ঢাকা, রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

ক্ষমতায় ফিরলেও বাজিতে হেরেছেন ট্রুডো

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৮:৩১  
আপডেট :
 ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:৪৫

ক্ষমতায় ফিরলেও বাজিতে হেরেছেন ট্রুডো
কানাডায় প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ছবি: বিবিসি

কানাডায় প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর লিবারেল পার্টি অল্প ব্যবধানে নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় ফিরেছে। কিন্তু পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। এ নিয়ে জাস্টিন ট্রুডো তৃতীয়বারের মতো কানাডার নির্বাচনে জয়ী হলেন। কিন্তু তার সমালোচকরা বলছেন, এ নির্বাচন সময়ের অপচয় ছাড়া আর কিছু নয়। খবর বিবিসির।

নির্বাচনে লিবারেলরা ১৫৬টি আসন পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার জন্য তাদের দরকার ছিল ১৭০টি আসন। ট্রুডো নির্ধারিত সময়ের আগে এই আগাম নির্বাচন ডেকেছিলেন পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের আশায়।

কনজারভেটিভ পার্টি প্রধান বিরোধী দল হিসেবে তাদের অবস্থান ধরে রেখেছে এবং মোটামুটি ১২২টির মতো আসনে জয়ী হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

স্থানীয় সময় সোমবার দিবাগত মধ্যরাতে মন্ট্রিয়েলে সমর্থকদের সামনে দেয়া ভাষণে জাস্টিন ট্রুডো বলেন, ‘এখনো অনেক ভোট গণনা বাকি আছে। কিন্তু আজ রাতে আমরা যা দেখেছি তাতে এটা স্পষ্ট - কানাডার মানুষ প্রগতিশীল পরিকল্পনাকেই বেছে নিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা এমন এক সরকারকে বেছে নিয়েছেন যারা আপনার জন্য লড়াই করবে এবং আপনাদের জন্য কিছু করবে।’

বাজি ধরে ব্যর্থ ট্রুডো: কানাডায় করোনা ভাইরাসের চতুর্থ ঢেউয়ের মধ্যে এ নির্বাচন হয়েছে। এটি ছিল কানাডার ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যয়বহুল নির্বাচন। এতে খরচ হয়েছে প্রায় ৪৭ কোটি মার্কিন ডলার। কিন্তু নির্বাচনী ফলের যে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে, তাতে দুই বছর আগে পার্লামেন্টের যে চেহারা ছিল, এবারের নির্বাচনে একদম সেরকম একটি পার্লামেন্টই হতে যাচ্ছে।

মাত্র দুই বছরের মাথায় ট্রুডো যখন হঠাৎ এ নির্বাচন ডাকেন, তখন এটিকে পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের জন্য একটি চেষ্টা হিসেবেই দেখেছেন অনেকে। ট্রুডোকে এরকম একটা নির্বাচনের দরকার কেন পড়লো - তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়েছে। কনজারভেটিভ পার্টির নেতা এরিন ও'টুল এটিকে অর্থ এবং সময়ের অপচয় বলে বর্ণনা করেছেন।

কনজারভেটিভ পার্টির নেতা এরিন ও'টুল

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রায় ৬০ কোটি কানাডিয়ান ডলার খরচের পর জনগণ তাকে আবারও একটি সংখ্যালঘু সরকার গঠনের জন্য ফেরত পাঠিয়েছে, অন্যদিকে আমাদের দেশের বিভক্তি আরও গভীর হয়েছে।’ তবে ট্রুডোর যুক্তি, এ নির্বাচনের মাধ্যমে তার পরবর্তী সরকারকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার রায় দিয়েছে জনগণ।

নির্বাচনের সময় জাস্টিন ট্রুডোকে ঘিরে কিছু পুরোনো বিতর্ক নতুন করে মাথাচাড়া দেয়। তিনি যে মেকআপ করে অতীতে ‘কালো মুখ’ এবং ‘বাদামী মুখ’ নিয়ে দুটি পার্টিতে হাজির হয়েছিলেন, সেটিকে অনেকে ‘বর্ণবাদী’ বলে সমালোচনা করেন।

একটি নির্বাচনী সমাবেশে তাকে করোনা ভাইরাস টিকা বিরোধী বিক্ষোভকারীরা হেনস্থাও করেন। জাস্টিন ট্রুডোর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন যদিও রয়ে গেছে, লিবারেল পার্টির এমপি পাবলো রদ্রিগেজ বলেছেন, ফল যেটাই হোক, লিবারেল পার্টির শতভাগ সমর্থন তার পেছনে আছে।

এ নির্বাচনে বামপন্থী নিউ ডেমোক্রেট পার্টি (এনডিপি) ‘অতি ধনীদের ওপর কর বসাও’ বলে যে নির্বাচনী প্রচার চালায়, তার লক্ষ্য ছিল প্রগতিশীল ভোটারদের সমর্থন পাওয়া। জগমিৎ সিং-এর নেতৃত্বাধীন এনডিপির এ কৌশল লিবারেল পার্টিকে বেশ হতাশ করেছে। কারণ তারা কয়েকটি আসন পেতে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।

পাশে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী নিয়ে সমর্থকদের দিকে হাত নাড়ছেন এনডিপির জগমিৎ সিং

তবে কনজারভেটিভ পার্টির নতুন নেতা এরিন ও’টুলের জন্য এ ফল বেশ হতাশাজনক। তিনি দলের সমর্থনের ভিত্তি বাড়ানোর জন্য একটি মধ্যপন্থী অবস্থান থেকে নির্বাচনী প্রচার চালান।

কানাডায় সংখ্যালঘু সরকার যদিও বেশ সাধারণ একটা ব্যাপার, জোট সরকার গঠনের ব্যাপারটি আবার বেশ বিরল। ট্রুডোকে এখন পার্লামেন্টে কোন আইন পাশ করতে হলে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতায় আসতে হবে।

নতুন পার্লামেন্টে এনডিপি ‘কিংমেকার’ হিসেবে আবির্ভূত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তারা গুরুত্বপূর্ণ আস্থা ভোট বা অন্যান্য নীতিগত সিদ্ধান্তে লিবারেল পার্টিকে সমর্থন দিতে পারে।

বাংলাদেশ জার্নাল / টিটি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত