ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

স্কুলে শিক্ষার্থীদের সামনেই প্রাথমিক শিক্ষকদের মারামারি, আহত ৪

  ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:৩৭

স্কুলে শিক্ষার্থীদের সামনেই প্রাথমিক শিক্ষকদের মারামারি, আহত ৪

দেরী করে পতাকা উত্তোলনকে কেন্দ্র করে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে বিদ্যালয়ে পাঠদান চলাকালীন শিক্ষার্থীদের সামনেই শিক্ষকদের মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের চারজন আহত হয়ে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন।

রোববার দুপুর ১২টায় উপজেলার কলন্দা পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- কলন্দা পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একরামুল হক চৌধুরী, সহকারী শিক্ষক আব্দুস সবুর, সুলতানা রাজিয়া ও স্কুল পরিচালনা কমিটির ইউপি সদস্য আবুল কাসেম।

এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক একরামুল হক চৌধুরী বলেন, সকালে পতাকা উত্তোলনের সময় দড়ি ছিঁড়ে গেলে পুনরায় কিনে নিয়ে আসার পর দুপুর ১২টার সময় পুনরায় পতাকা উত্তোলন করি। ওই সময় সহকারী শিক্ষক আব্দুস সবুর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে মোবাইল ফোন দিয়ে ছবি তুলতে থাকেন। আমি ছবি তুলতে বাধা দিলে আমাকে গালিগালাজ, মারপিট এবং গালে কামড়ে দেয়।

সহকারী শিক্ষক আব্দুস সবুর বলেন, গত ১৫ দিন ধরে পতাকার দড়ি ছেঁড়া। আমি বিষয়টি বার বার প্রধান শিক্ষককে বলার পরও কর্ণপাত তিনি করেননি। প্রতিদিন দেরি করে পতাকা উত্তোলন করা হয় বিদ্যালয়ের। তার প্রমাণ হিসেবে আমি ছবি তুলতে গেলে স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল কাসেম ও প্রধান শিক্ষক আমাকে বেধড়ক মারপিট করে স্কুলের ঘরে অবরুদ্ধ করে রাখে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল কাসেম বলেন, আমি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য। বিষয়টি প্রধান শিক্ষক আমাকে জানালে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে ছবি তোলার কারণ জানতে চাইলে সহকারী শিক্ষক সবুর আমাকে মারপিট শুরু করে। এ সময় প্রধান শিক্ষক এগিয়ে আসলে তিনিও আহত হন।

বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সহকারী শিক্ষিকা রাজিয়া সুলতানা ও আব্দুস সবুরকে একটি ঘরে অবরুদ্ধ অবস্থায় রেখেছিল প্রধান শিক্ষক ও স্থানীয় ইউপি সদস্য। আমরা গিয়ে তাদের উদ্ধার করি।

বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি মোসাব্বেরুল হক বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। কোনো পক্ষ রাত ৮টা পর্যন্ত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে বিয়ষটি তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, চলতি বছর বিদ্যালয়ে সংস্কারের কাজের ২ লাখ টাকা এবং বিদ্যালয় ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা বা স্কুল লেভেল ইমপ্রুভমেন্ট (স্লিপ) কাজের জন্য ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। সংস্কার কাজ শেষ হলেও শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আনিছুর রহমান বিদ্যালয় পরিদর্শনের সময় সংস্কার কাজের কয়েকটি অনিয়ম পান। এছাড়াও স্লিপের বরাদ্দ বাবদ ৪০ হাজার টাকা উত্তোলন করলেও এখন পর্যন্ত কোনো কাজ করেনি। যদিও নিয়ম রয়েছে কাজ সম্পন্ন করার পর বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিল উত্তোলন করতে পারবেন।

উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা জাহিদ হাসান বলেন, জেলা শিক্ষা অফিসার আগামী সাত দিনের মধ্যে ওই বিদ্যালয় পুনরায় পরিদর্শন করে কাজগুলোর মান যাচাই করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সামশুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের সামনে শিক্ষকদের মারপিটের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। মুঠোফোনে ঘটনার কথা শুনেছি। তবে কোনো পক্ষই এখন পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে বিভাগীয়ভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত