ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

‘বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার চাননি ড. কামাল’

  ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০১৯, ২০:৩১

‘বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার চাননি ড. কামাল’

প্রবীণ আইনজীবী ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন একবারও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার বিচার চাননি বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। শুক্রবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা পরিষদ মাঠে আয়োজিত গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই মন্তব্য করেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা ও আখাউড়া) আসনের এই সংসদ সদস্য টানা দ্বিতীয়বারের মতো আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ায় আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনসমূহ এ গণসংবর্ধনার আয়োজন করে।

ড. কামাল হোসেনের সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, একবারের জন্যও উনি (কামাল হোসেন) বলেন নাই বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার হওয়া উচিত। তিনি নিজেকে সংবিধান প্রণেতা ও বিরাট আইনজীবী পরিচয় দেন। কিন্তু যার বদৌলতে তিনি এতো পরিচিত হয়েছেন তার হত্যার বিচারের কথা তিনি একবারও বলেন না।

আইনমন্ত্রী বলেন, তিনি প্রেসক্লাবে বসে সংবাদ সম্মেলন করেন। আর খবরের কাগজের শিরোনাম হন। অথচ জনগণের কাছে আসেন না। শেষ পর্যন্ত তিনি ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করলেন। ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই সাংবাদিক ভাইদের বললেন খামোশ। পুলিশকে গালি দিলেন। কাকে কী বলবেন বুঝে উঠতে পারেননি। জনগণ যখন তাদের ভোটের মাধ্যমে প্রত্যাখ্যান করলেন তখন তিনি বললেন জামায়াতকে নিয়ে নির্বাচন করা আমার ভুল হয়েছে।

আইনমন্ত্রী আরো বলেন, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুকে পাক হানাদার বাহিনীরা গ্রেপ্তার করল। উনি (ড. কামাল হোসেন) কে বগলতলা করে নিয়ে গেল। এই হচ্ছে সেই লোক। উনি ৯ মাস ওখানে গাছ টাস করিয়া আয় টাই করিয়া থাকিয়া গেল। তারপর বঙ্গবন্ধু ওনাকে নিয়ে আসলো। কারণ বঙ্গবন্ধু উনাকে পছন্দ করতেন। ১৯৭১ সালে ১৫ আগস্ট বেঈমান মীর জাফর মোস্তাক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলো। উনি ছিল লন্ডন শহরের। উনাকে মোস্তাক সাহেব মন্ত্রী বানিয়েছিলো। উনি আর আসে নাই। ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের ঘাড়ে উঠে নির্বাচন করলেন উনি রাষ্ট্রপতি হতে চান। আওয়ামী লীগ তাকে নিমিনেশন দিল। এক বারের জন্য তিনি বলেন নি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার হওয়া উচিত। তিনি নিজে পরিচয় দেন সংবিধান প্রণেতা ও বিরাট আইনজীবী। যার বদলে এত পরিচিত হয়েছেন তার কথা একবারও বলেন না। যখন দেখলেন শেখ হাসিনার ঘাড়ে উঠে আর কাঁঠাল খাওয়া যাবে না, তখন তিনি একটি দল করলেন গণফোরাম। গণও নাই ফোরামও নাই। মানুষ একটাই নাই। শেষ পর্যন্ত উনি বিএনপিতে চলে গেলেন। ধানের শীষ নিয়ে উনিরা নির্বাচন করলেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে আল বদর রাজাকার এবং খুনিদের শুধু তাদের রক্ষা করে নাই। সরকার গঠন করার ক্ষমতা দিয়ে সরকারের অংশীদারিত্ব দিয়েছেন। তাদের বাংলাদেশ ধ্বংস করার জন্য লেলিয়ে দিয়েছেন। তারা মানুষ হত্যা করেছে। বাংলাদেশকে গরীব বানিয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত পরিচিত করিয়েছেনে বাংলাদেশ একটা ব্যর্থ রাষ্ট্র ও বাংলাদেশে একটা মিসকিনের রাষ্ট্র। তারা দেখে যে জন নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়ন করে যাচ্ছে তখন ষড়যন্ত্র করা শুরু করলো। তারা প্রথমে চেষ্টা করলো জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করা। ১৯ বার শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছিলো। আল্লাহ জননেত্রী শেখ হাসিনাকে রক্ষা করেছেন।

বিএনপির সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, এতিমের টাকা চুরির জন্য খালেদাকে ৫ বছরের সাজা দিয়েছেন বিচারিক আদালত। তার ছেলে তারেক রহমান ২২ জনকে হত্যার কারণে ১২ বছরের সাজাপ্রাপ্ত। তারেক রহমানকে বিদেশ থেকে ফিরিয়ে এনে তার রায় কার্যকর করা হবে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের ফলাফল বাতিলের জন্য পুনঃনির্বাচনের দাবি প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘কার সাথে সংলাপ করবে। জনগণ তাদেরকে ভোট দেয় নি। যারা জনগণকে তোয়াক্কা করে না। তারা মনে করে ঢাকায় বসে তারা যা খুশি করবে। তা আপনারা মেনে নিবেন। এটা হতে পারে না। এই অভ্যাসকে আর সুযোগ দেওয়া যায় না।’

আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ মো. জয়নাল আবেদীনের সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় বক্তৃতা করেন পৌর মেয়র মো. তাকজিল খলিফা কাজল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাশেম ভূঁইয়া, মো. সেলিম ভূঁইয়া, কসবা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদুল কাউসার ভূঁইয়া জীবন, আখাউড়া উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. মুরাদ হোসেন ভূঁইয়া, সাবেক মেয়র মো. নূরুল হক ভূঁইয়া, আওয়ামী লীগ নেতা ও মনির হোসেন চেয়ারম্যান, জালাল উদ্দিন চেয়ারম্যান, যুবলীগ নেতা আল-আমিন মোল্লা, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি শাহাবুদ্দিন বেগ শাবলু, সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন নয়ন প্রমুখ।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত