ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২২ মিনিট আগে
শিরোনাম

ডিএমপি নির্দেশকে অগণতান্ত্রিক বললো ছাত্রজোট

  ঢাবি প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২১, ১৬:১৫

ডিএমপি নির্দেশকে অগণতান্ত্রিক বললো ছাত্রজোট
ছবি- প্রতিনিধি

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠান উপলক্ষে ডিএমপির নির্দেশ উপেক্ষা করে ২৬ মার্চ নরেন্দ্র মোদির আগমনের প্রতিবাদে কর্মসূচি দিয়েছেন প্রগতিশীল বাম সংগঠনগুলোর মোর্চা। তারা বলছেন, ডিএমপির এমন নির্দেশনা গণতান্ত্রিক অধিকারের পরিপন্থী।

রোববার স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠান চলাকালীন রাজনৈতিক কর্মসূচি না করার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত)মনিরুল ইসলাম। সেইসঙ্গে অনুরােধ উপেক্ষা করে কর্মসূচি পালন করলে তা কঠোর হস্তে দমন করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে পুলিশ।

তবে ডিএমপির এমন নির্দেশনাকে গণতান্ত্রিক অধিকারের পরিপন্থী উল্লেখ করে তা প্রত্যাখ্যান করে কর্মসূচি দিয়েছেন বাম ধারার ছাত্র সংগঠনগুলো।

শুক্রবার বিকেল ৩টায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মোদিবিরোধী সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল এবং ২৫ মার্চ সন্ধায় মশাল মিছিল করবে সংগঠনগুলো।

বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনের বাইরে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ ঘোষণা দেন তারা। সংবাদ সম্মেলন শেষে মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্যে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলন দুপুর ১২টায় হওয়ার কথা থাকলেও মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রলীগের অবস্থানের কারণে সংবাদ সম্মেলন করতে পারেননি বলে অভিযোগ তুলেছেন তারা। পরে সাড়ে ১২টার মধুর ক্যান্টিনের বাইরে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।

ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ বলেন, আমরা ৯টি ছাত্র সংগঠন একত্রে মধুর ক্যান্টিনের ভেতরে সংবাদ সম্মেলন করার কথা থাকলেও আমরা সেখানে বসার জায়গাটুকুও পাইনি। সকাল থেকে ছাত্রলীগ মধুর ক্যান্টিনে দখল করে বসে আছে। আমরা তাদের নেতৃবৃন্দদের বারবার ফোন দিয়েছি যে আমরা একটি সংবাদ সম্মেলন করবো।

‘মধুর ক্যান্টিনে কোনো নির্দিষ্ট ছাত্র সংগঠনের নয়। এখানে সকল ছাত্র সংগঠনে সবার যায়গা। এর মধ্য দিয়ে এখানে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক চর্চা হয়। আজকে এই চর্চাটুকুকেও কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি আল কাদেরী জয়, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি ইকবাল কবীর, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (বাসদ-মাক্সবাদী) সভাপতি মাসুদ রানা, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক জাহিদ সুজন, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের সভাপতি আতিফ অনিক, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি বিপুল চাকমা, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশের সভাপতি মিতু সরকার, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল সভাপতি আরিফ ময়নুদ্দিন প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ। তিনি বলেন, বর্তমানে আমরা একটি ভয়াবহ দুঃসময়ের মধ্যে আছি। আজ মানুষের সব ধরণের কথা বলার অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত শাসকগােষ্ঠী জনগণকে বিচ্ছিন্ন রেখে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের হাক ডাক দিচ্ছে। আর সেই অনুষ্ঠানে আসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি।

লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, ভারতের দাঙ্গাবাজ, সাম্প্রদায়িক প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদিকে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমন্ত্রণ জানানাে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী। এই নরেন্দ্র মােদির হাতে এখনাে গুজরাটের হাজার হাজার মানুষের রক্তের দাগ লেগে আছে। গত বছর দিল্লী কিলিংয়ের ঘটনা মােদি সরকারের নির্দেশে ঘটেছে।

‘মানবতাবিরােধী নাগরিকত্ব আইন করে আসাম ও পশ্চিম বাঙলা থেকে কয়েক লক্ষ বাঙালি জনগণকে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়ার আয়ােজন করেছে মােদি সরকার। ভারতের জনগণের ন্যায়সঙ্গত সমন্ত আন্দোলনকে কঠোরভাবে দমন করছে। সাম্প্রতি কৃষক আন্দোলনে আমরা মােদি সরকারের ফ্যাসিস্ট রুপ দেখেছি। এমন একজন ব্যক্তিকে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে নিয়ে আসা গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সাথে সাংঘর্ষিক।’

তারা আরো বলেন, আমাদের দেশের শাসকগােষ্ঠী কথায় কথায় ভারতকে আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে আখ্যায়িত করে। অথচ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে প্রায়শই বিএসএফ গুলি করে বাংলাদেশের জনগণকে হত্যা করছে। এসব হত্যার কোনাে বিচার হচ্ছে না। তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা বাংলাদেশ এখনাে পায়নি। তিস্তা চুক্তির কথা থাকলেও দীর্ঘকাল অতিক্রান্ত হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। নদী, বন্দর, সুন্দরবন-সমন্ত কিছু ভারতীয় আগ্রাসনের শিকার।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত