ঢাকা, রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১২ মিনিট আগে
শিরোনাম

ঢাকা-১৮ উপনির্বাচন

বিএনপিতে করোনার থাবা

  কিরণ শেখ

প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২০, ১৮:৪২

বিএনপিতে করোনার থাবা

বৈশ্বিক মহামারি করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে শারীরিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। এই নির্দেশনা অমান্য করে নেতাকর্মী ও সমর্থকদেরকে নিয়ে ঢাকা-১৮ আসনে উপনির্বাচনে নির্বাচনী গণসংযোগ ও প্রচার-প্রচারণা করছেন বিএনপির প্রার্থী এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন। আর নির্বাচনী গণসংযোগ করতে গিয়ে ইতিমধ্যে দলটির অনেক নেতাকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এজন্য দলটির শীর্ষ নেতারা নির্বাচন পরিচালনা কমিটিকে দোষারোপ করছেন।

তাদের ভাষ্য, করোনা ভাইরাসের সময় যখন মানুষ ঘরে থাকছে, সেই সময় বিএনপির কয়েকজন নেতা শুধুমাত্র নিজেদের স্বার্থে আসন্ন ঢাকা-১৮ আসনে উপনির্বাচনে নির্বাচনী গণসংযোগে নেতাকর্মীদের নিয়ে গিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছেন।

ঢাকা-১৮ আসনে উপনির্বাচনে নির্বাচনী গণসংযোগ করতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, সহ প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক গাজী রেজওয়ানুল হোসেন রিয়াজ প্রমুখ।

এর বাইরে গণসংযোগে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি এবং দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতাকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলেও বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।

সূত্রটি জানায়, করোনা পজিটিভ বিএনপির নেতাকর্মীদের সংস্পর্শে এসে তাদের পরিবারের সদস্যরাও সংক্রমিত হচ্ছেন। আফরোজা আব্বাসের সংস্পর্শে তার স্বামী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য মির্জা আব্বাস করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর করোনায় আক্রান্ত বিএনপির অন্য নেতাদের পরিবারের সদস্যরা ঝুঁকিতে রয়েছেন।

এবিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম এক সদস্য বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, আমরা জানি, বিগত নির্বাচনগুলোর মত এই নির্বাচনেও আমরা পরাজিত হব। কারণ সরকার আমাদের জিততে দেবে না। এটা জানার পরেও আমরা কেনো করোনা সংক্রমণের সময় আমাদের নেতাকর্মীদেরকে গণসংযোগে নিয়ে গিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেবো। কিন্তু আমাদের কিছু নেতা শুধুমাত্র নিজেদের স্বার্থের জন্য নেতাকর্মীদের গণসংযোগে নিয়ে যাচ্ছেন।

জানতে চাইলে ঢাকা-১৮ আসনে উপনির্বাচনে বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, করোনায় সময় যে পরিস্থিতি এবং যে অবস্থা- এই অবস্থায় নির্বাচন কমিশন ভোট করছেন। আর এই অবস্থায় নির্বাচন করে ইসি ও সরকার মানুষকে ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছে। সুতরাং এজন্য সরকারকে দায়-দায়িত্ব নিতে হবে।

এদিকে এই আসনের প্রার্থীতা নিয়ে শুরু থেকেই জটিলতায় বিএনপি। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাতকারের দিন বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দুই পক্ষের হামলার ঘটনায় দলের ১৭ জন নেতাকর্মী আহত হয়। এ ঘটনার জন্য সব মনোনয়ন প্রত্যাশীরা এস এম জাহাঙ্গীরকে দোষারোপ করে লিখিত অভিযোগ দেয় দলটির কাছে। সেই ঘটনায় কাউকে দোষী না করে এবং কাউকে শাস্তি না দিয়ে প্রার্থী ঘোষণা করায় বিক্ষুব্ধরা দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বাসায় ডিম ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এই ঘটনায় ১২ জন নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করে দলটি। এতে আরো বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এই আসনের নেতাকর্মীরা।

বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না করার জন্য দলের প্রার্থীকে প্রতিরোধ করতে এস এম জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল, কুশপুত্তলিকা দাহ, কালো পতাকা প্রদর্শন এবং জাহাঙ্গীরের সমর্থনকারী ৬ জন নেতার বাসায় ডিম হামলা করেছেন বিক্ষুব্ধরা।

প্রসঙ্গত, ঢাকা-১৮ উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১২ নভেম্বর। আওয়ামী লীগের সাহারা খাতুনের মৃত্যুতে ঢাকা-১৮ আসন শূন্য হয়।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত