ইরাকে বিক্ষোভ অব্যাহত, নিহত বেড়ে ১০০
ইরাকের রাজধানী বাগদাদের বিখ্যাত তাহরির স্কয়ারে শনিবারও জমায়েত হয়েছিল হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ জনতা। তাদের সরকার বিরোধী নানা স্লোগানে কেঁপে উঠেছিলো আকাশ বাতাশ। যথারীতি বরাবরের মতোই টিয়া গ্যাস আর গুলি চালিয়ে তাদের কণ্ঠস্বরগুলোকে নিস্তব্ধ করতে চেয়েছিলো নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। তাই এদিনও বেশ কয়েকজন নিহত হওয়ার খবর মিলেছে। গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া অব্যাহত বিক্ষোভে সবমিলিয়ে নিহত হয়েছে কমপক্ষে ১শ মানুষ।
শনিবার তাহরির স্কয়ারের বিক্ষোভে অংশ নেয়া মধ্যবয়সী শোওকি ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছেন। তিনি পুলিশের বুলেট আর টিয়ার গ্যাসের ধুঁয়া এড়িয়ে পালিয়ে আসতে পেরেছেন। তিনি বলেন, ‘যারা সরকারি স্নেপারদের (গুপ্ত ঘাতক) হামলার শিকার হয়নি তারা ভাগ্যবান।’
বেকারত্ব, অর্থনৈতিক দুরবস্থা, ঘুষ ও সরকারের নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে গত পাঁচদিন ধরে রাজধানী বাগদাদসহ ইরাকের বিভিন্ন শহরে একটানা বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে বিক্ষেুব্ধ জনতা। বিক্ষোভে অংশগ্রহণতকারীদের সিংহভাগই বয়সে তরুণ। তাদের তীব্র স্লোগানে প্রকম্পিত হচ্ছে শহরের আকাশ বাতাশ। সরকার বৃহস্পতিবার কারফিউ দিয়েও বিক্ষোভকারীদের নিবৃত্ত করতে পারেনি।
তারা কারফিউ ভেঙে জড়ো হয়েছিলো শহরের কেন্দ্রস্থলে। ফলে কারফিউ শিথিল করতে বাধ্য হয়েছে ইরাকি সরকার। বিক্ষোভকারীদের প্রতি শান্ত থাকার বাণী প্রচার করেছেন প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদুল মাহদি। তবে কারফিউ শিথিল করলেও এখনও বন্ধ রয়েছে রাজধানী বাগদাদসহ চারটি প্রধান শহরের টেলিফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ। কেননা বিক্ষোভকারীরা ইন্টারনেটের মাধ্যমেই বিক্ষোভের খবরাখবর ও তথ্যাদি প্রচার করে থাকেন।
শনিবার ইরাকের মানবাধিকার হাই কমিশন এক বিৃতিতে জানায়, বিক্ষোভে এ পর্যন্ত প্রায় ১শ মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো ৪ হাজারের বেশি মানুষ। আটক করা হয়েছে আরো হাজার হাজার মানুষকে।
৫১ বছর বয়সী শোওকি জানান, শুধু টিয়ার গ্যাস বা রাবার বুলেট নয়, বিক্ষোভকারীদের বেধরক পেটাচ্ছে দাঙ্গা পুলিশ। অনেককে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
তিনি এই বিক্ষোভে যোগ দেয়ার কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন, ‘মানুষজন অনাহারে থাকতে না পেরে রাস্তায় নেমে এসেছে। আমাদের এখানে প্রচুর তেল মজুদ অছে। কিন্তু তারওপরও দেশের কোনো উন্নয়ন দেখতে পাচ্ছি না। তাহলে এখানে কি হচ্ছে?’
আর এ কারণেই বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে সে দেশের সাধারণ মানুষ। তার বলছে, ‘আমাদের তো হারানোর কিছু নাই। চলমান অবস্থার পুরোপুরি পরিবর্তন না হওয়া অব্দি আমরা থামবো না।’
সূত্র: আল জাজিরা
এমএ/