ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

আখের রসের পুষ্টিগুণ

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২১, ১৬:৫৯

আখের রসের পুষ্টিগুণ
ফাইল ছবি

মিষ্টি রসে ভরা অর্থকরী ফসল আখ। পানিশূন্যতা দূরীকরণে ও জন্ডিস রোগের মহৌষুধ হিসেবেও কাজ করে বহুবর্ষজীবী এ উদ্ভিদটি। মোটামুটি সব ঋতুতেই পাওয়া যায় আখ। এতে রয়েছে মিনারেল, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও আয়রন যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। আখের রসে দেহের ক্লান্তি দূর হয়ে যায় নিমেষে।

২৫০-৩০০ মিলিলিটার আখের রসে সাধারণত ১১১ ক্যালরি থাকে। এর মধ্যে কার্বোহাইড্রেট থাকে ২৭ গ্রাম, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও পটাসিয়াম থাকে ০.২৭ গ্রাম।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করে

আখের রসে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম,পটাসিয়াম, আয়রন,ম্যাঙ্গানিজ থাকে। যা ব্রেস্ট ক্যানসার এবং প্রস্টেড ক্যানসার রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম।

লিভারের সমস্যা

আখের রসে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা সংক্রমণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং ইমিউন সিস্টেমকে উন্নত করে। এছাড়াও লিভারে সংক্রমণ হওয়া রক্ষা করে এবং বিলিরুবিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। এই কারণে ডাক্তাররা পরামর্শ দেন জন্ডিস রোগীদের আখের রস পান করার জন্য। এছাড়াও আখের রস ক্ষারীয় প্রকৃতির হওয়ায় শরীরের ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য রক্ষা করায় সাহায্য করে। জন্ডিসে আক্রান্ত হলে প্রতিদিন দুই বেলা আখের রস পান করুন।

হৃদরোগ উপশমে

হার্ট ভালো রাখার পাশাপাশি হার্ট অ্যাটাকও রুখতে সাহায্য করে আখের রস। শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের নিঃসরণ কমাতেও ভূমিকা রাখে এটি।

হজমশক্তি

আখের রসে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাসিয়াম এবং ফাইবার। এটি খেলে কোষ্ঠ কাঠিন্যের সমস্যা দূর হওয়ার পাশাপাশি হজম শক্তিও বেড়ে যায়।

কিডনির সমস্যা দূর করে

আখের রস প্রাকৃতিক অ্যাল্কালাইন যা অ্যান্টিবায়োটিক এজেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং কিডনির সুস্থতা নিশ্চিত করতে সহায়তা করে। এছাড়াও আঁখের রস পানের অভ্যাস বুক জ্বালা পোড়া ধরণের সমস্যা এবং মূত্র নালীর ইনফেকশন প্রতিরোধ করে। আখের রস শরীরে প্রোটিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় তাই এটি কিডনির স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। লেবুর রস, আখের রস এবং ডাবের পানি একসাথে গ্রহণ করলে ইউরিন ইনফেকশন, যৌন রোগ, কিডনি এবং প্রস্টাটাইটিসের কারণে ঘটিত জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে।

ইনস্ট্যান্ট অ্যানার্জি বুস্টার

তাহলে এক গ্লাস আখের রস পান করুন যদি আপনি ডিহাইড্রেশনে ভুগে থাকেন। কারণ আখের রস খুব ভালো উৎস তাৎক্ষণিক শক্তির সঞ্চয় ও তৃষ্ণা নিবারণের। আখের রসে চিনি বা সুক্রোজ থাকে যা খুব সহজেই শরীরে শোষিত হয়। এই চিনি শরীরের হারিয়ে যাওয়া চিনির মাত্রাকে পুনরায় পূর্ণ করতে কাজে লাগে। এই রসে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্লুকোজ। এই গ্লুকোজ মুহূর্তেই মানব দেহ রিহাইড্রেট করে চাঙা করে তোলে।

ত্বকের জন্য উপকারী

আখের রসে আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড থাকায় তা ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এই অ্যাসিড ব্রণ কমায়, ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া ঠেকায় এবং ত্বকে আর্দ্রতা বজায় রাখে। এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে মুখের ব্রণ, বলিরেখা দূর করতে। আখের রস যদি মুখে মাস্ক হিসেবে লাগিয়ে রাখা যায় তাহলে ত্বকের রুক্ষতা দূর হয়ে যায়। সেই সঙ্গে ত্বক হয়ে উঠে আরও বেশি উজ্জ্বল ও সতেজ।

হাড় ও দাঁত

বাড়ন্ত শিশুরা যদি আখ চিবিয়ে রস পান করে তাহলে দাঁতের সমস্যা কম হয়। আখের রসে ক্যালসিয়াম থাকে যা দাঁত ও হাড়ের শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। আখের রসের প্রাকৃতিক অ্যাল্কালাইন অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে যা দাঁতের ক্ষয় বা মাড়ির ইনফেকশন প্রতিরোধে সহায়তা করে থাকে। এছাড়াও আখের রস মুখের দুর্গন্ধ দূর করতেও বিশেষভাবে সহায়ক।

ব্রণ দূর করে

ব্রণের মত ত্বকের সমস্যা দূর করতে অত্যন্ত কার্যকরী আখের রস । আখের রসের সাথে মুলতানি মাটি মিশিয়ে একটি ঘন পেস্ট তৈরি করতে হবে। এই পেস্টটি মুখে ও ঘাড়ে লাগিয়ে ২০ মিনিট রাখুন। তারপর ভেজা তোয়ালে দিয়ে মুখ ও ঘাড় মুছে পরিষ্কার করুন। সপ্তাহে একদিন এটি ব্যবহার করুন। আখের রসে আলফা হাইড্রক্সি এসিড থাকে যা অনেকটা গ্লাইকলিক এসিডের মতোই কাজ করে। ত্বকের ছিদ্রগুলো বন্ধ হয়ে গেলে ব্রণের সৃষ্টি হয়। আখের রস ত্বককে এক্সফলিয়েট হতে সাহায্য করে এবং মরা চামড়ার জমার পরিমাণ কমায়।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনআর

  • সর্বশেষ
  • পঠিত