ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

জামালপুরের ঘটনায়

ধর্ষককে জিজ্ঞাসাবাদে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন

  জামালপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ৩১ মার্চ ২০২০, ২১:১২

ধর্ষককে জিজ্ঞাসাবাদে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন

জামালপুরে পুলিশ পরিচয়ে করোনা তল্লাশির নামে ঘরে ঢুকে ১৪ বছর বয়সি তরুণীর গণধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত মিজানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছে আদালতে।

আদালত ৭ এপ্রিল রিমান্ড শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছে। অন্য আসামীরা এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান চলছে। ধর্ষিতা তরুণী জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার ডাক্তারি পরিক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। তবে এখনো ডাক্তারি পরিক্ষার রির্পোট প্রকাশ হয়নি।

পুলিশ পরিচয়ে করোনা তল্লাশির নামে ঘরে ঢুকে তরুণীকে গণধর্ষণ শিরোনামে বিভিন্ন পত্রপত্রিকা,টেলিভিশন চ্যানেল ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশ নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে কনফারেন্স রুমে জামালপুরের পুলিশ সুপার মো: দেলোয়ার হোসেন এক প্রেসব্রিফিং করে।

ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের এই দুর্যোগের সময় ধর্ষণের খবর পেয়ে ঘটনাটি পুলিশ অধিকতর গুরুত্ব দেয়। মিজান নামে এক ধর্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আদালতে সোর্পদ করে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। বিজ্ঞ আদালত রিমান্ডের শুনানির তারিখ ৭ এপ্রিল ধার্য করে ধর্ষক মিজানকে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারে আমরা তৎপর রয়েছি। দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবো বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত ঘটনা সবই ঠিক রয়েছে। তবে পুলিশি পরিচয়ে করোনা তল্লাশির নামে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর মেয়ের বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারি, তিনি সৎ বাবা । বাড়িতে আসর বসিয়ে গাঁজা সেবন করতেন তিনি। সেদিনও বাড়ির পাশে ওই ৫ যুবক নিয়ে মেয়েটির বাবা গাঁজা সেবন করতে ছিলেন। মাঝখানে মিজান ও পুষন নামে দুই যুবক আসর থেকে উঠে গিয়ে পানি খেতে যায় তাদের ঘরে। মেয়েটি পানি দিতে আসলে মিজান ও পুষন জোরপুর্বক বাড়ির পাশে বেগুনের খেতে নিয়ে ধর্ষণ করে।

মিজান ধর্ষণ করলে পুষন পাহাড়া দেয় এই ছিল ঘটনা। মেয়েটির বাবা নিজের দোষ আড়াল করতে পুলিশ পরিচয়ে করোনা তল্লাশির নামে ঘরে ঢুকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করার কথা সাংবাদিকদের বলেছে। আমরা ডাক্তারি রিপোর্ট, এলাকায় তদন্ত ও গ্রেপ্তারকৃত আসামী মিজানের রিমান্ড মঞ্জুর হলে প্রকৃত ঘটনা বের করতে পারবো। উর্ধতন কর্তিপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করার চেষ্টা করবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।

এদিকে ধর্ষণের ঘটনার পর জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীনঅবস্থায় ধর্ষিতা সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশি পরিচয়ে করোনা তল্লাশির নামে ঘরে ঢুকে ৪ যুবক আমাকে তুলে নেয়ার সময় আমার বাবা মা বাঁধা দেয়। আমার বাবার গলায় ছুঁড়ি ধরে মাকে মারধর করে আমাকে ক্ষেতের ফেলে দলবেঁধে জোরপুর্বক ধর্ষণ করে। ৪ জন ধর্ষণ করার পর আরেকজনকে ফোন দিয়ে ডেকে আনার পর সেও ধর্ষণ করে। এই ৫জনের মধ্যে মিজান ও পুষনকে চিনেছিলেন ধর্ষিতা। ধর্ষিতার বাবা মাও একই বক্তব্য দিয়েছে। মুখ খুলতে ও মামলা না করার জন্য প্রভাবশালীরা চাপ প্রয়োগ করছে বলে আতংকিত জানিয়েছিল তারা। তার বাবার শরিরেও আঘাতের চিহ্ন লক্ষ্য করা গেছে।

সরেজমিনে খোঁজ খবর, ভিকটিম ও ভিকটিমের বাবা-মার বক্তব্য ও পুলিশের বক্তব্যের উপর ভিত্তি করে রির্পোট তৈরী হয়েছিল। নিউজটি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। জামালপুরের নানা শ্রেণীপেশার মানুষ,মানবাধিকার কর্মী ও সচেতন মহল বিচারের দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠেছে। ধর্ষণের ঘটনায় সুষ্ঠ তদন্ত করে প্রকৃতদোষিদের দৃষ্টন্তমুলক শাস্তির আওতায় এনে ধর্ষিতার বিচার নি:শ্চিতের দাবি জানিয়েছেন তারা।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত