ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

সুদের টাকার জন্য আওয়ামী লীগ নেতার লাশ দাফনে বাধা

  বরিশাল প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১১ জানুয়ারি ২০২০, ১৮:৪০

সুদের টাকার জন্য আওয়ামী লীগ নেতার লাশ দাফনে বাধা

বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের চেঙ্গুটিয়া গ্রামে সুদের টাকা আদায় করতে আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ্ব নূর মোহম্মদ তালুকদারের (৮২) লাশ দাফনে বাধা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অবশেষে নির্ধারিত সময়ের ১০ ঘণ্টা পর শনিবার বাদ আছর পুলিশ ও ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে জানাজা শেষে মরদেহের দাফন সম্পন্ন হয়। শুক্রবার ভোররাতে বরিশালে এক আত্মীয়র বাসায় মারা যান তিনি।

নূর মোহম্মদ রাজিহার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি। তিনি আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম তালুকদার ও রাজিহার ইউপি চেয়ারম্যান ইলিয়াস তালুকদারের চাচা।

জানা যায়, ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা সুদে নিয়ে ১০ লাখ টাকা দেয়ার পরও তিন সুদি মহাজন ৩৩ লাখ টাকা দাবি করে মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে মরহুম নূর মোহম্মদও স্ট্যাম্প উদ্ধারের মামলা করেন, যা বর্তমানেও চলমান।

সুদি মহাজন হচ্ছেন বরিশালের গৌরনদী উপজেলার নন্দনপট্টি গ্রামের জব্বার বেপারীর ছেলে আলী হোসেন বেপারী, ওই গ্রামের হান্নান ঘরামীর ছেলে শাহীন ঘরামী ও বাঙ্গিলা গ্রামের জব্বার বেপারীর ছেলে খোকন বেপারী।

নূর মোহম্মদ তালুকদার বড় ছেলে বাবুল তালুকদার বলেন, তার বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে সুদি ব্যবসায়ী আলী হোসেন, শাহীন ঘরামী ও খোকন বেপারী তাদের বাড়িতে এসে দাফনে বাধা দেয়। এরপর বাবার কাছে পাওনা টাকা পরিশোধ করে লাশ দাফন করার হুমকি-ধামকি দেন।

তিনি জানান, রাতে অন্য ভাই-বোনদের নিয়ে বিষয়টি সমাধান করতে চাইলে সুদি মহাজনরা টাকা না দিলে দাফন করতে দেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। সুদসহ টাকা পরিশোধ করতে না পারায় সকালে দাফন করতে পারেনি।

বাবুল আরো বলেন, সুদি ব্যবসায়ীদের আমার বোন দোলন সাত বছর আগে ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা স্ট্যাম্প দিয়ে সুদে টাকা নেন। কিছুদিন পরে আমার বোন বিদেশ চলে যায়। বোনের ধার করা টাকা আমার বাবা পরিশোধ করতে গিয়ে গত পাঁচ বছরে ১০ লাখ টাকা দেন। তারপরেও ওই তিন সুদি মহাজন মৌখিকভাবে দাফনের আগে আমার কাছে বাবার পাওনা হিসেবে ১৩ লাখ টাকা দাবি করে।

তিনি আরও জানান, ওই তিন সুদি মহাজন আগেই আমার বাবাকে আসামি করে ৩৩ লাখ টাকা দাবি করে পৃথক মামলা দায়ের করে। ওই মামলার একটিতে আমার বাবা নূর মোহম্মদ তালুকদার আদালতের রায় পান। পরবর্তীতে বাবা নূর মোহম্মদ সুদি মহাজনদের বিরুদ্ধে ষ্ট্যাম্প উদ্ধারের মামলা করেন, যা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

আগৈলঝাড়া থানার ওসি আফজাল হোসেন বলেন, সুদের টাকার কারণে দাফনে বাধা দেয়ায় মরহুম নুর মোহম্মদ তালুকদারের ছেলে লিটন তালুকদার মোবাইলে জানালে এসআই জামাল হোসেনকে ওই গ্রামে পাঠাই।

বিষয়টি অমানবিক দাবি করে ওসি আরও বলেন, টাকা পয়সার লেনদেন থাকতেই পারে, তা পরিশোধ বা আদায়েরও অনেক ব্যবস্থাও আছে। এজন্য জন্য লাশ দাফনে বাধা দেয়া একটি বর্বরোচিত ঘটনা। তবে পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বিষয়টি মিমাংসা করার পর মরদেহের দাফন সম্পন্ন হয়।

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য সুদি ব্যবসায়ী খোকন বেপারীর মোবাইলে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত