ঢাকা, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

চাঁদাবাজি মামলার বাদীর বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতারণা মামলা

  যশোর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০২০, ০১:০৬

চাঁদাবাজি মামলার বাদীর বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতারণা মামলা

যশোরে ছাগল ব্যবসায়ীকে আটকে রেখে মারপিট, চেক বইতে জোর করে স্বাক্ষর নিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে যশোরের পৌর কাউন্সিলর হাজি সুমনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে।

অপর আসামিরা- ষষ্টিতলা পাড়ার সুমন (৩৫), একই এলাকার ইমন (২৮) এবং শহরতলীর বাহাদুরপুর পশ্চিমপাড়ার তরিকুল ইসলাম (৪০)।

হাজি সুমন (৩৮) পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং শহরের পোস্ট অফিস পাড়ার আব্দুল খালেকের ছেলে।

মামলাটি করেছেন চুয়াডাঙ্গার দামুরহুদা উপজেলার গোপালপুর গ্রামের জিবার উদ্দিন জীবন (৩০)। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাত ৭/৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।

অপরদিকে জিবার উদ্দিন জীবনের বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় ৩০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে পাল্টা মামলা করেছেন হাজি সুমন গ্রুপের অপর সদস্য মারিফুল ইসলাম সুমন। তিনি ষষ্টিতলা পাড়ার শওকত আলীর ছেলে।

জিবার উদ্দিন জীবনের দায়ের করা এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, তিনি ছাগলের ব্যবসা করেন। গত ২৬ নভেম্বর সকালে উন্নতমানের ছাগল কেনার জন্য যশোরের ছাগল ব্যবসায়ী বাহাদুরপুর গ্রামের খামারি তরিকুল ইসলামের বাড়িতে যান। ওই দিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাহাদুরপুর বাজারের রাসেলের চায়ের দোকানের সামনে বসে ছিলেন। সে সময় আসামিরা ৫/৬টি মোটরসাইকেল নিয়ে সেখানে যায় এবং জোর করে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে মারিফুল ইসলাম সুমনের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখে এবং মারপিট করে। তার কাছে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। পরে তার কাছে থাকা ইসলামী ব্যাংকের একটি চেকে ৮৫ হাজার টাকা লিখে জোর করে স্বাক্ষর করে নেয়। তাকে আটকে রেখেই ব্যাংক থেকে ওই ৮৫ হাজার টাকা উঠিয়ে নেয়। তার একটি দামি মোবাইল ফোন সেট রেখে দেয়।

পরদিন ২৭ নভেম্বর সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে খুলনা থেকে রাজশাহীগামী কপোতাক্ষ ট্রেনে উঠিয়ে দেয়। একই সাথে হুমিক দেয় যে, এই নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে জীবনের শেষ করে দেয়া হবে। পুরো ঘটনার সাথে কাউন্সিলর হাজি সুমন ছিলেন।

এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতয়ালি থানার এসআই কামাল হোসেন জানিয়েছেন, ছাগলের ব্যবসা নিয়ে মূলত বাদির সাথে হাজি সুমনের পক্ষের লোকজনের বিরোধ। এই মামলার কোন আসামিকে আটক করা যায়নি। তবে মূলত বিরোধ কী তা তদন্ত করে জানা যাবে।

এদিকে মারিফুল ইসলাম সুমনের দায়েরকরা এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামি জীবন তার পূর্বপরিচিত। সে ভারত থেকে উন্নতমানের ছাগল বাংলাদেশে এনে বিক্রি করে থাকে। গত ৬ আগস্ট তার নিজের বাড়িতে বসে আসামির কাছ থেকে ৪৪টি বড় জাতের ছাগল কেনার জন্য ৩০ লাখ টাকা দেন। জীবন ওই টাকা বুঝে নিয়ে ৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ছাগলগুলো দেবে বলে অঙ্গীকার করে। কিন্তু ধার্য্য তারিখে জীবণ ছাগল বুঝে না দেয়ায় তার সন্দেহ হয়। তিনি যোগাযোগের চেষ্টা করেন এবং লোক মারফত খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তার টাকা দিয়ে জীবন ছাগল কিনে অন্য লোকের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। পরে তিনি জীবনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তাকে জানানো হয় যশোরে ফিরে তিনি টাকা পরিশোধ করবেন।

গত ২৭ নভেম্বর তিনি যশোরে আসলে টাকা চাইলে জীবন তালবাহানা করতে থাকে। পরে স্থানীয় লোকজনের মধ্যস্থতায় ১ লাখ টাকা দেয়ার কথা বলে। বাকি টাকা ৩ মাসের মধ্যে পরিশোধ করবে অঙ্গীকার করে ৮৫ হাজার টাকার একটি চেক দেয়। সর্বশেষ গত ১০ জানুয়ারি জীবনের সাথে দেখা হলে বাকি ২৯ লাখ ১৫ হাজার টাকা চাওয়া হয়। কিন্তু সে টাকা পরিশোধ করবে না বলে জানায়। এবং উল্টো হুমকি দেয়।

এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই পলাশ বিশ্বাস জানিয়েছেন, প্রতারণা মামলায় আসামি জীবনকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/আর

  • সর্বশেষ
  • পঠিত