ঢাকা, রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

ছাত্রলীগ নেতার আঙ্গুল কর্তন: কলারোয়া ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত

  সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৯ মে ২০১৯, ১৯:৩৪

ছাত্রলীগ নেতার আঙ্গুল কর্তন: কলারোয়া ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত

জমি দখলকে কেন্দ্র করে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতার ৪টি আঙ্গুল কর্তনের ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণা করেছে সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগ।

অপরদিকে এ ঘটনায় কলারো উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ সাগর ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান নাইসসহ ৭ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কলারোয়া উপজেলার পাটুরিয়া গ্রামের কাজিরহাট এলাকায় ৩৪ শতক জমি নিয়ে কলারোয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মনজুর মোরশেদ তুষারদের সাথে স্থানীয় মন্টুদের বিরোধ চলছিল। দেড় লাখ টাকার বিনিময়ে ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ সাগর ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান নাইস মন্টুদের পক্ষে জমি দখল করতে যায়।

১৮ মে শনিবার সকাল ১০টার দিকে ওই জমিতে মাপযোগ করে রাখা সীমানার খুঁটি তুলে দেয় ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ সাগর ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান নাইসের নেতৃত্বে মন্টু, পলাশ, জুয়েল, নুরুল কবির বাবুসহ কয়েকজন নেতা-কর্মী।

এখবর শুনে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মুনজুর তুষার ফোন করে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের নিকট জানতে চায় কেন তাদের জমির সীমানার খুঁটি তুলে ফেলা হয়েছে। এরপর ছাত্রলীগ সভাপতি সাগর ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান নাইস তার সহযোগীদের নিয়ে কলারোয়া বাস স্ট্যান্ডে অবস্থিত মুনজুর মোরশেদ তুষারের দোকান তুষার ইলেকট্রনিক্সে এসে হুমকি ধমকি দিতে থাকে। এক পর্যায়ে তুষার দোকানের বাইরে এলে তাকে লাঠি দিয়ে বেদম পিটিয়ে আহত করে।

বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহত অবস্থায় তুষারকে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে সেখানে গিয়ে হাসপাতালের ভেতরেই ছাত্রলীগ সভাপতি সাগর, সাধারণ সম্পাদক নাইস ও তার সহযোগী নুরুল কবির বাবু, মিন্টু, রিজু দ্বিতীয় দফায় হামলা চালায়। এর এক পর্যায়ে নুরুল কবির বাবুর হাতে থাকা রাম দা দিয়ে তুষারের মাথায় কোপ মারতে গেলে সে তার ডান হাত দিয়ে ঠেকালে ডান হাতের বৃদ্ধাআঙ্গুলির নিচ থেকে ৪টি আঙ্গুল কেটে পড়ে যায়।

এ সময় রক্তাক্ত অবস্থায় ছটফট করতে থাকা মনজুর মোরশেদ তুষারের চিৎকারে গোটা হাসপাতালের পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। ঘটনাস্থলে পুলিশ এলে হামলাকারী ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা পালিয়ে যায়।

গুরুতর আহত অবস্থায় তুষারকে উদ্ধার করে প্রথমে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে সিবি হাসপাতালে নেয়া হয়। খবর পেয়ে আহত সাবেক এই ছাত্রনেতাকে দেখতে ছুটে আসেন সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমান, কলারোয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু, আওয়ামী লীগ নেতা মজনু চৌধুরী সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা কর্মী। তুষারের অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাতে হেলিকপ্টারযোগে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় আহত তুষারের চাচা আবু সিদ্দিক বাদী হয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ সাগর ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান নাইস, ছাত্রলীগ নেতা নুরুল কবির বাবুসহ ৭ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে কলারোয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।

অপরদিকে টাকার বিনিময়ে জমি দখল ও হামলার ঘটনায় সরাসরি কলারোয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাগর ও সাধারণ সম্পাদক নাইসের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় রাতেই উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। একই সাথে নুরুল কবির বাবু, মন্টু ও ইমামকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল ইসলাম রেজা ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমান সাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানানো হয়েছে।

কলারোয়া থানার ওসি মনিরুজ্জামান জানান, মামলার প্রধান আসামি রেজাউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলচে।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত