সাংবাদিক হত্যার অপরাধে রাম রহিমের যাবজ্জীবন
ভারতে একজন সাংবাদিককে হত্যার দায়ে ধর্মীয় গুরু রাম রহিম সিংকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
ডেরা সাচ্চা সওদা নামের ধর্মীয় গোষ্ঠীর প্রধান ৫১ বছর বয়স্ক রাম রহিমের আস্তানায় নারীদের যৌন নির্যাতনের শিকার হবার খবর প্রকাশ করে দিয়েছিলেন একটি হিন্দি পত্রিকার সম্পাদক রাম চন্দর ছত্রপতি। এরপরই তাকে হত্যা করা হয়।
রাম রহিম সিং তার দুজন নারী অনুসারীকে ধর্ষণ করার দায়ে এর আগে থেকেই ২০ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন।
সেই কারাকক্ষ থেকেই ভিডিও লিংকের মাধ্যমে হরিয়ানা রাজ্যের পঞ্চকুলা আদালতে এই খুনের মামলার দণ্ডাদেশ শোনেন।
গুরমিত রাম রহিম সিং নিজেকে ধার্মিক আধ্যাত্মিক গুরু বলে তুলে ধরতেন এবং সারা দুনিয়া থেকে আসা অনুসারীদের তিনি কৌমার্য এবং ব্রহ্মচর্যের শপথ নিতে বলতেন।
কিন্তু ২০০২ সালে ছ্ত্রপতি তার 'পুরা সাচ' নামের পত্রিকায় একটি চিঠি প্রকাশ করেন। নাম প্রকাশ না করে চিঠিটি লিখেছিলেন রাম রহিম সিংএর এক অনুসারী।
তিনি লেখেন, সেই ধর্মীয় গোষ্ঠীর ভেতরে যৌন অনাচারের কথা।
সাংবাদিক ছত্রপতির ছেলে অংশুল পরে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তার বাবাকে সহকর্মীরা সতর্ক করেছিলেন যে তাকে হত্যার চেষ্টা হতে পারে। কিন্তু জবাবে ছত্রপতি বলেছিলেন, ‘একজন প্রকৃত রিপোর্টার গায়ে বুলেট নিতে পারে, জুতো নয়।’
খবর প্রকাশের মাত্র পাঁচদিন পর ২০০২ সালের ২৪ অক্টোবর রাম রহিমের অনুসারীরা ছত্রপতিকে তার বাড়ির সামনেই গুলি করে। এর কয়েকদিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
তবে তিনি মারা যাওয়ার আগেই তার পত্রিকায় প্রকাশিত চিঠি নিয়ে তদন্তে নামে ভারতীয় পুলিশ। এরপরই একের পর এস বেরিয়ে আসতে থাকে রাম রহিম ও তার অনুসারীদের নানা অপরাধের কথা।
ধর্ষণের মামলায় রাম রহিম দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর ভারতে ব্যাপক সহিংসতা হয় , যাতে মারা যায় অন্তত ২৮ জন।
সবশেষ এ হত্যা মামলায় রাম রহিম সিংএর আরো তিনজন সহযোগীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার রুপি জরিমানার সাজা দেয়া হয়েছে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
এমএ/