ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

যে কারণে মিন্নির পক্ষে নেই কোনো আইনজীবী

  বরগুনা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৯ জুলাই ২০১৯, ১৫:০০

যে কারণে মিন্নির পক্ষে নেই কোনো আইনজীবী

বরগুনায় চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল আদালতে নেয়া হলে তার পক্ষে কোন আইনজীবী লড়তে রাজি হননি।

মিন্নির বাবার অভিযোগ, তিনি ও তার পরিবার কয়েকজন আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু কেউ মিন্নির পক্ষে দাঁড়াতে রাজি হননি।

তিনি বলেন, আইনজীবী কমলকান্তির সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। আমার মামা শ্বশুর জাকির শিকদার তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। আমি গোলাম সরওয়ার নাসির সাহেবকে বলেছি। অ্যাডভোকেট আরও কয়েকজনকে বলেছি। অ্যাডভোকেট জিয়া ভাইর সঙ্গে আমার খুব ভালো সম্পর্ক। তিনি বলছে এই কেসের জন্য আমি টাকা নিবো না। এটা বলে তিনি কোর্টের ভিতরে গিয়েছেন। পরে শুনেছি তিনিও কথা বলেতে পারেননি। অ্যাডভোকেট কাদের ভাইকে বলেছি। তিনিও সহায়তা করেননি। সবাইকে বলেছি। তখন একজন বললেন মিন্নির পক্ষে কেউ কথা বলবেন না। আমাদের একটা বাধ্যবাধকতা আছে।

বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী কারো পক্ষে, বিশেষ করে কোন আসামির পক্ষে, আইনজীবী নিয়োগ দেয়া না থাকলে তার পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ দেয়া সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেনের অভিযোগ, প্রভাবশালী মহলের চাপে বরগুনার কোনো আইনজীবী তার মেয়ের পক্ষে লড়তে রাজি হননি।

যদিও মিন্নির বাবার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আব্দুর রহমান নান্টু ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহাবুবুল বারি আসলাম। তার বলছেন, আইনজীবী পাওয়ার বিষয়ে তাদের সাথে কোনো যোগাযোগই করা হয়নি।

আবার এসব ঘটনার পেছনে স্থানীয় প্রভাবশালীদের নাম উঠে আসছে। এর পেছনে স্থানীয় সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ছেলের নির্দেশনা ছিল বলে অভিযোগ মিন্নির বাবার। তবে এমন অভিযোগ এমপি পুত্র সুনাম দেবনাথও অস্বীকার করেছেন।

পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় এরকম ক্ষেত্রে অভিযুক্ত হিসেবে একজন নারী থাকলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলেই সকলের ধারণা। আমাদের সমাজে এরকম ক্ষেত্রে নারীদের অনেক সমস্যার মুখে পড়তে হয়। যেমন ধর্ষণের একজন ভিকটিমকেও নিজের প্রমাণ করতে হয় যে সে ধর্ষিত হয়েছে এবং বিচার চলাকালীন সময় তাকে দোষারোপ করার প্রবণতাও দেখা যায়।

তবে বরগুনার মত অঞ্চলে যথেষ্ট পরিমাণ নারী আইনজীবী না থাকা এবং বাংলাদেশের অধিকাংশ জেলা শহরগুলোর মত সেখানেও আইনজীবীদের মধ্যে রাজনৈতিক প্রভাব ব্যাপক হওয়ায় আয়শা সিদ্দিকার জন্য আইনজীবী পাওয়ার বিষয়টি আরও কঠিন হচ্ছে বলে মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা।

বরগুনার মত ছোট শহরে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকার কারণে অনেক সময় চাইলেও সাহস করে এগিয়ে আসেন না অনেক আইনজীবী।

অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেরও সুর বদলে গেছে। কয়েকদিন আগে মিন্নিকে যেখানে জাতীয় বীরের মর্যাদা দেওয়া হচ্ছিল, আজ তার পক্ষে কেউ নেই। মিন্নিকে নিয়ে এখন চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত