অনিশ্চিত হয়ে গেল নিপার ডাক্তার হবার স্বপ্ন
যশোর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০১৯, ১১:৩৯
ডাক্তার হয়ে অসুস্থ মানুষের সেবা করতে চেয়েছিল নিপা। কিন্তু অনিশ্চিত হয়ে গেল সে স্বপ্ন। নিজ স্কুলের সামনে পিকআপের চাপায় ডান পা, ডান হাত ভেঙে এখন সে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে যশোর জেনারেল হাসপাতালের মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডের ২ নং বেডে।
জীবন বাঁচাতে জরুরিভাবে অপারেশন করে মেধাবী এই ছাত্রীর ডান পা হাটুর নিচ থেকে কেটে বাদ দেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনায় আহত আরো দুই ছাত্রীকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার সকালে যশোর-বেনাপোল সড়কের নাভারণে এই দুর্ঘটনা ঘটে। আহত নিপা যশোরের শার্শা উপজেলার দক্ষিণ বুরুজবাগান এলাকার রফিকুল ইসলামের মেয়ে ও নাভারণের বুরুজবাগান পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের ষষ্ট শ্রেণির ছাত্রী।
জানা যায়, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নিপাসহ তিন শিক্ষার্থী একটি ভ্যানে করে নাভারণের বুরুজবাগান পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছামাত্রই বাগেরহাটের রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের একটি দ্রুতগামী পিকআপ তাদের ভ্যানটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়।
এতে নিপা গুরুতর আহত হয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। দুর্ঘটনার পরপরই ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী পিকআপটিতে আগুন ধরিয়ে দেয় ও যশোর-বেনাপোল সড়ক দুই ঘণ্টা ধরে অবরোধ করে রাখে।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম মজ্ঞু, উপজেলা নির্বাহী অফিসার পুলক কুমার মন্ডল, শার্শা থানার ওসি এম মশিউর রহমান ঘটনাস্থলে ছুটে এসে শিক্ষার্থীদের সান্তনা দেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিপার বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, ছোট বেলা থেকেই মেয়েটি আমার খুব মেধাবী। পড়াশোনার প্রতি তার প্রবল আগ্রহ। প্রতি ক্লাসেই সে ফার্স্ট হয়। মেয়েটি আমার ডাক্তার হতে চেয়েছিল।
আমার মেয়ের সে স্বপ্ন অনিশ্চিত হয়ে গেল। এসময় ঘটনার সাথে জড়িত ড্রাইভারের দৃষ্টান্তমূলক সাজা দাবি করেন তিনি ।
যশোর জেনারেল হাসপাতালে অর্থোপেডিক বিভাগের ডাক্তার আব্দুর রউফ জানান, অপারেশনের মাধ্যমে নিপার ডান পা হাঁটুর নীচ থেকে কেটে ফেলতে হয়েছে। সে এখন আশঙ্কামুক্ত।
খবর পেয়ে হাসপাতালে নিপাকে দেখতে যান যশোরের জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল। তিনি বলেন, নিপার সব ধরণের চিকিৎসার ভার জেলা প্রশাসন বহন করবে।
বাংলাদেশ জার্নাল/টিপিবি