ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

একাকিত্বের সুযোগে শিক্ষিকাকে নিয়মিত ধর্ষণ

  গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৫ অক্টোবর ২০২০, ১৬:৪৬  
আপডেট :
 ২৫ অক্টোবর ২০২০, ১৬:৫৫

একাকিত্বের সুযোগে শিক্ষিকাকে নিয়মিত ধর্ষণ

বিয়ের কয়েক বছরের মাথায় স্বামী মারা যায় এক কলেজ প্রভাষকের। দুই সন্তান নিয়ে দিন ভালো যাচ্ছিল। কিন্তু বেশ একা ছিলেন তিনি। তার এই একাকিত্বের সুযোগ নেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা পরিচয় দেয়া কামাল। গত জুনে ফোনে মো. কামাল হোসেনের (৪৮) সঙ্গে পরিচয় হয় ওই শিক্ষিকার। কামাল কৌশলে শিক্ষিকার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলে। স্বামী নেই জেনে নিজেরও স্ত্রী মারা গেছে জানায় কামাল। অথচ তার স্ত্রী-সন্তান সবই রয়েছে। ফোনে কথা বলার একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে হৃদ্যতা বাড়ে।

বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শিক্ষিকার সঙ্গে কামাল আরো ঘনিষ্ঠ হয়। এভাবে কিছুদিন চলার একপর্যায়ে ভাগিনার চাকরি ও বিভিন্ন অজুহাতে তার কাছ থেকে কামাল ১০ লাখ ৬০ হাজার টাকা নেয়। প্রতারণার আঁচ করতে পেরে টাকা ফেরত এবং বিয়ের জন্য চাপ দেয় তমা। এরপরই যেন পাল্টে যায় কামাল।

তমার সঙ্গে অন্তরঙ্গতার ভিডিও ও ছবিগুলো ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয় কামাল। নিরুপায় হয়ে রাজধানীর রূপনগর থানায় মামলা করেন তমা। ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ ২৭ সেপ্টেম্বর রূপনগর থেকে কামালকে গ্রেপ্তার করে। এক দিনের রিমান্ড শেষে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ডিবির অনুসন্ধানে উঠে আসে কামালের সিরিয়াল ধর্ষণের তথ্য। কামালের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থানার যাত্রাবাড়ীতে।

ডিবির দেয়া তথ্যানুসারে, কামালের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কামাল সাত থেকে আট বছর ধরে কৌশলে বিভিন্ন নারীর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে আসছে। আত্মীয়-স্বজনরাও তার লালসা থেকে রক্ষা পায়নি। অপরিচিত নারীদের কাছে নিজের আসল পরিচয় গোপন করে নানা অপকর্ম করত কামাল। সম্পর্কের একপর্যায়ে চাকরি দেয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেয় সে।

এ বিষয়ে ডিবির ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের টিম ইনচার্জ এডিসি আশরাফউল্লাহ বলেন, কামাল তাদের টার্গেট করত, যারা একাকিত্বে ভোগে। তাদের পরিচিতদের থেকে ফোন নম্বর নিয়ে কথা বলত। নিজেকে কোরআনে হাফেজ পরিচয় দিয়ে কৌশলে সখ্য গড়ে সবার সঙ্গে অন্তরঙ্গ হতো। কামালের বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, কামাল তার অপকর্মের কথা আদালতে স্বীকার করেছে। কামালের প্রতারণার শিকার অন্য নারীদের থানায় অভিযোগ করতে বলা হচ্ছে।

এ বিষয়ে ওই শিক্ষিকা বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলাম। এরই মধ্যে জুনে কামাল আমার ফোনে কল করে বলে, আমার ভাশুরের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করেছে সে। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় ফোন করতো। কথা বলার একপর্যায়ে তার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। কামালের গ্রামের বাড়িতে এতিমখানা ও মাদরাসা আছে জানিয়ে সেখানে দান করতে বলতো। এভাবে আমার কাছ থেকে সে বিভিন্ন সময় টাকা নিতো।

তিনি আরো বলেন, সম্পর্ক চলাকালে কামাল আমার ভাগিনাকে চাকরি দেয়ার কথা বলে ৮ লাখ ২০ হাজার এবং আমার ছোট বোনের স্বামীর জামিনের জন্য ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা নেয়। প্রতারণা জানতে পেরে বিয়ের জন্য চাপ ও টাকা ফেরত চাইলে কামাল অশ্লীল ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখায়। তার এই প্রতারণাচক্রে আরো অনেকে আছে।

এসময় শিক্ষিকা ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার সঙ্গে খারাপ কাজ করেছে। আমি চাই কামালদের মতো প্রতারকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। যাতে আর কেউ এমন করার সাহস না পায়।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত