ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

সংসদ থেকে পদত্যাগের হুমকি বাদলের

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৬ জুন ২০১৯, ০২:৫৩  
আপডেট :
 ২৬ জুন ২০১৯, ০২:৫৬

পদত্যাগের হুমকি বাদলের

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুর নির্মাণকাজ শুরু না হলে সংসদ থেকে পদত্যাগ করার হুমকি দিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জাসদের (একাংশের) কার্যকরী সভাপতি মঈন উদ্দীন খান বাদল। মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাতে জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ ঘোষণা দেন। এর আগে বিকেল ৩টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে দিনের কার্যসূচি শুরু হয়।

সংসদ সদস্যদের মর্যাদা নিয়ে প্রশ্ন তোলে স্পিকারকে বিষয়টি দেখার অনুরোধ জানিয়ে মঈন উদ্দীন খান বাদল বলেন, বহুবার বলেছি সংসদ সদস্যদের মর্যাদাটা দেখতে হবে। আপনি মন্ত্রী হবেন। আপনার প্রটোকল ৫ নম্বর। আর সংসদ সদস্যদের প্রটোকল সরকারি কর্মকর্তাদের নিচে দিয়ে দেবেন। হোয়াট ইজ দিস? মন্ত্রী হবেন ভালো থাকবেন, আর যারা সদস্য সংসদ সদস্য, তারা? সারা দেশে সাধারণ কর্মচারীদের সম্মানটা তারা পায় কিনা সেটা খোঁজ করে দেখুন।

কালুরঘাট সেতুর নির্মাণকাজ সম্পর্কে একজন গৃহশিক্ষকের সঙ্গে কথোপকথনের উদাহরণ দিয়ে জাসদের এই নেতা বলেন, আমার শিক্ষক আমাকে বলছেন, তোমার কালুরঘাট সেতুর কি হইল। আমি বলছি চেষ্টা করছি। কয় মিয়া তুমি আর কী চেষ্টা করবা। তোমার অবস্থা হইল তুমি হইলা বকা উল্লাহ, তুমি বইকা যাবা। শোনা উল্লারা শুইনা যাবে করিমুল্লারা কইরা যাবে, আর খানে উল্লারা খাইয়া যাবে। আর গরীবুল্লারা চর্তুদিকে ফ্যাঁ ফ্যাঁ কইরা তাকাবে রাজা রানীর কথা আসলে বেশ বেশ করবে। এখন তুমি কোনটা? বলছি স্যার প্রথমটা তো হইছি। বকা উল্লা বলতে পারেন। বকা ছাড়া কাজ নাই। গত ১০ বছরের দেখেছি বকা ছাড়া লাভ নাই। আরেকটা হয়েছি গরীবুল্লাও বটে। এদিকে সেদিক ফ্যাঁ ফ্যাঁ করি। মাঝে মাঝে সুপারিশ মোতাবেক বাহ বেশ বেশ করি।

কালুরঘাট সেতুর নির্মাণকাজ শুরু না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, কালুরঘাট সেতু নির্মাণের জন্য অস্ট্রেলিয়া, তাইওয়ান ও বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান সম্ভাব্যতা যাচাই করেছে। ওদেরটা না মেনে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠানও আবার এটা করেছে। এই প্রজেক্টের নির্মাণ খরচ হলো ১ হাজার ১৬৩ কোটি টাকা। এরমধ্যে জিওবি ৩৭৯ কোটি। বাকি পুরো টাকা দিচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া। মাত্র ০.০১% সুদে ৪০ বছরে এই অর্থ পেমেন্ট করতে হবে। কিন্তু, কিছুই হলো না। এতকিছুর পরও বলবেন হাজার হাজার কোটি টাকার প্ল্যান পাস হচ্ছে। উন্নয়ন হচ্ছে। আমি বকা উল্লা আমার এলাকায় গিয়ে কী বলবো? ডিসেম্বরের মধ্যে যদি এটার কোনও সদগতি না দেখি, আই উইল গো আউট ফ্রম দ্য পার্লামেন্ট। আমি চলে যাবো। এরকম অপমান নেওয়া যায় না। ৫০ হাজার লোক ওই রাস্তা দিয়ে ক্রস (যাতায়াত) করে প্রতিদিন। ৫০ হাজার লোক আমার মৃত মাকে গালি দেয়। আই উইল নট লেট বেয়ার ইট।

মঈন উদ্দীন খান বাদল প্রশ্ন রেখে বলেন, কী রকম সরকার চলছে? যিনি মন্ত্রী হবেন তিনি উনার বাড়িতে কাজ নিয়ে যাবেন। তাহলে আমরা কী? কিসের জন্য এই সংসদ।

পরিকল্পিতভাবে প্রকল্প গ্রহণ না করা এবং বারবার খরচ বাড়ানোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, এটা কী তামাশার দেশ পাইছেন? প্রকল্পের খরচ ২০ হাজার কোটি। সেই খরচ এখন হচ্ছে এক লাখ কোটি টাকা। একটা ব্রিজের কাজ শুরু করেন। বলেন, এটার খরচ ২০ হাজার কোটি। এখন কত কোটি? কী কারণে এটা হবে। যারা প্রজেক্ট বানায় তাদের ধরে পেটানো উচিত। তুমি আমার দেশের টাকা নিয়ে তামাশা করো?

মঈন উদ্দীন খান বাদল বলেন, মাতারবাড়িতে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যয় ৩৩ হাজার কোটি টাকা। এক লাখ কোটি টাকা দিয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র কেন করছেন? হু উইল পে দিজ এক্সপেনসেস?

স্বাধীনতার ঘোষক বিতর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি প্রথম ব্যক্তি ২৬ মার্চ জিয়াউর রহমানকে বোয়ালখালি মাঠ থেকে রিসিভ করেছিলাম। জিয়াউর রহমান ২৬ মার্চ পুরো দিন বোয়ালখালি ছিলেন, সারাদিন বোয়ালখালী ছিলেন, কেউ যদি প্রমাণ করতে পারে জিয়াউর রহমান ২৬ মার্চ কর্ণফুলী অতিক্রম করেছে, তাহলে আমি সংসদ থেকে চলে যাব। এই সমস্ত জায়গাগুলোতে মিথ্যাচার করার দরকার নাই।

ডিপি/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত