ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

তবুও ভারতীয় হতে পারলো না হায়দার

  কলকাতা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০১৮, ১২:০৬  
আপডেট :
 ১৮ আগস্ট ২০১৮, ১৩:৩৪

তবুও ভারতীয় হতে পারলো না হায়দার

স্বাধীনতা দিবসের দিন বুক সমান পানিতে দাঁড়িয়ে পতাকা তুলেও ভারতের নাগরিক হতে পারলো না হায়দার আলি। কারণ সদ্য প্রকাশিত আসামের খসড়া নাগরিক তালিকায় এখনও নাম ওঠেনি তার।

গত বছরের ১৫ আগষ্ট, ভারতের স্বাধীনতা দিবসের দিন ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া অাসামের ধুবড়ি জেলার ফকিরগঞ্জের নস্করা প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে বুক সমান পানির মধ্যে দাঁড়িয়ে ভারতের জাতীয় পতাকা তুলেছিলো দুই পড়ুয়া হায়দার আলি খান (৯) ও জইরুল আলি খান (১০)।

সেই সময় অাসামের বিস্তির্ণ এলাকা তখন বন্যার কবলে। স্কুল ঘরও পানির নিচে। সেই অবস্থার মধ্যেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাজেম শিকদার সিদ্ধান্ত নেন স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় পতাকা তোলা হবে স্কুলে। সেই মতো স্কুলের দুই খুদে শিক্ষার্থী হায়দার আলি খান ও জইরুল আলি খানকে সঙ্গে নিয়ে পানি পেরিয়ে স্কুলে পৌঁছান তিনি। এরপর বুক সমান পানির মধ্যে দাঁড়িয়ে দুই খুদে শিক্ষার্থী ও স্কুলের সহকারী শিক্ষক নৃপেন রাভাকে নিয়ে স্কুল চত্বরে ভারতের তেরঙ্গা জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন তিনি। এরপর জাতীয় পতাকার দিকে তাকিয়ে স্যলুটও দেন তারা।

সেই সময় দূরে দাঁড়িয়ে থাকা স্কুলের অপর দুই শিক্ষক মিজানুর রহমান ও জয়দেব রায়ের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। যা দেশভক্তির ছবি হিসাবে ভাইরাল হয়ে পড়ে সারা ভারতে।

ওই ঘটনার এক বছর পর সেই খুদে পড়ুয়া হায়দার আলি খানের নামই উঠলো না অাসামে সদ্য প্রকাশিত নাগরিকপঞ্জীর খসড়া তালিকায়। যদিও হায়দারের সঙ্গী জইরুল আলি খান, স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাজেম শিকদার এবং সহকারী শিক্ষক নৃপেন রাভা প্রত্যেকেরই নাম উঠেছে নাগরিকপঞ্জীর চূড়ান্ত খসড়া তালিকায়।

খসড়া তালিকায় অবশ্য নাম উঠেছে ফকিরগঞ্জের বড়খালিয়া-নস্করা গ্রামের বাসিন্দা হায়দার আলির মা জয়গন খাতুন, হায়দারের ১২ বছর বয়েসী ভাই ও ৬ বছর বয়েসী বোনের নামও। এমনকি হায়দারের দাদা আলম খানের নামও রয়েছে ওই তালিকায়। তবে হায়দারের মৃত বাবা রুপনাল খানের নাম আর হায়দারের নামটাই ওঠেনি নাগরিকপঞ্জীর খসড়া তালিকায়।

এ বিষয়ে হায়দার জানায়, 'আমি জাতীয় নাগরিকপঞ্জি সম্পর্কে কিছুই জানি না'। তবে গত বছর ভারতের স্বাধীনতা দিবসের দিন বুক সমান পানির ভিতর দাঁড়িয়ে জাতীয় পতাকা তোলা প্রসঙ্গে সে জানায়, সেদিন সবকিছুই পানির তলায় ছিলো। আমি আর জাইরুল দুই জনে সাঁতার কেটে স্কুলের পতাকা উত্তোলনের জায়গায় চলে যাই। তারপর সেখানে বুক সমান পানিতে দাঁড়িয়ে জাতীয় পতাকা তোলার পর আমরা পতাকাকে স্যালুট করি।

এই হায়দারের নাম নাগরিকপঞ্জীর খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়ায় হতাশ স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাজেম শিকদার। তিনি জানান, হায়দারের মাসহ সমস্ত গ্রামবাসীই চায় হায়দারের নাম যেন নাগরিকপঞ্জিতে ওঠে।

ইতিমধ্যে হায়দারের মা স্থানীয় এন আর সি সেবাকেন্দ্রে গিয়ে ছেলের নাম নাগরিকপঞ্জীতে তোলার জন্য ফের নির্ধারীত ফর্ম পূরণ করে জমা দিয়েছেন। তবে এখনও পর্যন্ত নাগরিকপঙ্গীতে নাম ওঠেনি হায়দারের।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত