ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

ভুয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য

  বগুড়া প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৫ জুলাই ২০১৯, ১৪:৩৪  
আপডেট :
 ১৫ জুলাই ২০১৯, ১৫:১১

ভুয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য

বগুড়া সদরে ভুয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে এক দম্পতির বিরুদ্ধে। টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ফারাবি নুরুল ইসলাম (৫২) ও স্ত্রী আকলিমা খাতুনকে (৪১) ১৫ জুলাই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

জানা যায়, নামে বেনামে অনুমোদন ছাড়াই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান খুলে শিক্ষার্থীদের ভর্তি ও বেকারদের নিয়োগের নামে বাণিজ্য শুরু করেন আল ফারাবি নুরুল ইসলাম (৫২) ও স্ত্রী আকলিমা খাতুন (৪১)। হাতিয়ে নেন কোটি কোটি টাকা।

নিজেদের মালিকানায় বগুড়া সদর থানার সাধারণ বীমা ভবন, কলেজ রোডের ভাড়াকৃত পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় চলছিল তাদের এ রমরমা শিক্ষা বাণিজ্য।

পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজশাহী আঞ্চলিক কেন্দ্রের পরিচালক ড. জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ৯২। ওই মামলায় তদন্ত শেষে ৭ কোটি ৩১ লাখ ৫৮ হাজার ৫০৮ টাকা প্রতারণামূলকভাবে আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া যায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ জুলাই ফারাবি-আকলিমা দম্পতিকে রাজধানী থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিট।

এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে রোববারই মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে বগুড়া সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নম্বর ৫০।

রোববার দুপুরে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসপি) মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, আল ফারাবি নুরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী আকলিমা খাতুন বগুড়া সদর থানার অধীন সাধারণ বীমা ভবনের ভাড়াকৃত পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় গড়ে তোলেন নানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। নুরুল ইসলাম ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি, নিয়াক মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (পলিটেকনিক), বগুড়া টিএইচবিপিইডি কলেজ, এসবি সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি কলেজ, পাবলিক হেল্থ ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্ক, শহীদ মোনায়েম হোসেন বিএড কলেজ, টিএউচবিপিএড কলেজ, নুরুল ইসলাম আকলিমা প্যারামেডিক্যাল ইনস্টিটিউট, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড বিএম কলেজ, রংপুর একাডেমিক অ্যান্ড প্রফেশনাল ইনস্টিটিউট, একাডেমিক অ্যান্ড প্রফেশনাল ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনার আড়ালে চারুকলা ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউটসহ একাধিক অনুমোদনহীন নাম-সর্বস্ব ভুয়া প্রতিষ্ঠান খুলে চাকরিপ্রত্যাশী বেকার যুবকের কাছে চারুকলা ডিপ্লোমা সনদ বিক্রি করে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। তারা উচ্চ বিদ্যালয়ে চাকরির সুযোগের কথা উল্লেখ করে ও পাস করার নিশ্চয়তা দিয়ে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করাতেন।

ফারাবি দম্পতির মালিকানাধীন এসবি সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি কলেজ, বগুড়া টিএইচবিপিইডি কলেজ এবং শহীদ মোনায়েম হোসেন বিএড কলেজের নামে প্রচারিত লিফলেটে চারুকলা ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তির বিষয়ে ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত’ উল্লেখ করা হয়। পরে ওই বিজ্ঞপ্তিটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজশাহী আঞ্চলিক কেন্দ্রের নজরে আসে। বগুড়া সদর থানায় মামলা হয়।

মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, এই দম্পতির বিরুদ্ধে এসবি সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি কলেজে চারুকলা কোর্স এবং গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান ডিপ্লোমা কোর্সের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতারণামূলকভাবে ৭ কোটি ৩১ লাখ ৫৮ হাজার ৫০৮ টাকা গ্রহণের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। অবৈধভাবে অর্জিত এই টাকা আদালতের আদেশে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

এসপি নজরুল ইসলাম বলেন, ফারাবি দম্পতি চারুকলা ডিপ্লোমা কোর্স এবং গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান ডিপ্লোমা কোর্সের সনদ বিক্রি করে চাকরিপ্রার্থী বেকার যুবকদের কাছ থেকে ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামাঙ্কিত রশিদের মাধ্যমে বড় অংকের অর্থ নিতেন। যা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অপরাধ। তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট মামলায় আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুতি চলছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/জেডআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত