ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

সদ্য জাতীয়করণকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পদ আত্তীকরণ হবে একসঙ্গে

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৪ অক্টোবর ২০১৮, ২১:৩০  
আপডেট :
 ১৪ অক্টোবর ২০১৮, ২১:৩৩

সদ্য জাতীয়করণকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পদ আত্তীকরণ হবে একসঙ্গে

সদ্য জাতীয়করণকৃত ২৯৮টি কলেজের অন্তত ১৫ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি নিয়মিতকরণ বা আত্তীকরণ প্রক্রিয়া দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করার উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। দ্রুত সরকারি সুযোগ-সুবিধা দিতে পুরনো পদ্ধতি থেকে সরে এসে নতুন পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্ট কলেজের প্যাটার্ন অনুযায়ী পদ ‘একত্রে সৃজন’ করতে চায় মন্ত্রণালয়। রোবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের নেতৃত্বে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। পরবর্তীতে আরও সভা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এরপর জনপ্রশাসন ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। সভা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সভা শেষে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কলেজ) ড. মোল্লা জালাল উদ্দিন বলেন, জাতীয়করণ হওয়া কলেজগুলোতে এখন শিক্ষকের পদ সৃষ্টি করতে হবে। কিন্তু পুরনো নিয়মে এতগুলো কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীর চাকরি আত্তীকরণ করতে হলে দীর্ঘ সময় লেগে যাবে। এ কারণে আমরা নতুন একটি প্রস্তাব নিয়ে কাজ শুরু করেছি। কীভাবে দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের চাকরি নিয়মিতকরণ করা যায়- সে বিষয়টি নিয়ে রোববার প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। আরও কয়েকটি মিটিং কল করা হবে। এরপর চূড়ান্ত সিন্ধান্ত নেওয়া হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগে সরকারি করা কলেজের পদ সৃষ্টির প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা আলাদাভাবে জনপ্রশাসন, অর্থ বিভাগের ব্যয় ব্যবস্থাপনা, বাস্তবায়ন এবং প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায় পাঠানো হয়। চারটি দফতরে একটি কলেজের পদ সৃজনের প্রক্রিয়া শেষ করতে প্রায় সাত থেকে আট মাস সময় লেগে যায়। যে কারণে প্রস্তাবিত নতুন পদ্ধতিতে পদ সৃজনের উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশির কর্মকর্তাদের মতে, সম্প্রতি সরকারিকৃত ২৯৮ কলেজের পদ সৃজনের ক্ষেত্রে আগের প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হলে সবগুলো কলেজের পদসৃষ্টি করতে চার থেকে পাঁচ বছর সময় লেগে যাবে।

সভা সূত্রে জানা যায়, প্রস্তাবিত নতুন পদ্ধতিতে জাতীয়করণকৃত স্ব স্ব কলেজের প্যাটার্ন অনুযায়ী সব কলেজের পদ সৃষ্টির প্রস্তাব একত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। জনপ্রশাসন হতে পদ সৃষ্টির অনুমোদনের পর অর্থ বিভাগের ব্যয় ব্যবস্থাপনা, বাস্তবায়ন অনুবিভাগ এবং প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির অনুমোদনের পর প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় (শিক্ষা মন্ত্রণালয়) নীতিমালা অনুযায়ী তাদের যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে নিয়োগ প্রদান করবে।

এক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সৃষ্ট পদের সঙ্গে জাতীয়করকৃত কলেজে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের কোনো সংশ্লিষ্টতা থাকবে না। পদগুলো প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে সৃষ্টি হবে। এ প্রক্রিয়ায় পদ সৃজনের প্রস্তাব একবারই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ এবং প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায় পাঠানো হবে। ফলে কম সময়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি আত্তীকরণ প্রক্রিয়া শেষ করার যুক্তি তুলে ধরেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

সভায় অংশ নেওয়া মাউশি মহাপরিচালকের রুটিন দায়িত্বে থাকা পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) প্রফেসর মোহাম্মদ শামছুল হুদা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে দ্রুত সময়ের মধ্যে জাতীয়করণকৃত কলেজ শিক্ষক-কর্মচারীদের পদ সৃষ্টির মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে চাই। পাশাপাশি আমাদের শিক্ষকরাও যাতে খুব কম সময়ে হাসিমুখে তাদের পরিবারে যেতে পারে। এ কারণে সকল কলেজের পদ একত্রে সৃজনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, মাউশির লোকবলও কম। দিনরাত পরিশ্রম করে মাউশির কর্মকর্তারা জাতীয়করণ সংক্রান্ত কাজ করে যাচ্ছেন। নতুন পদ্ধতিতে কীভাবে কম সময়ে শিক্ষকদের চাকরি নিয়মিতকরণ করা যায়- এ বিষয় নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে। এ নিয়ে আরও আলোচনা হবে। এরপর বিষয়টির একটা সুরাহা হবে।

সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে নতুন সরকারি করা কলেজ শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি জহুরুল ইসলাম বলেন, আলাদা আলাদ পদ সৃজন করা হলে কয়েক বছর সময় লাগবে। পদ সৃজনে আমলা তান্ত্রিক জটিলতার কারণে কারণে অনেক শিক্ষক সরকারি সুবিধা না পেয়েই অবসরে চলে যান। এক সঙ্গে পদ সৃজন করা হলে সরকারি হওয়া কলেজের শিক্ষকরা দ্রুত সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাবেন। এটি সরকারের আরেকটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সূত্র জানায়, ২০১৬ সালে সরকারি কলেজ বিহীন উপজেলায় একটি করে কলেজ সরকারি করার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে আলোকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সরকারি কলেজবিহীন ৩০১টি উপজেলার একটি করে কলেজ সরকারি করার কার্যক্রম শুরু করে। গত ১২ আগস্ট থেকে কয়েক ধাপে ২৯৮টি কলেজ সরকারি করা হয়েছে। মামলার কারণে তিনটি কলেজ জাতীয়করণ প্রক্রিয়া আটকে আছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত