সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রেখেছে সরকার: ফখরুল

আন্দোলনকে দমন করতে সরকার ফ্যাসিবাদী কায়দায় হামলা-মামলা-দমন-নিপীড়নের সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিএনপির ৬১ নেতাকে শোকজ

‘সরকারের দমন-নিপীড়নের ধারাবাহিকতায় গত রাত থেকে চট্টগ্রাম, নওগাঁ, খুলনা, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, পটুয়াখালীসহ বিভিন্ন জেলায় বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, হামলা চালিয়ে আহত করা, মিথ্যা মামলা দায়ের এবং পটুয়াখালী জেলা বিএনপি কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে’ এই বিবৃতি দেন ফখরুল।

মির্জা ফখরুল বলেন, জুলুমবাজ সরকারের নির্বিচারে মানুষ হত্যা, শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশে হামলা এবং জনগণের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের প্রতিবাদে বিএনপি আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এই আন্দোলনকে দমন করতে গণবিরোধী সরকার ফ্যাসিবাদী কায়দায় হামলা-মামলা-দমন-নিপীড়নের সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

‘গত ২৯ ও ৩০ মার্চ মহানগর ও জেলা সদরে বিএনপির কর্মসূচিতে হামলার পর এখন মিথ্যা মামলা দায়ের করে নেতাকর্মীদেরকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান, হয়রানী ও জুলম চালানো হচ্ছে। চট্টগ্রামে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, মিথ্যা মামলায় হয়রানী চলছে।’

গত রাতে পটুয়াখালী জেলা বিএনপি কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই হামলায় ৩ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেপ্তার না করে উল্টো বিএনপির ৯ জন নেতাকর্মীকে আটক করেছে।

খুলনা মহানগর বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিনকে গত রাতে তার বাড়ির গ্রিল ভেঙে গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলেও অভিযোগ করেন ফখরুল।

ফখরুল বলেন, গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগের রাতে ভোটের মাধ্যমে নির্লজ্জভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী আওয়ামী সরকার এখন আরও বেপরোয়াভাবে ফ্যাসিবাদী কায়দায় দেশ শাসন করছে। বিএনপিসহ বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদেরকে রাজনীতির অঙ্গন থেকে সরিয়ে দিতে তাদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন যেনো বর্তমান আওয়ামী সরকারের দৈনন্দিন কর্মসূচিতে পরিণত হয়েছে। দেশকে বিরোধী দলশূন্য করতে বিএনপির যে কোনো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা, গুলি ও নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তারা।

গতকাল মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও গ্রেপ্তার বর্তমান সরকারের ধারাবাহিক অপকর্মেরই অংশ মন্তব্য করে তিনি বলেন, সভা-সমাবেশ করা মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হলেও ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলের কর্মসূচি পণ্ড করতে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, তাদের ওপর হামলা, নির্যাতন-নিপীড়ন এবং গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, অপহরণ, চাঁদাবাজী ও দখলবাজীকে সরকারি নীতিতে পরিণত করেছে। সরকার দেশ শাসনে নজীরবিহীন ব্যর্থতা ঢাকতেই বিএনপি নেতাকর্মীদের কারাগারে আটকে রাখতে সুদূরপ্রসারী মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, এসব মাস্টারপ্ল্যানের উদ্দেশ্যই হচ্ছে অবৈধ ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করা। তবে সরকারের সকল অপকর্ম ও অপশাসনের মূলোৎপাটনে জনগণের ক্ষোভ এখন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। জনদাবি মেনে দমন-নিপীড়ন বন্ধ এবং পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করলে বর্তমান সরকারকে জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএস/এসকে