জনবল সঙ্কটে হাসপাতাল, স্বাস্থ্য সেবা ব্যাহত
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ এপ্রিল ২০১৯, ১১:৩৩
তীব্র জনবল সঙ্কটের কারণে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। ১শ’শয্যার অপার্যাপ্ত জনবল কাঠামো দিয়ে ২’শ ৫০ শয্যার হাসপাতাল পরিচালনা করতে গিয়ে রীতিমতো হাফিয়ে উঠেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্ট সুত্র জানা যায়, প্রারম্ভিক অবস্থায় কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালটি ৫০ শয্যার ছিল। পরবর্তী ধাপে এই হাসপাতালটিকে ১শ’শয্যায় উন্নীত করা হয়। সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসপাতালটিকে ২৫০ শয্যার ঘোষণা দেন।
কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে হাসপাতালটিতে শয্যার সংখ্যা বাড়লেও জনবল সংখ্যা বাড়ানো হয়নি। এর পাশাপাশি অবকাঠামোগত সমস্যা লেগেই আছে।
সুত্র মতে, ১শ’ শয্যা হাসপাতালের মঞ্জুরীকৃত জনবল কাঠামো অনুযায়ী ৪২ জন চিকিৎসকের স্থলে চিকিৎসক আছেন মাত্র ১২ জন। চিকিৎসকের শুন্য পদ ৩০টি।
দ্বিতীয় শ্রেণির ১৬৮টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছে ১৫৫ জন। এখানে শুন্য পদের সংখ্যা ১২টি। তৃতীয় শ্রেণির ২৮টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছে ১০ জন। এখানে শুন্য পদের সংখ্যা ১৮টি।
চতুর্থ শ্রেণির ২৮টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছে ১০ জন। সেখানে শুন্য পদের সংখ্যা ১৮টি। সবমিলে শুন্য পদের সংখ্যা দাড়িয়েছে ৭৮টিতে। আইনি জটিলতার কারণে এই ৭৮টি শুন্যপদের নিয়োগ কার্যক্রম থমকে আছে।
এদিকে- দীর্ঘদিন ধরে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের জনবল কাঠামো মঞ্জুরীর ফাইলটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় ঝুলে আছে বলে সুত্রটি জানায়।
সুত্র আরো জানায়, কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে অর্থপেডিক চিকিৎসক থাকলেও এক্স এআরএম মেশিন নেই। ফলে হাড় ভাঙ্গা রোগীদের জটিল অপারেশনগুলি অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে করা সম্ভব হচ্ছে না।
এদিকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের জন্য নতুন একটি ৮ তলা ভবন ২০১৬ সালে হস্তান্তর হবার কথা থাকলেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের গাফিলাতির কারণে ভবনটির নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে এসে স্থবির হয়ে পড়েছে।
ফলে ১শ’শয্যার অবকাঠোমার হাসপাতালে গাদাগাদি করে ২৫০ জন রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিতে হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্বাবধায়ক ডাঃ অমিত কুমার বসু বাংলাদেশ জার্নালকে জানিয়েছেন ১শ’শয্যার জনবল দিয়ে ২৫০ শয্যার হাসপাতাল পরিচালনা করা রীতিমতো অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
সেই ১শ’শয্যার জনবলের মধ্যেও চিকিৎসক এবং নার্স সহ ৭৮টি পদ দীর্ঘদিন ধরে শুন্য রয়েছে। এছাড়াও অবকাঠামোগত সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করায় রোগীদেরকে বারান্দায় ঠাসাঠাসি করে রেখে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।
সৃষ্ট এই সঙ্ককটময় পরিস্থিতির আলোকে ভারপ্রাপ্ত তত্বাবধায়ক ডাঃ অমিত কুমার বসু জরুরী ভিত্তিতে হাসপাতালের নতুন ভবনটি হস্তান্তর সহ জনবল নিয়োগের কার্যক্রম তড়িৎ গতিতে সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডাঃ এস, এম আমিনুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, আগামি ১০ দিনের মধ্যে চিকিৎসক সঙ্কট থাকবে না। এছাড়া আগামী ১ মাসের মধ্যে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের দোদুল্যমান কার্যক্রমটি সমাপ্ত করা হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
বাংলাদেশ জার্নাল/টিপিবি