ঢাকা, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ মিনিট আগে
শিরোনাম

নেপালকে কাছে টানতে মোদির ভরসা রাম-সীতা!

নেপালকে কাছে টানতে মোদির ভরসা রাম-সীতা!

নেপালকে কাছ টানতে মরিয়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দেশটিতে সফরের প্রথম দিনে শুক্রবার তিনি ঘোষণা করেন, ভারতের ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতিতে সবার আগে নেপালের স্থান।

মোদির নেপাল কূটনীতিতে ধর্ম থাকবে না তা কি করে হয়! তাই তো এই প্রতিবেশী দেশটিকে প্রভাবিত করতে টেনে আনলেন রাময়নের দুই প্রধান চরিত্র রাম আর সীতাকেও। কথিত আছে নেপালের জনকপুরেই জন্ম সীতার। তরাই অঞ্চলের এই ছোট্ট শহরটির উন্নয়ণের জন্য ১০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি ওলিকে পাশে নিয়ে উত্তরপ্রদেশের রামের জন্মস্থান হিসেবে কথিত অযোধ্যা থেকে জনকপুর পর্যন্ত একটি আন্তঃরাষ্ট্রীয় বাস সার্ভিসও উদ্বোধন করেন মোদি।

এ সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, নেপালের কন্যা সীতাকে বাদ দিয়ে ভারতের রাম যেমন অসম্পূর্ণ, তেমনই নেপালের ইতিহাসকে বাদ দিয়ে ভারতের ইতিহাসও অসম্পূর্ণ।

নেপালে রাজতন্ত্রের পতনের পর থেকেই দেশটির সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের ব্যাপক টানাপড়েন শুরু হয়েছে। কয়েক মাস আগে প্রথম সাধারণ নির্বাচনে ভারতের বন্ধু হিসেবে পরিচিত নেপালি কংগ্রেসের পরাজয়ের পরে কে পি ওলির নেতৃত্বে যে বামেরা ক্ষমতায় এসেছেন, তাদের সঙ্গে চীনের যোগাযোগ বেশি। নেপালে প্রভাব বাড়াতে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিপুল বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বেইজিং। এরপরই নেপাল নিয়ে তৎপর হয়েছে দিল্লি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছুটে গেছেন নেপালে। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পরে এটা মোদির তৃতীয় নেপাল সফর।

শুক্রবার জনকপুরে নেপালি ও মৈথিলি ভাষায় বক্তৃতা করেন মোদি। বক্তব্য শুরু করেন ‘জয় সিয়ারাম’ দিয়ে!’ জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়, এবার তিনি নেপালে এসেছেন তীর্থযাত্রী হিসেবে। তবে দু’দেশের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করে তুলতে ব্যবসা বাণিজ্য, প্রযুক্তি ও যোগাযোগ বাড়ানোর ওপর জোর দেন তিনি। বলেন, সঙ্কটে বরাবর পাশাপাশি থেকেছে ভারত ও নেপাল। দু’দেশের মধ্যে সড়ক, রেল, আই-ওয়ে (ইন্টারনেট), বিদ্যুৎ সংযোগ, এমনকি জল ও আকাশ পথে যোগাযোগের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে তার সরকারের। বিহারের রক্সৌল থেকে কাঠমান্ডু পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণ বাস্তবায়িত হলে যাত্রী ও পণ্য পরিবহণের নতুন দিগন্ত খুলে যাবে। দু’দেশের মধ্যে হিন্দু, বৌদ্ধ ও জৈন তীর্থস্থানগুলিকে জুড়ে সার্কিট গড়ে তোলা গেলে হাজার হাজার যুবকের যেমন জীবিকার সংস্থান হতে পারে, আধ্যাত্মিক সুতোয় বাঁধা পড়তে পারে ভারত ও নেপালের মানুষ।

নেপালের প্রধানমন্ত্রী ওলি গত মাসে দিল্লি সফরের সময় এসে তাকে যে মৈথিলি কুর্তাটি উপহার দিয়েছিলেন, শুক্রবার সেটি পরেই অনুষ্ঠানে এসেছিলেন মোদি। তরাইয়ে মোদির সফর নিয়ে উন্মাদনাও ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বক্তব্য তরাইয়ের এই উত্তাপ পাহাড়ি নেপালের অধিকাংশ বাসিন্দাদের মধ্যে সঞ্চারিত হলে তবেই সফল হতে পারে মোদির সফর।

সূত্র: আনন্দবাজার

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত