ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

২০২০ সালের শুরুতেই সর্বজনীন পেনশন চালু!

২০২০ সালের শুরুতেই সর্বজনীন পেনশন চালু!

নতুন বছরের শুরুতে ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিম’ চালু করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। বেসরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন সুবিধা নিশ্চিত করতে নিয়োগকারী সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেয়া হবে। এছাড়া সরকারি চাকরিজীবীদের চলমান পেনশন সুবিধা বাড়াতে কিছুটা সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করা হতে পারে।

তবে সরকারি-বেসরকারিখাতে যারা চাকরি করছেন তাদের এই সুবিধার আওতায় আনা হচ্ছে না। প্রাথমিকভাবে সমাজের পিছিয়ে পড়া ‘কর্মক্ষম নাগরিক’ যাদের বয়স ১৮-৫৫ বছরের মধ্যে তাদের পেনশন সুবিধা দেবে সরকার। অর্থাৎ সবাই সর্বজনীন পেনশন সুবিধায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

মঙ্গলবার একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে জানা যায়, জানা গেছে, দীর্ঘ চার বছরের চেষ্টায় অবশেষে সর্বজনীন পেনশন সুবিধা কার্যকর করতে এর রূপরেখা চূড়ান্ত করা সম্ভব হয়েছে। আগামী নতুন বছরের শুরুতে ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে এর কার্যক্রম শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে অর্থবিভাগ। এ লক্ষ্যে বছরের শেষদিন (মঙ্গলবার) সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে নীতি ও কৌশল প্রণয়নের বিষয়টি চূড়ান্ত করবে অর্থমন্ত্রণালয়ের সামষ্টিক অর্থনীতি অনুবিভাগ।

জানা গেছে, সর্বজনীন পেনশন সুবিধার আওতায় প্রাথমিক পর্যায়ে সমাজের পিছিয়ে পড়া কর্মক্ষম নাগরিক বিশেষ করে রিক্সাচালক, ভ্যানচালক, ভূমিহীন কৃষক, দিনমজুর, কাজের বুয়া, ছোট ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আনা হবে। এদের বয়স হবে ১৮-৫৫ বছরের মধ্যে। মাসিক কিস্তি হতে পারে ১০০-৫০০ টাকা। যে পরিমাণ কিস্তি নেয়া হবে সমপরিমাণ টাকা সরকারি তহবিল থেকে পেনশনারের হিসেবে জমা হবে। নির্দিষ্ট ব্যাংক কিংবা বীমা কোম্পানির মাধ্যমে এই অর্থ সংগ্রহ ও পেনশন প্রদান কিংবা হিসাব সংরক্ষণ করা হবে। নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটের মাধ্যমে একটি সুরক্ষিত সার্ভারে সর্বজনীন পেনশন কার্যক্রমটি পরিচালনা করা হবে। পুরো প্রক্রিয়াটি অনলাইনে হওয়ার কারণে একজন পেনশনধারী ঘরে বসে অলাইনে তার আইডি ও হিসাব সম্পর্কে জানতে পারবেন।

এছাড়া পেনশনের টাকা জমা দিতে পারবেন বিকাশ, নগদসহ বিভিন্ন কোম্পানির মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। সর্বজনীন পেনশন স্কিমে একজন হিসেবধারীর কাছ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ বছর পর্যন্ত নির্দিষ্ট পরিমাণ প্রিমিয়াম গ্রহণ করা হবে। মেয়াদ শেষে ন্যূনতম ৫ লাখ টাকার একটি তহবিল পাবেন পেনশনধারী। তবে এই টাকার ওপর তিনি প্রতিমাসে ৪-৫ হাজার টাকার মুনাফা পাবেন। যদি বিশেষ প্রয়োজনে টাকার প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে পেনশন তহবিল থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ গ্রহণ করা যাবে। তবে কোনোভাবেই পেনশন হিসাব বন্ধ করাকে উৎসাহিত করা হবে না। সর্বজনীন পেনশন স্কিম থেকে আহরিত টাকা বিনিয়োগ করবে সরকার। সেই বিনিয়োগের লভ্যাংশ থেকে পেনশনধারীদের লাভ দেয়া হবে।

জানা গেছে, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় পেনশন তহবিল হবে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে। অর্থাৎ পেনশন হিসেবধারী যে পরিমাণ টাকা জমা করবেন ঠিক ততটাই সরকারি তহবিল থেকে দেয়া হবে। অর্থাৎ প্রতিমাসে ১০০ টাকা করে বছরে কারো হিসেবে ১২শ’ টাকা জমা হলে সরকারি তহবিল থেকে আরও ১২শ’ টাকা দিয়ে মোট ২৪শ’ টাকার তহবিল গঠন করা হবে। তবে বেসরকারি ক্ষেত্রে চাকরিজীবী ও নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে এ তহবিলে অর্থ দেবে। এর পরিমাণ হতে পারে চাকরিজীবীর মূল বেতনের শতকরা ১০ ভাগ। নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষও সমপরিমাণ অর্থ দেবে। সরকারি ও বেসরকারি খাতে একই নিয়মে তহবিল গঠন করা হবে। বেসরকারিখাতে পেনশন নিশ্চিত করার বিষয়ে জোর দিবে সরকার। দেশের সব বেসরকারিখাতে পেনশন সুবিধা কার্যকর করতে নির্দেশনা দেয়া হবে।

আরো জানা গেছে, পেনশনের এ তহবিল ব্যবস্থাপনার জন্য একটি রেগুলেটরি অথরিটি থাকবে। এ অথরিটির মাধ্যমে পেনশন কার্যক্রম পরিচালিত হবে। লাভজনক খাতে তহবিলের অর্থ বিনিয়োগ করা হবে। বিনিয়োগ সুরক্ষাও দেয়া হবে। এ থেকে যে মুনাফা আসবে, তার অংশ মাসে মাসে পাবেন সুবিধাভোগীরা। পেনশনভোগীদের স্মার্টকার্ড দেয়া হবে। প্রস্তাবিত পেনশন স্কিমে ৫ থেকে ১০ শতাংশ হারে বার্ষিক ইনক্রিমেন্টের সুবিধা থাকবে।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত