ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২০ মিনিট আগে
শিরোনাম

দেশের স্বার্থেই ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন: প্রধানমন্ত্রী

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২২:১৫

দেশের স্বার্থেই ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের স্বার্থেই ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। কেউ কেউ ব্যক্তি স্বার্থ থেকে মতামত দিয়ে এ আইনের বিরোধীতা করছেন। বৃহস্পতিবার রাতে দশম জাতীয় সংসদের ২২তম অধিবেশনের শেষ দিনে সমাপনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

সংসদ নেতা বলেন, আমি দেখলাম, আমাদের দেশের বেশ কয়েকজন স্বনামধন্য এডিটর বা সাংবাদিক বা সমাজের বিজ্ঞজন, তারা এটার বিরুদ্ধে মতামত দিয়েছে। তারা শুধু তাদের কণ্ঠ রোধ হলো কি না, সেটাই দেখলেন। তাদের কণ্ঠ তো রোধ হয়নি। কণ্ঠ আছে বলেই তো তারা মতামত দিতে পারছেন। কণ্ঠ রোধ করলে মতামত দেওয়ার মতো ক্ষমতা তাদের থাকত না।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ দেশে মার্শাল ল ছিল। অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী ছিল। যারা তাদের পদলেহন করেছে, তোষামোদি করেছে, তাদের অসুবিধা হয়নি। কিন্তু তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে যারা কথা বলতে গেছেন, তাদের অসুবিধা হয়েছে। বেশি দূর যেতে হবে না। ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা কিভাবে সাংবাদিকদের নির্যাতন করেছে, সেটাও তারা ভুলে গেছেন। এখন তারা ডিজিটাল আইন করার পরই তারা তাদের কণ্ঠরোধের কথা বললেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কণ্ঠটা রোধ কোথায়? এই বাংলাদেশে এত টেলিভিশন, একটা টেলিভিশন ছিল। কোনো সরকার সাহস পেয়েছে এত টেলিভিশন বেসরকারি খাতে তুলে দিতে? কোন সরকার সাহস পেয়েছে রেডিও বেসরকারি খাতে তুলে দিতে? কেউ তো দেয়নি, দিয়েছি আমরা। সারারাত টকশো হচ্ছে কেউ তো বাধা দিচ্ছে না। ব্যাপকহারে সংবাদপত্রের অনুমোদন দিয়েছি। এত পত্রিকার অনুমোদন পৃথিবীর কোন দেশে আছে?

এই বিল নিয়ে সাংবাদিকদের এতো উদ্বেগ কেন প্রশ্ন করে সংসদ নেতা বলেন, সাংবাদিকতা হবে গঠনমূলক। বিভ্রান্তি, সহিংসতা ছড়িয়ে দেবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি। গণতন্ত্র আছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি এর সুফলটা মানুষ ভোগ করুক, কুফলটা বর্জন করুক। জাতির পিতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশের সব আশাবাদকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছিল। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দেশের মানুষ আবার সুশাসন পেতে শুরু করলো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বে আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। সারা বিশ্বে জঙ্গি-সন্ত্রাস বড় সমস্যা। তারপরও আমরা অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে এ সমস্যা মোকাবিলা করেছি। মাদকের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিয়েছি। ফলে অনেক পরিবার ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে।

দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের উন্নয়নের উদাহরণ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দেশ উন্নত করতে যোগাযোগ ব্যবস্থা ও বিদ্যুৎ-জ্বালানিতে বিশেষ অবদান রাখতে হয়। মাত্র ৩ হাজার মেগাওয়াট থেকে আজকে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে এই খাতের বিপুল উন্নয়ন করেছি। সব শিল্প কারখানা যাতে চালু থাকতে পারে তার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সড়ক নৌ ও বিমান সব ক্ষেত্রেই উন্নয়ন হয়েছে। এসব বিষয়ে অনেক বিস্তারিত তথ্য আগে সংসদে বলেছি। মানুষকে সুন্দর একটি জীবন উপহার দেয়ার উদ্দেশেই আমরা সরকার পরিচালনা করি। বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগের একটি দেশ। জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় আমরা কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। দেশের মানুষের সুসাস্থ্য নিশ্চিত করতে খাদ্যের নিশ্চয়তার পাশাপাশি চিকিৎসাখাতে ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। ৬৪ বছর বয়স থেকে মানুষের আজ ৭১ বছর বয়স। উত্তরাঞ্চলে গেলে কঙ্কালের মতে মানুষ দেখা যেত এখন মানুষের গায়ে মাংস দেখা যায়।

তিনি বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনা ভোগ বিলাশের জন্য নয়। আমাদের দৃষ্টি গ্রামের মানুষ দিকে। এক সময় বিদেশ থেকে কাপড় এনে বিলানো হতো। এখন সেই দিন নেই। গত কোরবানি ঈদের আগে কতগুলো ফ্রিজ বিক্রি হয়েছে তার হিসেব নেই। রাইস কুকারে ভাত রান্না করেন, মোবাইল ফোন হাতে হাতে, ডিজিটাল বাংলাদেশে পৌঁছে গেছি আমরা।

মাত্র দশ দিনে ১৮টি বিল আমরা পাস করেছি। এত অল্প সময়ে এত বিল কমই পাস হয়েছে। এসময় প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদলের সদস্যদেরকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, দশম জাতীয় সংসদে অশালীন কথা নাই, আজে-বাজে মন্তব্য নেই। সুন্দর একটি পরিবেশ ছিল। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। মানষের এখন সংসদে আস্থা বিশ্বাস সৃষ্টি হয়েছে। এটা সম্ভব হয়েছ সরকার ও বিরোধী দলের পারস্পরিক সহযোগিতার কারণে। এই অধিবেশনে যে বিলগুলো পাস হয়েছে সেগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় প্রধানমন্ত্রী কয়েকটি বিলের ওপর আলোকপাত করেন।

তিনি বলেন, অত্যন্ত সফল একটি অধিবেশন ছিল এটি। এই অধিবেশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত