ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

ফেসবুকে ‘অপতথ্য’ ছড়ানোয় ৩ ছাত্রীকে হলছাড়া: ঢাবি উপাচার্য

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২০ এপ্রিল ২০১৮, ১৫:৩৬  
আপডেট :
 ২০ এপ্রিল ২০১৮, ১৭:১০

ফেসবুকে ‘অপতথ্য’ ছড়ানোয় ৩ ছাত্রীকে হলছাড়া: ঢাবি উপাচার্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, ফেসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে ‘সরকারবিরোধী বক্তব্য ও অপতথ্য ছড়ানোর কারণে’ কবি সুফিয়া কামাল হলের তিন ছাত্রীকে অভিভাবকদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। ‘দোষী’ তিন ছাত্রীকে অভিভাবকদের হাতে তুলে দিয়ে হল প্রশাসন ‘সঠিক’ কাজ করেছে বলেও দাবি করেছেন।

বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে ১ টার মধ্যে ওই হলের তিন ছাত্রীকে তাদের স্থানীয় অভিভাবকের কাছে তুলে দেয়া হয়। আরেক ছাত্রীর অভিভাবক এলেও গভীর রাত হয়ে যাওয়ায় শেষ পর্যন্ত ওই শিক্ষার্থীকে হলে রাখা হয়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, যারা সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন, তাদের ডেকে ডেকে ‘তদন্তের নামে হয়রানি’ করছে হল কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে হল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং ফোন কেড়ে নিয়ে ফেসবুকে কে কোন পোস্ট দিয়েছে তা পরীক্ষা করে দেখে বলে হলের ছাত্রীদের ভাষ্য। এরই এক পর্যায়ে মধ্যরাতে তিন ছাত্রীর অভিভাবকে ডেকে তাদের তুলে দেয়া হয়।

কোটা অধিকার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ হল থেকে শিক্ষার্থীদের বের করে দেওয়ার প্রতিবাদে শুক্রবার বিকাল ৪টায় সারা দেশে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি দিয়েছে।

শুক্রবার সাংবাদিকদের প্রশ্নে উপাচার্য আখতারুজ্জামান বলেন, তারা ফেইক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ফেসবুকে অপতথ্য দিচ্ছে… হল সংক্রান্ত, সরকারবিরোধী, আরো নানাসব তথ্য, সব সংরক্ষিত আছে। তখন তাদেরকে বলা হল যে, বাবা এগুলো যদি তোমরা কর তাহলে তো হল ঝুঁকির মধ্যে পড়বে, এটা সুফিয়া কামাল হল, হাজার হাজার মেয়ে এখানে আছে, গোটা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্নভাবে অপশক্তির উত্থান ঘটছে, বিভিন্ন অপতথ্য, অপব্যাখ্যা যাচ্ছে; সুতরাং এই মুহূর্তে তোমরা এগুলা করতে পারবে না তোমাদের অভিভাবকদেরকে ডাকতেছি।

ওই অভিযোগে তিনজনকে বৃহস্পতিবার রাতে তাদের বাবা ও ভাইয়ের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে জানিয়ে উপাচার্য বলেন, রাত বেশি হয়ে যাওয়ায় একজন ছাত্রীকে তার অভিভাবকের সঙ্গে পাঠিয়ে দেয়া হয়নি।

উপাচার্য বলেন, এরা যে কাজগুলো করে, এগুলো কিন্তু আমাদের অন্য মেয়েদের সম্মান হারাবে, ঝুঁকি বাড়াবে, নিরাপত্তাহীন হবে, বিশ্ববিদ্যালয় অস্থির হবে, রাষ্ট্রে অস্থিরতা তৈরি হবে। তিন ছাত্রীকে অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়াকে শৃঙ্খলা রক্ষার ‘একটি ব্যবস্থা’ হিসেবে বর্ণনা করেন উপাচার্য।

তিনি বলেন, অভিভাবকসুলভ আচরণে হল প্রশাসন যখন দেখবে কোনো কিছু ঝুঁকির মধ্যে পড়ে, তখন তো এটা তাদের রুটিন দায়িত্ব, এটা তো হলের দায়িত্ব। নিরাপত্তা এবং সম্মানের জন্য, মর্যাদার জন্য হল প্রশাসন অভিভাবকসুলভ আচরণ করবে, তাদেরকে (ছাত্রীদের) ডেকে এনে সংশোধনী দেবে- এটা হল একেবারে মৌলিক দায়িত্ব।

রাতে তিন ছাত্রীকে যেভাবে অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে সমালোচনা হলেও হল প্রশাসনের ভূমিকাকে সমর্থন করছেন উপাচার্য।

আখতারুজ্জামান জানান, কোনো সাধারণ শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হয়রানি করেনি। হাজার হাজার ছাত্র এই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিল। এর মধ্যে মাত্র ২৫/২৬ জনকে চিহ্নিত করেছে তদন্ত কমিটি। তিনি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত না হয়ে কোনো সংবাদ পরিবেশন করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ভুল সংবাদ বিভ্রান্তি তৈরি করে।

হল কর্তৃপক্ষ বলছে, কোটা সংস্কারের আন্দোলনের মধ্যে গত ১০ এপ্রিল রাতে ছাত্রলীগ নেত্রী ইফফাত জাহান এশাকে হেনস্তার ঘটনার তদন্তেই বৃহস্পতিবার হলের শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং কয়েকজনকে অভিভাবকদের সঙ্গে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

এসআইএস/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত