাদিস জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আবু বক্কর সিদ্দিক এই নামাজের ইমামতি করেন। দিনাজপুর শহরের রামনগর, লালবাগ গোবরা পাড়া, মাজাডাঙ্গা , পাটুয়াপাড়াসহ বেশ কিছু এলাকার মুসল্লিরা এই নামাজে অংশগ্রহণ করেন। দুই রাকাত বিশেষ নামাজ আদায়ের পর আল্লাহর দরবারে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি জানান, বৃষ্টিহীন চরম অস্বস্তিকর পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে টাঙ্গাইলে খোলা আকাশের নিচে বৃষ্টির জন্য সালাতুল ‘ইসতিসকার’ নামাজ ও বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় ঈদগা মাঠে এ নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে ইমামতি করেন শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের খতিব ও ইমাম মুয়াজ্জিন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন ঈমান। নামাজে টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এসএম সিরাজুল হক আলমগীর, সাবেক পৌরসভার মেয়র জামিলুর রহমান মিরন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান খোরশেদ আলমসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আগত মুসল্লিরা অংশ নেন।

নামাজে অংশ নেয়া কয়েকজন মুসল্লি জানান, টানা কয়েক দিনের প্রচণ্ড তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রখর রোদের কারণে জীবিকা নির্বাহের তাগিদে বাইরে বের হতে পারছে না অনেক মানুষ। এ কারণে বৃষ্টি চেয়ে আল্লাহর দরবারে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা হয়।

শেরপুর প্রতিনিধি জানান, শেরপুরে তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে রক্ষা পেতে বৃষ্টির প্রার্থনায় ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা। আজ বৃহস্পতিবার সদর উপজেলার কুমড়ি বাজিতখিলা ঈদগাহ মাঠে খোলা আকাশের নিচে ওই ইসতিসকার নামাজ আদায় করা হয়। নামাজে ইমামতি করেন স্থানীয় ইমাম মাওলানা আতাউর রহমান। স্থানীয় মুসল্লি শামীম রেজা জানান, নামাজের ইমাম প্রথমে ইসতিসকার নামাজের নিয়মকানুন বলে দেন। এরপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করা হয়। নামাজ শেষে দুই হাত তুলে প্রচণ্ড গরম, তীব্র তাপপ্রবাহ ও খরা থেকে রক্ষা পেতে বৃষ্টি চেয়ে আল্লাহর কাছে মোনাজাত করেন তারা।

মুসল্লি আকবর হোসেন বলেন, মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে পাপের জন্য তওবা এবং ক্ষমা চেয়ে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করি। ওইসময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মুক্তিসহ দেশ ও জাতির কল্যাণেও প্রার্থনা করা হয়।

রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি জানান, তীব্র তাপদাহের সঙ্গে বইছে গরম বাতাস। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বৃষ্টি না হওয়ায় নষ্ট হচ্ছে ফসল। নেমে গেছে পানির স্তর। দেখা দিয়েছে পানির সংকট। এমন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ (সালাতুল ইসতিসকার) আদায় করেছেন আলেম উলেমা ও সাধারণ মুসল্লিরা। আজ সকাল ১০টায় নেকমরদ সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের মাঠে এই নামাজ ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে এলাকার শতশত মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন।

উক্ত নামাজে ইমামতি করেন নেকমরদ বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি মাসুম বিল্লাহ। এসময় নামাজের পরে খুতবা শেষে মোনাজাতের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়। মোনাজাতে মুসল্লিরা অঝোরে তাদের চোখের পানি ফেলে এক পশলা রহমতের বৃষ্টির জন্য মহান রাব্বুল আলামীনের দরবারে দোয়া প্রার্থনা করেন। উক্ত মোনাজাত পরিচালনা করেন নেকমরদ পুরাতন গরুগাটি মসজিদের ইমাম মাওলানা ওয়ালিল্লাহ সাহেব।

নামাজে অংশ নেয়া কৃষক মো. ফারুক বলেন, ‘আমরা কৃষিকাজ করে সংসার চালাই। বৃষ্টির কারণে আমরা কোন ফসল রোপণ করতে পারছি না। এই গরমে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাই বৃষ্টির জন্য আমরা নামাজ আদায় ও দোয়া করলাম।’ নেকমরদ বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব কাজী মাওলানা মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘রাসুল (সা.) তার সময়েও বৃষ্টির জন্য এই সালাত আদায় করতেন। আমরাও আদায় করলাম। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলাম এবং বৃষ্টি চাইলাম।’

ফরিদপুর শহরের চাঁদমারি ঈদগাহ ময়দানে ইসতিসকার নামাজ আদায়

ফরিদপুর প্রতিনিধি জানান, ফরিদপুরে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছেন সহস্রাধিক মুসল্লি। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে শহরের চাঁদমারি ঈদগাহ ময়দানে এ নামাজ আদায় করা হয়। নামাজে ইমামতি করেন জামেয়া আরাবিয়া সামসুল উলুম মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুফতি কামরুজ্জামান।

জেলা কওমি ওলামা পরিষদ ও ইমাম কল্যাণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এর আয়োজন করা হয়। শহরের বিভিন্ন পাড়া মহল্লা থেকে নানা বয়সী মুসুল্লিগণ নামাজে শরিক হন। নামাজ আদায়ের আগে সুন্নাত অনুযায়ী সমবেত মুসুল্লিগণ একনিষ্ঠ চিত্তে মহান আল্লাহর কাছে তাদের ইচ্ছা-অনিচ্ছায় করা সকল গুনাহ থেকে তওবা করেন। এরপর মোনাজাত করা হয়। এছাড়া জেলার বোয়ালমারী উপজেলার বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায় করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সূর্যোদয়ের পরে বাইতুল হামদ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে এ নামাজ আদায় করা হয়। এসময় গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপদাহ, খরা ও অনাবৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে মহান আল্লাহর রহমত লাভের আশায় বিশেষ দোয়া করা হয়।

পটুয়াখালী প্রতিনিধি জানান, তাপদাহ থেকে মুক্তি ও উপকারী বৃষ্টি চেয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে পটুয়াখালী পৌরশহরের ঝাউবাগান এভিনিউতে ইসতিসকার নামাজ আদায় ও দোয়া মোনাজাত করেছেন ওলামা মাশায়েখ ও ধর্মপ্রাণ মুসলমান। খতিব ছিলেন মাওলানা মুতাসিম বিল্লাহ জুনায়েদ।

গত এক সপ্তাহ ধরে জেলায় তাপমাত্রার আধিক্য দেখা দিয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন শিশু, বৃদ্ধ ও নিম্নআয়ের শ্রমজীবী মানুষ। জেলা হাসপাতালগুলোতে ক্রমশ ভিড় বাড়ছে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের। হিটস্ট্রোক থেকে রক্ষা পেতে করণীয় সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণাসহ লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম চলছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত