ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

শালিসে দুই ভাইকে কোপালেন পুলিশের এএসআই!

  কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২০:৪১

শালিসে দুই ভাইকে কোপালেন পুলিশের এএসআই!

জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে পারিবারিক শালিসে প্রতিপক্ষ দুই ভাইকে কুপিয়ে জখম করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে পুলিশের সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) বখতিয়ার উদ্দিন ভুট্টোর বিরুদ্ধে।

রোববার সকালে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের বৈরাগীরখীল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

গুরুতর আহত দুই ভাই হলেন, ডুলাহাজারা ইউনিয়নের রং মহল এলাকার মরহুম ডা. আবু তাহেরের ছেলে হাফেজ আবু দারদা (৩৫) ও আবদুল্লাহ আল নোমান (৩০)। তারা বর্তমানে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এএসআই বখতিয়ার বৈরাগীরখীল গ্রামের মৃত ফয়েজ আহমদের ছেলে। তিনি বর্তমানে উখিয়ার ময়নারঘোনা ক্যাম্পে দায়িত্বরত রয়েছেন। রোববারও তিনি ক্যাম্পে ডিউটি করেছেন বলে জানিয়েছে তার পারিবারিক সূত্র।

এ ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তা ভুট্টোকে প্রধান আসামি করে মামলা করেছে আহতদের পরিবার। তবে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা তার স্ত্রী এবং মামলার আসামি রেহেনা পারভিন লিপিকে বাদী বানিয়ে আহতদের আসামি করে থানায় পাল্টা মামলা করেছেন। অভিযুক্ত এএসআই বখতিয়ার উদ্দিন ভুট্টো ও আহতরা সম্পর্কে মামাতো-ফুফাতো ভাই।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও এএসআই বখতিয়ারের মামা এবং আহতদের চাচা ছৈয়দুল হক মুরাদ বলেন, পারিবারিক বণ্টনের বিরোধীয় জমি নিয়ে ১৭ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত শালিস বসে। বৈঠকে দু’পক্ষ তর্কাতর্কিতে জড়ায়। তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে আকস্মিকভাবে পুলিশ কর্মকর্তা বখতিয়ার ও জসিম ধারালো কিরিচ হাতে দলবল নিয়ে হাফেজ আবু দারদা, নোমানদের ওপর হামলে পড়ে। সবার সামনেই বখতিয়ারের কিরিচের কোপে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আমার ভাতিজারা। আইনের লোক হয়ে বখতিয়ারের এমন কাজ সবাইকে হতবাক করেছে।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শাহীন আবদুর রহমান জানান, আবু দারদা ও নোমান নামে চিকিৎসাধীন দু’জনের অবস্থা গুরুতর ছিল, এখন সুস্থের পথে। তবে আবু দারদার মাথা, চোয়াল ও ডান হাতে কোপানোর জখম মারাত্মক। চিকিৎসায় সেরে উঠলেও ভবিষ্যতে তিনি স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে সক্ষম হবেন কিনা সন্দেহ আছে।

চকরিয়া থানার ওসি মো. হাবিবুর রহমান ঘটনা এবং মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, হামলার ঘটনায় এএসআই বখতিয়ার উদ্দিন ভুট্টোকে প্রধান আসামি করে হামলাকারী ১০ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন আহত আবদুল্লাহ আল আরমান। এএসআই বখতিয়ার তার স্ত্রী লিপিকে বাদী করে প্রতিপক্ষকে আসামি করে পাল্টা মামলা করেছে। উভয় মামলা তদন্ত চলছে।

এ ঘটনায় দুটি মামলা নেয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ওসি বলেন, দু’পক্ষ আত্মীয়। খোঁজ নিয়ে জেনেছি হামলার ঘটনা নোমানরাই শুরু করে। কিন্তু পুলিশ সদস্য বখতিয়ার মারাত্মকভাবে কুপিয়ে অপরাধ গুরুতর করেছেন। তার শাস্তি অবধারিত। আমি ওপর মহলকে বিষয়টি লিখিত জানিয়েছি। তার কর্মস্থলে সেই তথ্য পৌঁছলে হয়তো ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে এএসআই বখতিয়ার উদ্দিন ভুট্টো বলেন, আমাদের ওপর তারা হামলা করেছিল। আমরা নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু সেই বিষয়টি গোপন করে তারা উল্টো আমাদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. ইকবাল হোসাইন সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনাটি জেনেছি। বখতিয়ার রাঙ্গামাটি জেলায় কর্মরত। কিন্তু ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত হলে সে ডিউটিতে যুক্ত থাকার কথা নয়। মামলা নথিভুক্ত হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাও রুজু হবে। তাকে দুটাই মোকাবিলা করতে হবে। ঘটনা প্রমাণিত হলে সাসপেন্ড হবে, এতে সন্দেহ নেই।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত